ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ মার্চ ২০২৩, ৭ চৈত্র ১৪২৯

monarchmart
monarchmart

জান্নাতুন রুহানি

কর্মসংস্থানের সুযোগ পোল্ট্রি শিল্পে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

কর্মসংস্থানের সুযোগ পোল্ট্রি শিল্পে

কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে পোল্ট্রি শিল্প। শিক্ষিত বেকার যুবক সহজেই বাণিজ্যিকভাবে পোল্ট্রি খামার গড়ে তুলতে পারে। গ্রাম্য নারী ও শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের সঙ্গে সহজেই এই ব্যবসা করতে পারেন। পোল্ট্রি ব্যবসার অনেক সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে অনেক কৃষক এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। সাধারণত ডিম এবং মাংস থেকে খাদ্য সারা বিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে পোল্ট্রি ব্যবসা শুরু করতে উচ্চ মূলধন প্রয়োজন হয় না। এই ব্যবসায় খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে বিনিয়োগের উচ্চ রিটার্ন নিশ্চিত। পোল্ট্রি খামার কাঠামোর উচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হয় না। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং যতœ অনুসরণ করে হাঁস-মুরগির রোগ ও অসুস্থতা হ্রাস করা যেতে পারে। সোয়াইন ফ্লু ২০০৯ সালে পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক পোল্ট্রি শিল্প। এখন আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত। সোয়াইন ফ্লুর মতো মারাত্মক ভাইরাসের জন্যও রয়েছে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা।অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন লাইসেন্স প্রয়োজন হয় না। বাণিজ্যিকভাবে পোল্ট্রি চাষ খুবই লাভজনক এবং পুষ্টির (ডিম ও মাংস) চাহিদা পূরণের জন্যও প্রয়োজন। বর্তমানে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এই ব্যবসা শুরু করতে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করছে। দেশের অন্যতম পোল্ট্রি শিল্প এলাকা টাঙ্গাইল। জেলা পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা মালিক সমিতির দাবি দেশের এক তৃতীয়াংশ মাংস ও ডিমের চাহিদার যোগানদাতা এই জেলা। কিন্তু একদিনের বাচ্চা সঙ্কট, ফিডের মূল্য বৃদ্ধিসহ মেডিসিন ও ভ্যাকসিনের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে এ শিল্পে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। বহুবিধ আগ্রাসনের কবল আর নানাবিধ সিন্ডিকেট প্রতিবন্ধকতায় পড়ে স্ব-উদ্যোগে গড়ে উঠা এই শিল্প এখন ধ্বংসের পথে। দিশাহারা হয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্ট খামারিরা।জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় রেজিস্ট্রিকৃত লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ১২৭৬টি ও ব্রয়লার খামার রয়েছে ১৬৭৮টি। এছাড়াও রেজিস্ট্রিবিহীনভাবে চলছে ৩ হাজার ৪শ’ মুরগির খামার। এর মধ্যে ২টি লেয়ার হ্যাচারিও রয়েছে। এর ১টি সরকারী ও ১টি বেসরকারী। এছাড়াও জেলায় বেসরকারী ৬টি ব্রয়লার মুরগির হ্যাচারি রয়েছে। জেলা পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও খামারিদের অভিযোগ, দেশের বস্ত্র শিল্পের পাশাপাশি অর্থনীতিতে অবদান রাখা এ পোল্ট্রি শিল্পের ধ্বংসে একটি বহুজাতিক সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে ও অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনে এ সিন্ডিকেট ১ দিনের বাচ্চা সঙ্কট, ফিডের মূল্য বৃদ্ধি ও মেডিসিন এবং ভ্যাকসিনের মূল্য বৃদ্ধি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। বিগত দিনে তারা খাদ্য ও ডিমের সিন্ডিকেট করলেও এবার তারা বেছে নিয়েছে ভিন্ন এই পন্থা। পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয় একদিন বয়সী বাচ্চায় হচ্ছে সর্বোচ্চ সিন্ডিকেট। কৃত্রিম এ সঙ্কট সৃষ্টি করে বাচ্চা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো একদিন বয়সের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন কয়েকগুণ। এছাড়া চাহিদার তুলানায় বাচ্চা সরবরাহ বন্ধ করে এ সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এর