
শ্যামল কুমার দত্ত সিনিয়র শিক্ষক (অব.) গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা
পঞ্চম শ্রেণির লেখাপড়া বিষয় : বিজ্ঞান জীবনের জন্য পানি

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নেই।
(ক) পানি দূষণ প্রতিরোধে একটি করণীয় লেখ।
উত্তর ঃ কৃষিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে পানি দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
(খ) পানি বিশুদ্ধকরণ কী?
উত্তর ঃ মানুষের ব্যবহারের জন্য পানিকে গ্রহণযোগ্য এবং নিরাপদ করার ব্যবস্থাই হলো পানি বিশুদ্ধকরণ।
(গ) বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের সময় কীভাবে পানি বিশুদ্ধ করবে?
উত্তরঃ বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের সময় ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করতে হবে।
(ঘ) পুকুরের পানি থেকে কীভাবে নিরাপদ পানি পাওয়া যায়?
উত্তরঃ পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পুকুরের পানি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়া যাবে।
(ঙ) পানিচক্রে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কিসে পরিণত হয়?
উত্তরঃ পানিচক্রে জলীয় বাষ্প ঘণীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়।
(চ) উদ্ভিদ কীভাবে পানি গ্রহণ করে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ মূলের সাহায্যে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় মাটি থেকে পানি গ্রহণ করে।
(ছ) পানিকে জীবাণুমুক্ত করে নিরাপদ করার সবচেয়ে ভালো উপায় কী?
উত্তর ঃ পানিকে জীবাণুমুক্ত করে নিরাপদ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো পানিকে ফুটানো।
(জ) বরফকে তাপ দিলে পানি হয়, পানিকে তাপ দিলে কী হয়?
উত্তরঃ বরফকে তাপ দিলে পানি হয়, পানিকে তাপ দিলে বাষ্প হয়।
(ঝ) মানবদেহের কত ভাগ পানি থাকে?
উত্তর ঃ মানবদেহের ৬০-৭০ ভাগ পানি থাকে।
(ঞ) পানিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য কত মিনিট ধরে ফুটাতে হবে?
উত্তর : পানিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটাতে হবে।
(ট) কোন প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্প মেঘে পরিণত হয়?
উত্তরঃ ঘণীভবন প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্প মেঘে পরিণত হয়।
(ঠ) খাদ্য পরিপাকে পানি কি হিসেবে কাজ করে?
উত্তরঃ খাদ্য পরিপাকে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
(ড) নিরাপদ পানির প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তরঃ সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার করা প্রয়োজন।
(ঢ) পানির ২টি উৎসের নাম লেখ।
উত্তরঃ পানির ২টি উৎসের নাম হলো -(i) বৃষ্টি (ii) সমুদ্র
(ণ) পরিবেশে পানি দুষণের ২টি প্রভাব লেখ।
উত্তরঃ পরিবেশে পানি দুষণের ২টি প্রভাব হলো-
যেমনঃ কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি রোগ হয়।
(৩) আর্সেনিক কী?
উত্তরঃ আর্সেনিক হলো বিষাক্ত পদার্থ, যা মাটির নিচে আর্সেনিকের খনিজ হিসেবে থাকে।
(থ) আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন পান করলে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে?
উত্তরঃ আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন পান করলে হাত-পায়ে এক ধরনের ক্ষত বা যা তৈরি হয়, যা আর্সেনিকোসিস নামে পরিচিত।
(দ) কীভাবে পানি দুষিত হয় তার ২টি কারণ লেখ।
উত্তরঃ পানি দূষণের ২টি কারণ হলো-
(i) কলকারখানার ক্ষতিকর বর্জ্য পানিতে ফেলা।
(ii) পয়োনিষ্কাশন, কাপড় ধোয়া, গোসল ইত্যাদির মাধ্যমে পািন দূষিত হয়।
(ধ) পানি শোধনের ২টি উপায় লেখ।
উত্তরঃ পানি শোধনের ২টি উপায় হলো-(i) ফুটানো ও (ii) থিতানো।
(ন) উদ্ভিদের জীবনে পানির গুরুত্ব কী?
