ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আরেক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৯ জানুয়ারি ২০২২

আরেক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে ব্রয়লার মুরগির কমলেও আরেক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। প্রতিনিয়ত দাম বাড়ায় স্বস্তি নেই ভোজ্যতেলে। চাল, আটা চিনির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ, ডিম ও সবজির দাম। গরু ও খাসির মাংস আগের দামে বিক্রি হলেও মাছের দাম বেড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দেয়া হলেও রিফাইনাররা সরকারী নির্দেশনা আমলে নিচ্ছে না। বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। এ কারণে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুদিপণ্যের ব্যবসায়ীরা। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ সংক্রান্ত বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকের আগেই পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে। এতে করে স্বল্প আয়ের মানুষ বেশি অসুবিধায় পড়েছেন। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন বাজার, গোড়ান কাঁচাবাজার এবং মালিবাগ রেলগেট কাঁচাবাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবিও বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার তথ্য জানিয়েছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। পাকিস্তানী কক বা সোনালি মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবেলায় বিয়ে-শাদি, পিকনিক, উৎসব-পার্বণ এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় মুরগির চাহিদা কমেছে। আর এ কারণে বাজারে মুরগির দামও কমতে শুরু করেছে। খুচরা পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০-১৭৫ টাকা। পাকিস্তানী কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০-২৮০ টাকা। সাধারণত শীতের এই সময়টাতে মুরগির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু বিধিনিষেধের কারণে এবার কিছুটা কমেছে। এ প্রসঙ্গে খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা জব্বার প্রামাণিক জনকণ্ঠকে বলেন, সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম কমতির দিকে। এক মাসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকা কমেছে। সামনে মুরগির দাম আরও কমবে। তিনি বলেন, শীতের এই সময় বিয়ে-শাদি ও উৎসব-পার্বণে মুরগির চাহিদা বাড়ে। কিন্তু করোনার কারণে সামাজিক অনুষ্ঠান বড় করে করার সুযোগ না থাকায় চাহিদা কমে গেছে। আর এ কারণেই কমছে দাম। মুরগির দাম কমলেও স্বস্তি নেই ভোজ্যতেলে। দাম বাড়ছেই। ওই বাজারে ভোজ্যতেলের পাঁচ লিটারের বোতল কিনছিলেন তিলপা পাড়ার বাসিন্দা হানিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অথচ বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়েছিলেন ৬ ফেব্রুয়ারির আগে দাম বাড়বে না। কিন্তু ব্র্যান্ডভেদে দাম বাড়ায় প্রতিটি পাঁচ লিটারের ক্যান ৭৪০-৭৯০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে দাম। খুচরা বাজারে ১ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকা পর্যন্ত। অথচ গত সপ্তায় এই তেল পাওয়া গেছে ১৬০ টাকায়। এদিকে পেঁয়াজ ও সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৩০-৩৫, আমদানিকৃতটি ৪০-৪৫, প্রতিকেজি সরু চাল মানভেদে ৬০-৭২, মোটা মানের স্বর্ণা ও চায়না ইরি ৪৮-৫০ এবং মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। প্রতিকেজি খোলা আটা ৩৫-৪০ এবং প্যাকেট ৪০-৪৫, মসুর ডাল মানভেদে ৯৮-১২৫, চিনি খোলা প্রতিকেজি ৭৫-৭৮, প্যাকেট প্রতিকেজি ৮০-৮৫, ডিম প্রতিহালি ৩৫-৩৮, আদা দেশী ৮০-১৪০, আদা আমদানি ১২০, রসুন ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গরু ৫৮০-৬০০, খাসি ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুট বেড়েছে মাছের দাম। মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮৫০ টাকা কেজি। নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। শিম মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকা। শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। শাল গমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন সরবরাহ দাম কমতে শুরু করেছে।
×