ফলে বাড়তি দাম দিয়েও বাচ্চা পাচ্ছেন না খামারিরা। আবার কোম্পানিগুলো নিজেরাই মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য বাজারে তৈরি করছে এই কৃত্রিম সঙ্কট। এ সিন্ডিকেটের ফলে স্ব-উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই শিল্প আবার ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। খামারিরা জানান, দুমাস আগে একদিন বয়সের ব্রয়লার বাচ্চার দাম ধরা হতো ৪০ টাকা। এখন সেই বাচ্চার দাম ধরা হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। আগে লেয়ার বাচ্চার দাম ধরা হতো ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর এখন সেই বাচ্চার দাম ধরা হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আইন ভঙ্গ করে মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য তাদের উৎপাদিত একদিন বয়সের এসব বাচ্চা নিজেদের খামারে ব্যবহার করছে। এতে করে বাজারে বাচ্চার সঙ্কট দেখা দিয়েছে।বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসনের হাত থেকে এই শিল্পকে রক্ষা করতে হবে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিনয় কুমার নাগ বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনও আমরা সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। সরকারীভাবে একদিন বয়সের বাচ্চা উৎপাদনের কার্যক্রম চালু হয়েছে কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। অচিরেই এ সকল সমস্যার সমাধান হবে। পোল্ট্রি শিল্প একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ, ঐতিহ্যগতভাবে খোলা পদ্ধতিতে বড় কোন বিনিযয়োগ ছাড়াই হাঁস-মুরগি পালন করে। ডিম উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক মুরগি লেয়ার মুরগি নামে পরিচিত। বাণিজ্যিক মুরগি সাধারণত ১২-২০ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। ২৫ সপ্তাহ বয়স থেকে নিয়মিত ডিম পাড়া শুরু করে। লেয়ার মুরগির বয়স ৭০-৭২ সপ্তাহ হলে ডিমের উৎপাদন কমে যায়। কিছু বাণিজ্যিক ডিম পাড়া মুরগির জাত বছরে ৩০০টিরও বেশি ডিম উৎপাদন করতে পারে। স্থানীয় প্রজাতির মুরগির ওজন প্রায় ৩০-৩৫ গ্রাম হয়। যা প্রতিবছরে প্রায় ৪০-৫০টি ডিম পাড়া সম্ভব। কিন্তু হাইব্রিড মুরগি বছরে ২৫০-৩০০টি ডিম দেয়। এক ব্যক্তি প্রতিবছর গড়ে ২৫০-৩০০ ডিম খেয়ে থাকে। সুস্বাস্থ্যের জন্য কোন ব্যক্তির দৈনিক ১২০ গ্রাম মাংস দরকার। আমরা সফলভাবে বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন দ্বারা এই চাহিদা পূরণ করতে পারি। পৃথিবীর প্রায় জায়গায় পোল্ট্রি পণ্যের জন্য কোন প্রতিষ্ঠিত বাজার নেই। তাই এই পণ্য বাজারজাত সম্পর্কে চিন্তা করতে হয় না। সহজেই নিকটস্থ স্থানীয় বাজারে পণ্য বিক্রি করা যায়। সরকার হাঁস-মুরগি পালনকে একটি শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য এই শিল্পের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারী উদ্যোগে যুব উন্নয়ন অধিদফতর হাঁস-মুরগি পালন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পোল্ট্রি ফিড এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করছে অনেক স্থানীয় ব্যাংক।
monarchmart
monarchmart

শীর্ষ সংবাদ:

সৌদিতে রমজানের চাঁদ দেখা যায়নি
কাউন্টারে নয়, ঈদে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে
দুবাইয়ে গ্রেপ্তার হননি আরাভ খান
পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয় :ওবায়দুল কাদের
একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন
দেশবরেণ্য ভাস্কর শামীম শিকদার আর নেই
বিএনপি থেকে শওকত মাহমুদ বহিষ্কার
দেশে চালের অভাব নেই, কৃত্রিম সংকট করলে ব্যবস্থা :খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার
বিমানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সাকিব আল হাসান
সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন ৬ এপ্রিল
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রিট চেম্বার আদালতে খারিজ
শিবচরে ১৯ জনের প্রাণহানি,৩১ যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা
কর্মীদের চীনা ভিডিও অ্যাপ টিকটক ডিলিট করতে বলল বিবিসি