
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন (সিডব্লিউজিসি) চট্টগ্রাম নগরীতে একটি রণ সমাধিক্ষেত্র তৈরি করে যা চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি নামে পরিচিত। নগরীর দামপাড়ার ১৯ নং বাদশা মিয়া সড়কে ১৯৩৯-১৯৪৫ সালে এটি তৈরি করা হয়। কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন (সিডব্লিউজিসি) কর্তৃক পরিচালিত এ রণ সমাধিক্ষেত্র চট্টগ্রামের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবেও সুপরিচিত।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনী দ্বারা নির্মিত চট্টগ্রাম রণ সমাধিক্ষেত্রে প্রথম দিকে ৪০০ টি কবর ছিল। যুদ্ধের পর বিভিন্ন স্থান থেকে লাশ স্থানান্তর করে সমাহিত করায় এখানে ৭৫৫ টি কবর রয়েছে। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সকল ধর্মের ধর্মগুরুদের সমন্বয়ে এখানে একটি বার্ষিক প্রার্থণাসভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশ বিদেশের প্রচুর দর্শনার্থী যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানাতে এ রণ সমাধিক্ষেত্রে আসেন।
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রির প্রবেশমুখেই একটি তোরণ ঘরের দেয়ালে এই সমাধিক্ষেত্রের ইতিহাস ইংরেজি ও বাংলায় লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রধান ফটক পেরিয়ে পিচঢালা পথ ধরে হাঁটতেই প্রথমে চোখে পড়বে ফুলের বাগান চারপাশ গোছানো পরিচ্ছন্ন নীরব পরিবেশ। এরপর সমাধিক্ষেত্রের ফটক। প্রতিটি সমাধির পাশেই আছে ফুলের গাছ। কিছু ফুল ঝরে পড়েছে সমাধিতে। নীরব সবুজ ঘাসের ফাঁকে সারি সারি এপিটাফ।
সৈন্যদের ধর্ম অনুযায়ী তাদের কবর ফলকে নাম, মৃত্যু তারিখ, পদবির পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতীক লক্ষ করা যায়। পাশাপাশি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সমাধি। এখানে সবার পরিচয় এক তারা সবাই যুদ্ধের সৈনিক। সমাধি স্থলেই একটি ছোট ঘরে রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের যুদ্ধের নানা তথ্য। এছাড়াও লিপিবদ্ধ রয়েছে কোন দেশের কতজন শহীদ আর তাদের তালিকা।
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থীরা এখানে ভীড় জমান। বাংলাদেশীদের পাশাপাশি এখানে বিদেশীদের আনাগোনা চোঁখে পড়ার মত। রণ সমাধিক্ষেত্রের ভিতরে প্রবেশ করলেই যেন মনে পড়ে ইতিহাসের কালো অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা।
নোভা