ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় সম্পত্তির জন্য বৃদ্ধকে শেকলবন্দি

প্রকাশিত: ১৬:২৯, ২২ মে ২০২২

নেত্রকোনায় সম্পত্তির জন্য বৃদ্ধকে শেকলবন্দি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ জেলার কেন্দুয়ায় আব্দুর রাজ্জাক (৭০) নামের এক বৃদ্ধকে শেকলবন্দি করে রাখার দেড়মাস পর স্থানীয় থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় তাকে বসতঘরে শেকলবন্দি করে রেখেছিলেন স্ত্রী-সন্তানরা। এ ব্যাপারে শনিবার রাতে বৃদ্ধ নিজেই বাদী হয়ে তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তার স্ত্রী ও এক ছেলেকে গ্রেফতার করে আজ রবিবার আদালতে সোপর্দ করেছে। জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রামে। তার নিজ নামে বসতবাড়িসহ এক একরের মতো জমি-সম্পত্তি আছে। ওই সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য স্ত্রী ও তিন ছেলে তাকে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের দুরভিসন্ধি আঁচ করতে পেরে আব্দুর রাজ্জাক রাজি হচ্ছিলেন না। এ কারণে গত ৫ এপ্রিল থেকে তারা তাকে শেকলবন্দি করে রাখেন। তার বাম পায়ে লোহার শেকল পরিয়ে বসতঘরের চৌকির খুঁটির সঙ্গে বন্দী করে রাখেন তাকে। এছাড়াও প্রায় সময় তাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তারা। নির্যাতিত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত ঈদের দিনেও তারা আমাকে এভাবে বন্দী করে রাখে। তারা আমাকে ঠিকমতো খাবার খেতেও দিত না।’ বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে বন্দী করে রাখার খবর পেয়ে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ও কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান শনিবার বিকেলে কেন্দুয়া থানা পুলিশের সহায়তায় মনাটিয়া গ্রাম থেকে বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন। কল্যাণী হাসান বলেন, ‘আমরা বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাকে চৌকির খুঁটির সঙ্গে শেকলবন্দি অবস্থায় পাই। তখন আমরা তাকে শেকলমুক্ত করি। এ সময় একটি বিবর্ণ লুঙ্গি ছাড়া তার গায়ে আর কোনো কাপড় ছিল না। উদ্ধারের পর তিনি অঝরে কাঁদেন। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বৃদ্ধের স্ত্রী হামিদা আক্তার ও বড় ছেলে সেলিম মিয়াকেও আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।’ কেন্দুয়া থানার ওসি আলী হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘শনিবার রাতে বৃদ্ধ নিজেই বাদী হয়ে তার স্ত্রী হামিদা আক্তার ও তিন ছেলে সেলিম, শাহীন এবং মামুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আজ রবিবার হামিদা ও সেলিমকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এদিকে আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ও ছেলেরা দাবি করেছেন, ‘তিনি তার সহায়সম্পত্তি অন্যদের কাছে বিক্রি বা লিখে দেয়ার পাঁয়তারা করছিলেন। সম্পত্তি রক্ষার জন্যই তাকে আটকে রাখা হয়।’
×