ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

হুমায়ূনের জন্মদিনে নিবেদন ‘আমি এবং আমরা’

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ১৩ নভেম্বর ২০২২

হুমায়ূনের জন্মদিনে নিবেদন ‘আমি এবং আমরা’

শিল্পকলায় মঞ্চস্থ ‘আমি এবং আমরা’ নাটকের দৃশ্য

রবিবার ছিল জননন্দিত কথাশিল্পী ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। লেখকের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদ্্যাপনের অংশ হিসেবে এদিন ঢাকার মঞ্চে যুক্ত হলো একটি নাটক। লেখকের আমি এবং আমরা উপন্যাস অবলম্বনে একই নামের নাটকটি মঞ্চে এনেছে নাট্যদল বহুবচন। হেমন্ত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। মানবিক বোধের প্রতিচ্ছবিময় প্রযোজনাটির নাট্যরূপ দিয়েছেন মনু মাসুদ। নির্দেশনা দিয়েছেন আরহাম আলো।

একইসঙ্গে সামাজিক বাস্তবতার করুণ প্রতিচ্ছবি ও মানবিকতার গল্প উঠে এসেছে আমি এবং আমরা নাটকে। আর সেই গল্পে যুক্ত হয়েছে রহস্যময় চরিত্র মিসির আলী। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক আরহাম আলো বলেন, একটি পরিবারে জন্ম নেয়া তৃতীয় লিঙ্গের এক সন্তানকে নিয়ে সৃষ্ট সমাজ বাস্তবতার করুণ চিত্র উন্মোচিত হয়েছে এ নাটকে। পুরুষ কিংবা নারী না হওয়ার কারণে সমাজ ও পরিবার কর্তৃক নিগৃহীত হওয়ার চিত্র উঠে এসেছে।

এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়ধারী সেই মানুষটি হত্যা করারও চেষ্টা করা হয়। একাকী মানুষটির কাম্য হয়ে ওঠে কেবলই মৃত্যু। এমন বৈরী পরিস্থিতিতে মানুষটির পাশে এসে দাঁড়ায় রহস্যময় যৌক্তিক মানব মিসির আলী। যুক্তি আর ব্যাখ্যায় তার ভেতরে ছড়িয়ে দেয় বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। এভাবেই সমাজের করুণ অধ্যায়ের বিপরীতে মানবিক মূল্যবোধের কথা উচ্চারিত হয়েছে এই নাটকে।
নাটকের ঘটনাপ্রবাহে একটি পরিবারে তন্ময় নামের তৃতীয় লিঙ্গের এক সন্তান। ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠার পর পরিবার বুঝতে পারে সে নারীও নয়, পুরুষও নয়। তার পরিচয় হচ্ছে হিজড়া। এরপর শিশুটিকে ঘিরে সৃষ্টি হয় পারিবারিক জটিলতা। তন্ময়কে বঁটি দিয়ে কেটে হত্যা করতে চায় স্বয়ং তার মা। অসহায় বাবা বাঁচিয়ে দেয় বাচ্চাটিকে। আর মা ওই সংসার ছেড়ে চলে যায়।

একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে তন্ময়ের স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে তাকে ঘরে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তন্ময়। এমন বাস্তবতায় তার তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়টি জানা সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথমে হত্যা করে তার গৃহশিক্ষককে। এরপর খুন করে তার বাবাকে। দুটি খুনের পর সে অনুতপ্ত বোধ করে।

শরণাপন্ন হয় মিসির আলীর। নানা যুক্তি ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তন্ময়কে স্বাভাবিক জীবনের পথ দেখায় মিসির আলী। রূঢ় বাস্তবতার ভেতরেই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায় মিসির আলী। এভাবেই পরিণতির পথে এগিয়ে যায় কাহিনী।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌফিকুর রহমান, অপূর্ব, সেফা, মেহেদী হাসান, নওরিন, রাত্রি, হ্যাপি সিকদার, হেলাল, সারোয়ার, শাম্মী, হ্যাপি, সজল ও মনু মাসুদ। আলোক পরিকল্পনা করেছেন সুজন শামীম।

×