
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৬ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই অসুখের মূল কারণ হলো শরীরের কোষগুলোর ইনসুলিনের প্রতি সাড়া না দেওয়া, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। স্থূলতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের হারও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
তবে একটি বড় প্রশ্ন হলো — যাদের ইতিমধ্যে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রয়েছে, তারা কি এটি পুরোপুরি নিরাময় করতে পারে?
ড. জেরাল্ড শুলম্যান – ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিনের জর্জ আর. কাউগিল অধ্যাপক (এন্ডোক্রিনোলজি ও সেলুলার ও মলিকুলার ফিজিওলজি), এবং ইয়েল ডায়াবেটিস রিসার্চ সেন্টারের সহ-পরিচালক – এ প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্টভাবে বলেন, “হ্যাঁ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিরাময় সম্ভব।”
ড. শুলম্যান ব্যাখ্যা করেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মূল চালিকা শক্তি হলো ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা শরীরের ইনসুলিনে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার অক্ষমতা। “যদি আপনি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে পারেন, তাহলে ডায়াবেটিসও কমে যাবে।” তাঁর এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ১০% ওজন কমালেই অনেকাংশে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স দূর হয় — আর এটি বহু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
তবে ড. শুলম্যান সতর্ক করেন, অনেক মানুষ ওজন কমালেও পরে আবার তা ফিরে পান। এই জায়গায় নতুন ধরনের ওজন কমানো ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্যকারী ওষুধ — GLP-1 মেডিকেশন — দীর্ঘমেয়াদে ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হতে পারে।
ড. প্যাট্রিসিয়া পিটার, যিনি ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক (এন্ডোক্রিনোলজি), বলেন, “টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিরাময়ের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো শরীরকে ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলা। এর জন্য ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম এবং চিনিযুক্ত ও অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়া দরকার।”
তাঁদের মতে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস শুধু একটি রোগ নয়; এটি দীর্ঘমেয়াদে হার্ট, চোখ, কিডনি এবং স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি।
ড. শুলম্যান আরও বলেন, “যখন আমরা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে পারি, তখন আমরা শুধু ডায়াবেটিস নয়, হার্ট ডিজিজ, ফ্যাটি লিভার, স্থূলতাজনিত ক্যান্সার এবং এমনকি অ্যালঝেইমারসের মতো রোগ থেকেও নিজেকে রক্ষা করতে পারি।”
এইভাবে ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিন এন্ডোক্রিনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান অর্জন করে, রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দেয়, এবং ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের প্রস্তুত করে তোলে।
মারিয়া