ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

২৩০ বছরের পুরনো ’এক গম্বুজবিশিষ্ট’ জামে মসজিদ

মো. আমজাদ হোসেন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২৮ মে ২০২৫

২৩০ বছরের পুরনো ’এক গম্বুজবিশিষ্ট’ জামে মসজিদ

ছবি : জনকণ্ঠ

প্রায় দুই শত ত্রিশ বছর পূর্বে নির্মিত এক গম্বুজবিশিষ্ট বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ একটি প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মিত এ মসজিদটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গ্রামে অবস্থিত। ১৭৯৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ির কৃতি সন্তান প্রয়াত মো. আশিক ভূঁইয়া।

আনুমানিক ১০ শতক জায়গার ওপর নির্মিত মসজিদটির পশ্চিম পাশে রয়েছে একটি বিশাল পুকুর। মসজিদের দক্ষিণে রয়েছে ভূঁইয়া বাড়ি ঈদগাহ মাঠ এবং উত্তরে রয়েছে মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া মসজিদের বিশাল এক গম্বুজ আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেয়। আযানের জন্য তৈরি সুবিশাল একটি মিনার থেকে ভেসে আসা আজানের ধ্বনি পুরো মসজিদ চত্বরে এক সুমধুর পরিবেশ তৈরি করে।

মসজিদের ভেতরের দেয়ালে রয়েছে কারুকাজসহ নানা রকম হালকা নকশা, যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মসজিদের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মূল ভবনটি আকারে খুবই ছোট। নির্মাণকালীন সময়ে তিন কাতার মুসল্লির ধারণক্ষমতা রেখেই এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যেখানে ইমামসহ ২৫ জন মুসল্লি এবং বারান্দাসহ প্রায় শতাধিক মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদটিতে রয়েছে একটি সুবিশাল গভীর কুয়া। একসময় মুসল্লিরা নামাজের আগে এই কুয়া থেকে পানি তুলে ওজু করতেন। আশপাশের অনেক বাড়ির মানুষও কুয়ার পানি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতেন। তবে বর্তমানে কুয়ার ব্যবহার বন্ধ রয়েছে, এটি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারাকে ধারণ করে আজও দৃষ্টিনন্দন এ প্রাচীন বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ টিকে আছে। যার সৌন্দর্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী ভিড় জমায়। তারা বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন, বর্তমানে আমরাও করছি। মসজিদটি সরকারি উদ্যোগে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এখান থেকে উপকৃত হবে।”

বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদের নেতৃবৃন্দ জানান, “এই মসজিদটি আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য ও গর্ব। আমরা চাই, মসজিদটি সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হোক।” এ জন্য তারা সরকারের কাছে পুরনো এ মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য আহ্বান জানান।

সানজানা

×