ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৬০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে সোনার গহনাও আমদানি করা যাবে

প্রকাশিত: ২১:২৯, ২২ অক্টোবর ২০২০

৬০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে সোনার গহনাও আমদানি করা যাবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সোনার বারের পাশাপাশি এখন সোনার গহনাও আমদানি করা যাবে। যে কেউ অবশ্য আমদানি করতে পারবে না; অনুমোদিত ১৯টি ডিলার প্রতিষ্ঠানই কেবল এই সোনার অলঙ্কার আমদানি করতে পারবে। শুল্ক দিতে হবে সব মিলিয়ে ৬০ শতাংশ। তবে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এত বেশি শুল্ক দিয়ে আমদানি করলে প্রতি ভরি গহনার দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তাই শুল্ক কমানো দরকার। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ থেকে গহনা আমদানি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা ২০১৮ অনুসরণ করে অনুমোদিত ডিলাররা সোনার অলঙ্কার আমদানি করতে পারবে। ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশন গাইডলাইন অনুযায়ী, সোনার অলঙ্কার আমদানি ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ শুল্ক (আমদানি শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক) নির্ধারিত আছে। সেই শুল্ক দিয়েই অনুমোদিত ডিলার সোনার বারের পাশাপাশি অলঙ্কার আমদানি করতে পারবেন। সোনার বার আমদানিতে প্রতি ভরিতে ২ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এর আগে অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে সোনা আমদানির অনুমতি থাকলেও স্বর্ণালঙ্কার আমদানির বৈধতা ছিল না। এই সার্কুলারের মাধ্যমে স্বর্ণালঙ্কার আমদানির অনুমতি দেয়া হল। এর ফলে দেশে বৈধপথে এটি আমদানি হবে। অর্থ পাচার কমে যাবে। বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।’ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পক্ষ থেকে বারের পাশাপাশি সোনার অলঙ্কার আমদানিরও অনুমতি চেয়েছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে শুল্ক বেশি হওয়ায় কেউ সোনার অলঙ্কার আমদানি করবে বলে মনে হয় না। অবশ্য বৈধভাবে সোনার গহনা আমদানির একটা পথ তৈরি হল; এটাও মন্দ নয়।’ বাজুসের সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, ‘৬০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমদানি করলে প্রতি ভরি গহনার দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। অত দামে কেউ অলঙ্কার কিনবে না। তাই শুল্ক না কমালে এই সুযোগের ইতিবাচক কোন ফল পাওয়া যাবে না।’ নীতিমালা হওয়ার পর এখন অবধি ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে সোনা আমদানির লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরমধ্যে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান ২৫ হাজার গ্রাম বা ২ হাজার ১৪৩ ভরি সোনা আমদানি করেছে। তারপর গত তিন মাসে নতুন করে কোন প্রতিষ্ঠান সোনা আমদানি করতে পারেনি। ছয়টি প্রতিষ্ঠান আমদানির জন্য অনাপত্তিপত্র চেয়ে আবেদন করে রেখেছে। তবে অনুমতি দিতে সময় ক্ষেপণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে বাজুসের সভাপতি দোলন বলেন, ‘আমদানি করা গোল্ড পরীক্ষার জন্য এয়ারপোর্টে একটা মেশিন বসানোর কথা। সেটি বসানোও হচ্ছে না; গোল্ডও আমদানি হচ্ছে না।’ বর্তমানে দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ভাল মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ৭৬ হাজার ৩৪১ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে বছরে ২০-৪০ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ পুরোনো সোনার অলঙ্কার গলিয়ে সংগ্রহ করা হয়। চাহিদার বাকি ৯০ শতাংশ সোনা এতদিন ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে আসত। বৈধভাবে আমদানির জন্য ডিলার লাইসেন্স দেয়ার পরও সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। উল্টো ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে হঠাৎ করেই সোনা আসা বেড়ে গেছে। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ১৫ দিনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে এক হাজারের বেশি সোনার বার এনেছেন প্রবাসীরা।
×