
ছবি: জনকন্ঠ
কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী রামনাথ হাট। একসময় শুধুমাত্র হাটের দিনই সবাই সদাইপাতি করতো। এখন যুগের পরিবর্তনে সড়কের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে দোকান-পাট হওয়ায় গ্রামেও শহরের মতো সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়।
তারপরেও সাপ্তাহিক হাটের গুরুত্ব রয়ে গেছে। এখনো অনেক জিনিসপত্র এমন আছে, যেগুলো হাটের দিন ছাড়া সহজে পাওয়া যায় না।
ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়ায় রামনাথ হাট অবস্থিত। এখানে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার দুইদিন সাপ্তাহিক হাট বসে। এই হাটকে কেন্দ্র করে আশেপাশের আটটি ইউনিয়নের ক্রেতা-বিক্রেতাগণ একত্রে জড়ো হয়। হাটের দিনে তুলনামূলক সূলভ মূল্যে জিনিসপত্র কিনতে পাওয়া যায়। এজন্য অনেকেই এইদিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস শাক-সবজি, মাছ-মাংস, মুদি মালামাল, গরু-ছাগল কিনতে আসেন। গ্রামের কৃষকেরা নিয়ে আসেন নিজেদের উৎপাদিত টাটকা শাক-সবজি।
পাশাপাশি আরও কিছু ট্র্যাডিশনাল প্রডাক্ট বিক্রি হয় এই হাটে। যেমন এইদিনে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জামাদির কেনা-বেচা জমে ওঠে। বর্তমান সময়ে হারিয়ে যেতে বসা এই শিল্প এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে কিছু মানুষ। সপ্তাহধরে বাঁশ শিল্প কারিগররা এসব তৈরি করে হাজির হন হাটের দিনে। এছাড়াও খাঁটি সরিষার তেল, পানের চুন, দুধ, মাছ ধরার জাল, মাটির হাড়ি-পাতিলসহ অনেক কিছু বিক্রি হয় এই হাটে।
প্রতি হাটের দিনে হাঁস-মুরগি, কবুতর, রাজহাঁস ও পোষা পাখি বিক্রেতাদের মিলনমেলা বসে। গ্রামের ক্ষুদে উদ্যোক্তা ও সৌখিন মানুষজন এগুলো কিনতে আসেন।
হাটের দিন ছাড়া সচারাচর কামার শিল্পের দেখা মিলে না। তবে হাটে পাওয়া যায় বিভিন্ন আকারের দা-বঁটি, ছুরি, শাবল, কোদাল, কুড়ালসহ তৈরি করে।
হাটের দিনকে কেন্দ্র করে চারা গাছ, ফল-ফলাদি ও ফুলগাছ এর বেচা-কেনাও হয়। যারা এখানে বিক্রি করতে আসেন, তাদেরকে দোকান হিসেবে পরিমাণ মতো খাজনা পরিশোধ করতে হয়, যেটি বাজার ইজারাদাররা নিয়ে থাকে।
গ্রামীণ ঐতিহ্য ও এখানকার বাসিন্দাদের কৃষ্টি-কালচার আরও ভালোভাবে উপভোগ করা যায় প্রত্যন্ত গ্রামের হাটে। তবে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে একসময় হয়তো হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক হাট।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী হাট গুলো বাঁচাতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মুমু