ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হবে জানতে পারবেন আগেই, যা বলছে গবেষণা!

প্রকাশিত: ১৯:২০, ১৮ মে ২০২৫

ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হবে জানতে পারবেন আগেই, যা বলছে গবেষণা!

ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী হৃদরোগের ঝুঁকি আগে থেকেই শনাক্ত করা সম্ভব—এমনই এক আশাব্যঞ্জক তথ্য জানাল স্কটল্যান্ডের ডান্ডি ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা। গবেষকরা দাবি করছেন, সাধারণ একটি হার্টের এমআরআই (MRI) স্ক্যানের মাধ্যমেই জানা যাবে, একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতে হৃদরোগের সম্ভাবনা রয়েছে কি না।

ডান্ডি ইউনিভার্সিটির ‘TASCFORCE’ (The Tayside Screening for Cardiac Events) প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত এই গবেষণায় অংশ নেন ৫০১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। তাঁদের মধ্যে ১৫২৮ জনের হার্টের এমআরআই স্ক্যান করা হয় এবং প্রায় ১০ বছর পর সেই ডেটা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখতে পান, হৃদয়ের বাঁ দিকের নিচের চেম্বার বা ‘লেফট ভেন্ট্রিকল’ যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বড় হয়ে থাকে, তবে ভবিষ্যতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি—even যদি তখন হৃদযন্ত্রে কোনো উপসর্গ না-ই থাকে।

গবেষণাটি আন্তর্জাতিক জার্নাল Radiology-তে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি সমর্থন করেছে চেস্ট, হার্ট অ্যান্ড স্ট্রোক স্কটল্যান্ড (CHSS)। প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অশ্বিনী মেহতা গবেষণাটিকে 'গেম চেঞ্জার' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, “এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে না, বরং যাঁরা একেবারেই উপসর্গহীন, তাঁদেরও আগেভাগে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে।”

পুরুষ ও নারীদের ঝুঁকির কারণ আলাদা

গবেষণার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এটি পুরুষ ও নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকির বিভিন্ন উৎস আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছে। যেমন, পুরুষদের ক্ষেত্রে ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেশার (নিম্ন রক্তচাপ) স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। অন্যদিকে, নারীদের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সামান্য মাত্রায় কোলেস্টেরল বেড়ে গেলেও সেটি ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে—যদি চিকিৎসার প্রয়োজন না হয় এমন স্তরে থাকে।

প্রতিরোধে নতুন দিগন্ত

গবেষক দলের প্রধান, ডান্ডি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জিল বেলচ বলেন, “এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা এমন মানুষদেরও চিহ্নিত করতে পেরেছি, যাঁদের বর্তমানে তেমন ঝুঁকি নেই কিন্তু আগামী বছরগুলোয় তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আগেভাগেই চিকিৎসা শুরু করে সেই সম্ভাব্য ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

চিকিৎসকদের মতে, এই নতুন প্রযুক্তি প্রচলিত অ্যাঞ্জিওগ্রাফি বা অন্যান্য ব্যয়বহুল ও জটিল পরীক্ষা ছাড়াই বহু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। যদি এটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে লক্ষাধিক হৃদরোগের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

রিফাত

×