ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সেচ থেকে পর্যটন: সম্ভাবনার নতুন ঠিকানা ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন ব্যারেজ

আপেল মাহমুদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ০০:১৭, ২৫ মে ২০২৫

সেচ থেকে পর্যটন: সম্ভাবনার নতুন ঠিকানা ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন ব্যারেজ

দৈনিক জনকণ্ঠ

রবীন্দ্রনাথের কবিতার মতোই এক নদী বয়ে চলে ঠাকুরগাঁওয়ের বুক চিরে নাম তার টাঙ্গন। এই নদীর উপর দাঁড়িয়ে আছে একটি সেচ প্রকল্প, যার সৌন্দর্য আর জীবনের ছোঁয়ায় এখন রূপ নিচ্ছে সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রে। নদী, প্রকৃতি, মানুষ ও উন্নয়নের এক অভিনব সম্মিলন টাঙ্গন ব্যারেজ।

বর্ষায় উৎসব, শীতে প্রশান্তি টাঙ্গন নদী বর্ষায় থইথই করে, শীতে আবার হয়ে যায় শান্ত। বর্ষার পানিতে ভরপুর হয়ে গেলে ব্যারেজের প্লাবনভূমিতে সরকারি উদ্যোগে মাছ ছাড়া হয়। তিন মাস পর গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। দেশের নানা প্রান্ত থেকে শিকারিরা তাঁবু গাঁড়ে, কলাগাছের ভেলায় বা নৌকা নিয়ে নামেন মাছ ধরতে। সেই সঙ্গে জমে ওঠে লোকজ মিলনমেলা। পর্যটন হয়ে উঠছে মূল আকর্ষণ

১৯৮৪ সালে শুরু হয়ে ১৯৯২ সালে শেষ হওয়া এই প্রকল্প মূলত সেচের জন্য। বর্তমানে ২৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খনন, তীর সংরক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে ব্যারেজটি শুধু কৃষিই নয়, ঠাকুরগাঁওয়ের পর্যটনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, “বর্ষাকালে এখানে এক অসাধারণ জলাভূমির দৃশ্য দেখা যায়। উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বসার জায়গা, বৃক্ষরোপণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” 

সামাজিক উদ্যোগ ও মানুষের আগ্রহে 'টাঙ্গন ব্যারেজ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ গড়ে উঠেছে, যার সদস্যসংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। উদ্যোক্তারা বলেন, “এটি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা, প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগের।”

যেতে চাইলে ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মাত্র ১৯ কিলোমিটার দূরে চাপাতি গ্রামে অবস্থিত টাঙ্গন ব্যারেজে যাওয়া যায় অটো, মোটরসাইকেল বা মাইক্রোবাসে। নদীর উজানে সৃষ্ট জলাধার আর নীরব প্রকৃতি মিলে সেখানে একটু করো প্রশান্তি খুঁজে পায় ভ্রমণপিপাসুরা।

প্রকৃতি,সংস্কৃতি আর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা মিলিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের এই টাঙ্গন ব্যারেজ এখন শুধু সেচ প্রকল্প নয় এটি হয়ে উঠছে আনন্দ, জীবিকা আর পর্যটনের নতুন গন্তব্য।

হ্যাপী

×