ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য ভারতের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ১০ এপ্রিল ২০২৩

সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য ভারতের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাঘ এবং চিতাবাঘের আবাসস্থল সংযুক্ত থাকায় আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা বাঘ ও চিতাবাঘ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

রবিবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ভারতের কর্ণাটকের মহীশুর ইউনিভার্সিটিতে প্রকল্প টাইগারের ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজিত বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক উদ্বোধনের পর অধিবেশনে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে সাতটি বড় বিড়াল প্রজাতি এবং বাংলাদেশে দুটি সংকটাপন্ন বড় বিড়াল প্রজাতির সংরক্ষণের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা এই প্রজাতিগুলোর আশ্রয়কারী দেশগুলোর সদস্যপদ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) গঠনে নীতিগতভাবে সমর্থন করি।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণে শূন্য শিকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বন্য বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। এটা আশার বিষয় যে, বাঘের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। অন্যান্য বন্য প্রজাতিসহ আমাদের জাতীয় প্রাণী সংরক্ষণে সরকার বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়েছে। জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষা ও উন্নতির জন্য সংবিধানে একটি নতুন ধারা; বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ বাঘ শিকারের জন্য দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এত মিলিয়ন টাকা জরিমানার বিধান সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০২২ থেকে ২০৩৪) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে বাঘ জরিপ, জেনেটিক অধ্যয়ন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ড্রোন দ্বারা স্মার্ট টহল ও পর্যবেক্ষণ, সুন্দরবন ও বেঙ্গল টাইগারের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বন বিভাগের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি। 

মন্ত্রী বলেন, সহযোগিতা জোরদারকরণের মাধ্যমে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের জন্য ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারত একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করেছে। বাঘ-মানব সংঘাত কমাতে আমাদের সরকার গ্রাম টাইগার রেসপন্স টিম, কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ গঠন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নিয়োজিত করেছে। বন্যপ্রাণীর দ্বারা ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১-এ বাঘের দ্বারা নিহত ব্যক্তির জন্য তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা রোধে বন বিভাগের অধীনে বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে শেখ কামাল বন্যপ্রাণী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যা উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে বেঙ্গল টাইগারসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সরকারী উদ্যোগ সফল করা সহজ হবে।

উল্লেখ্য, এর পূর্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের সাতটি বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, তুষার চিতা, পুমা, জাগুয়ার এবং চিতার সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের ওপর লক্ষ্য করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে এ সকল প্রজাতিকে আশ্রয় দেয়া দেশসমূহের পরিবেশ ও বনমন্ত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন।
 

এমএইচ

×