ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

পরিবারের ভূমিকা

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পরিবারের ভূমিকা

সাধারণত আমরা ছেলেবেলা থেকেই পরিবারের কাছ থেকে নৈতিক আচার, আচারণ, শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ এগুলো শিখে থাকি। শিক্ষার জন্য পরিবারকে আমরা অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করি। কারণ পরিবারই আমাদের ছোট থেকে কিভাবে কথা বলতে হবে কিভাবে চলতে হবে এসব খুব যত্ন সহকারে শিখিয়ে দেয়, ভুল করলে শাসন, মুরব্বিদের সম্মান করে। কিন্তু আজ এই যুগে এসে ভেসে গেছে শিষ্টাচার, মানবিকতা, সৌজন্যবোধ। সমাজ এবং দেশ যখন আধুনিকতার ছোঁয়া নিয়ে নিজের খেয়াল খুশি মতো ভাসছে, তখন অন্যপ্রান্তে ডুবে যাচ্ছে মানুষের সভ্যতা, শিষ্টাচার আর সৌজন্যবোধ। আমাদের মাঝে থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, মানবতা আর মনুষ্যত্ববোধও। দেখা যায় কানে হেডফোন লাগিয়ে ফোন টিপতে টিপতে যায় সামনে কোন মুরব্বি থাকলেও সামান্য সৌজন্যবোধটুকু দেখায় না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এমন হয়েছে যে সমাজে এখন কেউ অন্যকে সেভাবে মান্য করে না, নেই কোন ছোট-বড় পার্থক্য। নেই বড়দের প্রতি সম্মান আর ছোটদের প্রতি স্নেহ। নেই গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি আর সৌজন্যবোধ। চারিদিকের মানুষকে দেখে বলা যায় শিষ্টাচারের স্থানটি প্রায় লোপ পেয়ে যাচ্ছে দেশ ও সমাজ থেকে। সমাজের মানুষ যেটা করবে অন্যরা তো সেটা থেকেই শিখবে। আর এর জন্য অনেকটাই দায়ী সমাজ তথা পরিবার। এটা ধ্রুব সত্য একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় সে সমাজ ও পরিবারে যা দেখবে, তা-ই গ্রহণ করবে। আমাদের কোন পরিবারের সন্তান খারাপ হচ্ছে বা বিপথে যাচ্ছে, মানে বুঝতে হবে আমাদেও নৈতিক শিক্ষাদানে সমস্যা আছে। পরিবারের বড়রা যেমন আচরণ করবে ছোটরাও তেমনটাই করবে। তাই বড়রা সঠিক হলে ছোটরা অনেকটাই পরিবর্তনের দিকে আসবে। সেজন্য আগে আমাদের বড়দেরকে শিষ্টাচারা, সৌজন্য এবং ভালো ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই অন্যজন আমাকে দেখে শিখবে। ছোট থেকেই আমরা জেনে আসছি ভালো ব্যবহার করলেই ভালো ব্যবহার পাওয়া যায়। আমি অন্যজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে তার বিনিময়ে আমিও ভালো ব্যবহার পাব। তাই আগে নিজে পরিবর্তন এবং সচেতন হতে হবে, তারপর অন্যজনকে সচেতন করার চেষ্টা করতে হবে। সমাজ তথা পরিবারে আমাদের প্রত্যেককে নিজেদের স্থান থেকে পরিবর্তন হতে হবে। তাহলে দেখবেন একদিন দেশ হয়ে উঠবে নৈতিকতায় সৌন্দর্যময়। সবার মধ্যে থাকবে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। ছোটদের স্নেহ আর বড়দের সম্মান করে সমাজের অন্যদেরকেও দেখিয়ে দেখিয়ে সম্মানের বিষয়টা বোঝাতে হবে। তখন আমার কাছ থেকে বড়-ছোট উভয়েই শিক্ষা পাবে। সেজন্য নিজেদের মন-মানসিকতায় এবং আচরণে ইতিবাচক মনোভাব আনতে হবে,তাহলেই সুন্দর আচারণ এবং সৌজন্যবোধ সমাজের প্রতিটা মানুষের মাঝেই জাগ্রত হবে। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×