
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। দেশের মুদ্রাবাজারে টাকার বিপরীতে ডলারে মান বেড়ে যাওয়া এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রিতে অস্থিরতায় সূচক নয় মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের বিপুল অঙ্কের টাকা তছরুপের ঘটনায় ভারতে আটক প্রশান্ত কুমার হালদারের শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। ক্রেতার তুলনায় বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় একপ্রকার ধস নেমেছে শেয়ারবাজারে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে দুই শতাংশের ওপরে। এমন পতনের ফলে সূচকটি নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। তবে দরপতনের মধ্যেই ছয় প্রতিষ্ঠানের উল্টো চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতা বাড়ায় দিনটিতে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়ে সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এরপরও লেনদেনের বেশিরভাগ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের বিক্রিতা ছিল না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকে নগদ টাকার সঙ্কট চলছে। সরকারী ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে বিনিয়োগকৃত কিছু টাকা ফেরত চেয়েছে। মূলত এই কারণেই শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ ছিল। আইসিবির শেয়ার কেনাবেচা করেই থাকে। কিন্তু শেয়ারবাজারে এমন পরিস্থিতিতে আইসিবির শেয়ার বিক্রির বিষয়টি সামনে চলে আসায় আতঙ্ক তৈরি হয়। এছাড়া পিকে হালদারের গ্রেফতারের কারণে আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অস্থিরতায় সূচকের পতন ঘটেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সকালে সামান্য সূচকের বৃদ্ধি হলেও ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে থাকে। দিনের শুরুতে দেখা দেয়া পতনের ধারা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষপর্যন্ত। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৩৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪৩০ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। এমন টানা পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি গত বছরের ২ আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভাল কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪০ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।