
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্থূলতা বা ওবেসিটি এক ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। এর থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। চিকিৎসা ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস এর প্রধান কারণ। উদ্বেগের বিষয় হলো, অনেকেই অস্বাভাবিক ও অস্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, যা পরে নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করছে।
পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রথমেই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। বলা হয়ে থাকে, “নাস্তা হবে রাজার মতো, দুপুরের খাবার রাজপুত্রের মতো, আর রাতের খাবার ভিখারির মতো।” অর্থাৎ, সকালের খাবার হতে হবে পুষ্টিকর ও পরিপূর্ণ, দুপুরের খাবার পরিমিত এবং রাতের খাবার হবে হালকা।
ডায়েট বিশেষজ্ঞ ডা. পল রোয়েন বছরের পর বছর গবেষণা করে জানান, রাতে অতিরিক্ত খাওয়া হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং হঠাৎ মৃত্যুর জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি করে। তাই তিনি রাতে হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা আগে খাবার খেতে বলেন।
ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের নাস্তা হবে ভরপেট, দুপুরের খাবারে থাকা উচিত সুষম পুষ্টি, আর রাতের খাবার হবে হালকা ও সহজপাচ্য।
রাতে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন:
- দুইটি আটার রুটি অথবা এক কাপ ভাত
- এক বাটি সবজি
- এক টুকরো মাছ বা মাংস
- এক বাটি ডাল
- এক বাটি সালাদ (বিভিন্ন রঙের সবজি ও টকদই মিশিয়ে)
এছাড়া সারাদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে চিনি ও চিনি-যুক্ত খাবার, বেশি তেলে ভাজাপোড়া খাবার, মিষ্টিজাতীয় পানীয়, ট্রান্সফ্যাট, প্রাণিজ ফ্যাট, রিফাইন করা সাদা ময়দার খাবার, প্রক্রিয়াজাত ফুড এবং স্টার্চসমৃদ্ধ সবজি যেমন আলু, ভুট্টা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, ঘুম ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন নিয়ম করে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করে, ফলে ওজন কমানো আরও সহজ হয়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সময়মতো ঘুম ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাসই ওজন নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি এই বার্তাই দিচ্ছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা।
মিমিয়া