ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

দেবীদ্বারে পর্যটকদের নজর কাড়ছে ব্যতিক্রমী সাত গম্বুজ মসজিদ

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২০:৪০, ৩ জুলাই ২০২৫

দেবীদ্বারে পর্যটকদের নজর কাড়ছে ব্যতিক্রমী সাত গম্বুজ মসজিদ

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার গুনাইঘর গ্রামে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন সাত গম্বুজ মসজিদ এখন শুধু উপাসনালয় নয়, পরিণত হয়েছে পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রে। নির্মাণশৈলী, কারুকাজ ও ক্যালিগ্রাফির ব্যতিক্রমী ব্যবহার এই মসজিদটিকে দেশের অন্যতম নান্দনিক স্থাপনায় পরিণত করেছে।

চারটি সুউচ্চ মিনার আর সাতটি গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০২ সালে এবং শেষ হয় ২০০৫ সালে। এটি নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দেন স্থানীয় সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। মসজিদটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন।

দুই বছর ছয় মাস ধরে ২৮ জন দক্ষ মিস্ত্রি ও ৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন মসজিদ নির্মাণে। ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের এই মসজিদে প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৮০ ফুট। নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চিনামাটি, স্টাইলস, বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা এবং রঙিন গ্লাসে তৈরি অসাধারণ কারুকাজ মসজিদটিকে করেছে অনন্য।

ভিতরে ও বাইরে মিলিয়ে শত শত মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের দেয়ালে ফুটে উঠেছে পবিত্র কুরআনের সূরা আর-রাহমান, আয়াতুল কুরসি ও বিভিন্ন দোয়া। বাংলায় ৮টি ও আরবিতে মুসলিম ধর্মের চার কালেমা সম্বলিত ক্যালিওগ্রাফি ব্যবহৃত হয়েছে। মসজিদের কারুকাজে প্রভাব রয়েছে মোগল, তুর্কি ও পারস্য ধাঁচের।

নির্মাণ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৫০ মণ চিনামাটির টুকরো এবং ২৫০টি কাচ। এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন পর্যটক ও ইতিহাসপ্রেমীরা।

পাশের উপজেলা মুরাদনগরের নারী সাংবাদিক ফাহিমা বেগম প্রিয়া বলেন, ‘মসজিদটির নির্মাণশৈলীতে ভিন্নতা আছে। ব্যতিক্রমধর্মী ক্যালিওগ্রাফি একে আরও আকর্ষণীয় করেছে।’
আরেক দর্শনার্থী ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার বলেন, ‘এটি শুধু ধর্মীয় স্থাপনা নয়, নির্মাণ কৌশল ও ক্যালিওগ্রাফির কারণে এটি স্থাপত্যকলার একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন।’

সাত গম্বুজ মসজিদ এখন দেবীদ্বারের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র, যা দেখতে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীরা।

Jahan

×