ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেটের যুগের অবসান, দানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা!

প্রকাশিত: ০০:২৭, ২৫ মে ২০২৫

বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেটের যুগের অবসান, দানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা!

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী দান খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এক সময় বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেটের মতো শীর্ষ ধনকুবেররা এই খাতের নেতৃত্ব দিলেও এখন সেই অবস্থান দখল করছেন নারীরা। বিশেষ করে ম্যাকেনজি স্কটের মতো প্রভাবশালী দাতারা সামনে এসে উদ্ভাবনী কৌশলে দান করছেন— যা আগের প্রচলিত ফাউন্ডেশন-নির্ভর মডেলের এক নতুন বিকল্প হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

সম্প্রতি বিল গেটস ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ২০৪৫ সালের মধ্যে তার ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দেবেন এবং নিজের ১০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ দান করে দেবেন। অপরদিকে ৯৪ বছর বয়সী ওয়ারেন বাফেট বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। তিনি তার “গিভিং প্লেজ”-এর আওতায় ২৪০ জন বিলিয়নিয়ারের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার দানের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন। তবে তার প্রস্থান এ প্রতিশ্রুতির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করনীতি। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, যেসব ফাউন্ডেশনের সম্পদ ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি, তাদের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপের কথা বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীতির প্রধান ধাক্কা আসবে বড় লিবারেল ফাউন্ডেশনগুলোর ওপর— যেমন গেটস ফাউন্ডেশন, ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও জর্জ সোরোসের ফাউন্ডেশন। তুলনামূলকভাবে ছোট রক্ষণশীল ফাউন্ডেশনগুলো তেমন চাপ অনুভব করবে না।

ফলে অনেক বিলিয়নিয়ারই ঐতিহ্যবাহী ফাউন্ডেশনের বদলে বিকল্প ও সহজতর উপায়ে দানের পথে হাঁটছেন।

এই নতুন ধারায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম ম্যাকেনজি স্কট। তিনি কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সরাসরি অনুদান দিচ্ছেন— যা 'স্টেলথ গিভিং' নামে পরিচিত। তার প্রতিষ্ঠান Yield Giving ইতিমধ্যে ২,৪৫০টি অলাভজনক সংগঠনে ১৯.২৫ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্কটের এই মডেল ভবিষ্যতের 'কমনসেন্স' হয়ে উঠতে চলেছে। তার বিশ্বাসভিত্তিক, সরাসরি ও অঘোষিত দানের পদ্ধতি প্রযুক্তিনির্ভর ও নিয়ন্ত্রিত দান মডেলের এক নতুন বিকল্প হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।

শুধু ম্যাকেনজি স্কটই নন, মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস ও প্রিসিলা চ্যানের মতো নারীরাও এখন দান খাতে দৃশ্যমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন মডেল থেকে সরে গিয়ে "ফিলানথ্রপিক এলএলসি" মডেলের দিকেই ঝুঁকছেন।

সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক-এর ফিলানথ্রপি সেন্টারের পরিচালক ক্যাথলিন ম্যাককার্থি জানান, “নারীরা এখন আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আত্মবিশ্বাসী, গবেষণায় পারদর্শী এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী। খুব শিগগিরই নারীরাই এই খাতের মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠবেন।” -ফরচুন

এম.কে.

×