উত্তর ঃ উদ্ভিদের জীবনে পানির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ উদ্ভিদেরা বেঁচে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন। উদ্ভিদের দেহের প্রায় ৯০ ভাগ পানি। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরিতেও পানি ব্যবহার করে।
(ণ) প্রাণীদেহে পানির ৪টি প্রয়োজনীয়তা লেখ।
উত্তরঃ প্রাণীদেহে পানির ৪টি প্রয়োজনীয়তা নিচে দেয়া হলো-
(i) দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি উপাদান পরিবহণে সাহায্য করে
(ii) দেহে পুষ্টি উপাদান শোষণে সাহায্য করে।
(iii) খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
(iv) দেহের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
(v) বাষ্পীভবন কী? কীভাবে একটি বরফখ-কে পানিতে পরিণত করা যায়?
উত্তরঃ তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে বাষ্পীভবন। একটি বরফখন্ডকে তাপ দিয়ে পানিতে পরিণত করা যায়।
(ব) গ্লাসে বরফ রাখলে গ্লাসের বাইরের পৃষ্ঠে বিন্দু বিন্দু পানি জমে কেন?
উত্তর : গ্লাসে বরফ রাখলে গ্লাসের বাইরের পৃষ্ঠে বিন্দু বিন্দু পানি জমে, কারণ বায়ু যখন ঠান্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়।
(ভ) দুষিত পানি কাকে বলে? পানি পুরোপুরি নিরাপদ করতে কোন উপায় সবচেয়ে গ্রহণীয়? কেন?
উত্তরঃ প্রাকৃতিক পানিতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত হয়ে যা আমাদের শরীরে রোগ সৃষ্টি করে সেই পানিকে দূষিত পানি বলে।
পানি পুরোপুরি নিরাপদ করতে যে উপায় সবচেয়ে গ্রহণীয় তা হলো ফুটানো। কারণ ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটালে পানি জীবাণুমুক্ত হয়।
(ম) পানি তার অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে একই উৎসে বারবার ফিরে আসে-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ পানি তার অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে একই উৎসে বারবার ফিরে আসে পানিচক্রের মাধ্যমে। এই চক্রের মাধ্যমে সর্বদাই পানির অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাস্পে পরিণত হয়। বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে। এই মেঘের পানিকণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে আবার ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসে। শীতপ্রধান দেশে তুষার ও মেঘ থেকেই পৃথিবীতে পড়ে। বৃষ্টির পানি সাধারণত মাটিতে শোষিত হয় অথবা নদীতে গড়িয়ে পড়ে। মাটিতে শোষিত পানি ভূগর্ভস্থ পানি হিসেবে জমা থাকে। নদীতে গড়িয়ে পড়া পানি সমুদ্রে প্রবাহিত হয় এবং বাস্পীভূত হয়ে আবার বায়ুতে ফিরে আসে। এভাবেই পানি তার অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে একই উৎসে বারবার ফিরে আসে।
(য) পানি দূষণ প্রতিরোধের ৫টি উপায় লেখ।
উত্তর ঃ পানি দূষণ প্রতিরোধের ৫টি উপায় নিম্নে দেওয়া হলো
(i) কৃষি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার না করা।
(ii) কৃষি জমিতে রাসায়নিক সার কম মাত্রায় ব্যবহার করা।
(iii) রান্নাঘরের নিষ্কাশন লালায় ও টয়লেটে রাসায়নিক বর্জ্য বা তেল না ফেলা।
(iv) পুকুর, নদী, হ্রদ কিংবা সাগরে ময়লা আবর্জনা না ফেলা।
(v) সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা ময়লা এবং হ্রদ কিংবা নদীতে ভাসমান আবর্জনা পরিস্কার করা।
(i) পানিচক্র কাকে বলে? চিত্রসহ পানিচক্রের উপায় ৩টি বাক্যে লেখ।
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ও বায়ুমন্ডলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাকে পানিচক্র বলে।
চিত্রঃ পানিচক্র
পানিচক্রের উপায় ৩টি নিম্নে দেয়া হলো-
(i) সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাস্পে পরিণত হয় এবং উপরে উঠে ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়।
(ii) ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ এবং মেঘের বড় কণা বৃষ্টিপাত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে।
(iii) বৃষ্টির পানি মাটিতে শোষিত হয়ে ভূ-গর্ভে জমা থাকে এবং নদীতে গড়িয়ে পড়া পানি সমুদ্রে প্রবাহিত হয় ও বাষ্পীভূত হয়ে আবার বায়ুতে ফিরে আসে।