.
শিশু-কিশোরদের নিয়ে চমৎকার এক আয়োজন। সাধারণত গানে পরিবেশিত হয় নাচ। তবে সোনামণিরা গানের সুরের পরিবর্তে ছড়ার ছন্দে মেলে ধরল অনবদ্য নাচের উপস্থাপনা। নৃত্যদল নৃত্যাঞ্চল আয়োজিত নৃত্যালেখ্যটির শিরোনামটি ছিল ছড়ায়-ছন্দে নৃত্যমালা। ছড়ার সমান্তরালে নাচের সম্মিলনে সজ্জিত পরিবেশনাটি মুগ্ধতা ছড়িয়েছে দর্শকের নয়নে।
নৃত্যালেখ্যটি পরিচালনা করেছেন দেশের নন্দিত নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক শামীম আরা নীপা। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশের আরেক খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক শিবলী মোহাম্মদ। শিশু-কিশোরদের বিশেষ নৃত্যালেখ্যটিতে অংশগ্রহণ করেছে নৃত্যাঞ্চলের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এই অনুষ্ঠানটির মূলমন্ত্রই ছিল শুদ্ধ নৃত্য ও রুচিশীল দর্শক তৈরির প্রচেষ্টা। আর সেই প্রয়াসে শিশু-কিশোরদের উপযোগী ছড়াগান এবং নান্দনিক নৃত্যের সমাহার। ‘ফুলে ফুলে’, ‘কোলা ব্যাঙ’, ‘পুতুল’, ‘টিয়েয় পাখির বিয়ে’, ‘ও ফ্লাওয়ার’, ‘ময়ূর’, ‘হাট্টিমাটিম’, ‘কাজলা দিদি’, ‘মামার বাড়ি’, ‘সঠিক শিক্ষা’, ‘ভোর হলো’, ‘ভোম্বল দাস’, ‘সব্দার ডাক্তার’, ‘পিংক পার্ল’ ও ‘আহা কি আনন্দ’ শীর্ষক ছড়ার সঙ্গে উপস্থাপিত নাচের পরিবেশনায় সজ্জিত ছিল নৃত্যালেখ্যটি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ।
আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’ ॥ বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমির আয়োজনে রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায় এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার অনুষ্ঠিত হলো ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’ শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যা। সৈয়দ শামসুল হকের ‘পরাণের গহীন ভিতর’ এবং রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ‘মানুষের মানচিত্র’ কাব্যগ্রন্থের নির্বাচিত কবিতা নিয়ে সাজানো হয় প্রযোজনাটি। প্রযোজনাটির নির্দেশনা ও পরিচালনায় ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এবং আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা।
ধর্ম, বর্ণ, জাতিগোষ্ঠী নির্বিশেষে মানুষের ভেতর যে আরেকটি মানুষ বসবাস করে, কথা বলে, স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন ভাঙার বেদনায় মুষড়ে পড়ে, সেই কথকতা উঠে এসেছে এই প্রযোজনায়। মানুষের হাসি-কান্না, প্রেম-বিরহ, হিংসা, সংগ্রাম সব মানবিক আবেগ ফুটে উঠেছে প্রযোজনার কবিতাগুলোতে। দু’জন কবিরই কাব্যগ্রন্থ দুটো গ্রামীণ জনপদের মানুষকে ভেবে রচনা করাÑ প্রযোজনাটিতে সেই আবহটাই ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু যে অব্যক্ত কথাগুলো কবিতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ হয়েছে তা শুধু কোন সমাজ বা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, মানব জাতির সৃষ্টি থেকে এ কথাগুলো প্রত্যেক মানুষের বুকেই বাজে।
আয়োজনটিতে ১৭ আবৃত্তিশিল্পী মোট ২৮টি কবিতা উপস্থাপন করেছেন। গ্রামীণ আবহের মঞ্চসজ্জার সঙ্গে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতির আবহসঙ্গীতে অনুষ্ঠানস্থল হয়ে উঠেছিল একটুকরো বাংলাদেশ। হলভর্তি দর্শকের মুহুর্মুহু করতালিতে প্রকাশ পায় আয়োজনের স্বার্থকতা।
ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোর সহযোগী হলো দৃক ॥ বিশ্বে আলোকচিত্র সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোর সহযোগী হলো দৃক। রবিবার পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম। তিনি জানান, এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশকে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোর আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবে নির্বাচন আমাদের এগিয়ে চলার একটি স্বীকৃতি। কেননা, দৃক পিকচার লাইব্রেরি ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ফাউন্ডেশনের এশিয়া মহাদেশের আঞ্চলিক সহযোগী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ফাউন্ডেশন এবং দৃক এই অঞ্চলে প্রতিযোগিতার প্রসার এবং বিচারকার্যে যৌথভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি আঞ্চলিক শিক্ষামূলক কার্যক্রম ও অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। এছাড়াও দৃক ঢাকা প্রদর্শনীর আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং এশিয়াতে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ফাউন্ডেশনকে আঞ্চলিক প্রদর্শনী আয়োজনে ও প্রচারণামূলক কর্মকা-ে সহযোগিতা দেবে। পাশাপাশি এই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দৃকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতিযোগিতার জুরি বোর্ডের সাবেক সভাপতি শহিদুল আলম, দৃকের কিউরেটর এবং জেনারেল ম্যানেজার এএসএম রেজাউর রহমান, বাংলাদেশস্থ রয়্যাল নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি, পলিটিক্যাল এ্যাফেয়ারস ও হিউম্যান রাইটস কর্নেলিস স্টাউটেন, ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ২০২২ প্রতিযোগিতার এশিয়া অঞ্চলের জুরি বোর্ডের সভাপতি তানজিম ওয়াহাব এবং পাঠশালার আলোকচিত্র বিভাগের প্রধান খন্দকার তানভীর মুরাদ। শহিদুল আলম বলেন, দৃক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল আমাদের মানুষ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বাধাধরা উপস্থাপনকে মোকাবেলা করার লক্ষ্যে। এশিয়াতে প্রতিযোগিতার আঞ্চলিক উপকেন্দ্রের স্থান নির্ধারণ সেই লক্ষ্যের দিকে একটি বৃহৎ পদক্ষেপ।
ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী পরিচালক জৌমানা এল জেইন খৌরি বলেন, এশিয়া অঞ্চলে আলোকচিত্রের নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান দৃকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ। এই অংশীদারিত্ব তাদের কাছ থেকে শেখা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময় এবং এই অঞ্চলের আলোকচিত্রীদের সঙ্গে সত্যিকার অর্থেই সংযোগ স্থাপনের একটি সুযোগ। আমাদের যৌথ কর্মকা-ের মাধ্যমে এই অঞ্চলের গল্প ও মানুষের কথাকে আমরা আরও স্পষ্টভাবে দেখতে ও শুনতে পারব।