ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের কাছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করতে চায় রাশিয়া

প্রকাশিত: ১৭:১৭, ২৩ মে ২০২২

বাংলাদেশের কাছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করতে চায় রাশিয়া

স্টাফ রিপোর্টার॥ বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে চলমান অস্থিরতার অন্যতম কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশে নিজেদের জ্বালানি বিক্রি করার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়া। ফলে জ্বালানি তেলের দামেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। কিন্তু এসবের মধ্যেই বাংলাদেশের কাছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। আর এ তথ্য জানিয়েছেন খোদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এই তেল কিভাবে কেনা যায় তা পর্যালোচনা করা হচ্ছেও বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিপিএমআই) আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ খাতে সাইবার নিরাপত্তা-নীতি এবং অপারেশনাল দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি। এসময় নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের কাছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। বিশেষ করে ক্রুড অয়েলের কথা বলছে তারা। আমরা সেই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখছি। কীভাবে তেল কেনা যায়, তা পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া আগে প্রতিদিন প্রায় ৫ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করত, যার অর্ধেকের বেশি যেত ইউরোপে। গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা একের পর এক অবরোধ আরোপ শুরু করে রাশিয়ার ওপর। এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দফায় দফায় বাড়তে থাকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ১০০ ডলার ছাড়িয়ে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১৪০ ডলারে উঠে আসে। এরপর আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে ভারত। বর্তমানে বিশ্বের অবরোধের মধ্যেও চীন এবং ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলে আমদানি করছে। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে চীন রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করছে বলে বিশ্ব গণমাধ্যমে জানানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই তথ্য জানালেন। তবে সরকার এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয় বলেও জানা গেছে। এদিকে অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাতে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাহ্যিক নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তার প্রটোকল দ্রুত করা অপরিহার্য। সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি করাও আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ খাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিস্টেম অটোমেশনের বিভিন্ন ডিভাইসকে অনলাইন কমিউনিকেশনের আওতায় রাখতে হয়। তাই সাইবার হুমকির সম্ভাবনাও বাড়ছে। তাই অপ্রত্যাশিত এই চ্যালেঞ্জ মোকাবে করে আমাদের সচেতন ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা হুমকির আগাম সতর্কতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা, সেবা সুরক্ষা, তথ্য পরিকাঠামোর সুরক্ষা এবং সাইবার সাপ্লাই চেইন ঝুঁকি হ্রাস, সাইবার সিকিউরিটিতে গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানিকভাবে আরও কাজ করতে হবে। সেমিনারে ‘ফান্ডামেন্টাল ফিচারস অব সাইবার সিকিউরিটি’ বিষয়ে কুয়েটের অধ্যাপক ড. কাজী মো. রকিবুল আলম, ‘স্কোপ, নেসেসিটি অ্যান্ড পলিসি সাইবার সিকিউরিটি ইন পাওয়ার সেক্টর’ বিষয়ে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাওসার আমীর আলী এবং ‘সাইবার সিকিউরিটি ইন পাওয়ার সেক্টর-সাইবার থ্রেট, ডিজাইন, ইমপি মেন্টেশন অ্যান্ড মনিটরিং ডিফেনসিভ জিরো ট্রাস্ট আর্কিস্ট্রাকচার’ বিষয়ে মাইক্রোসফটের প্রধান তথ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মুসফিকুর রহমান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিপিএমআই’র রেক্টর মো. মহসিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
×