ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টোকিও অলিম্পিকের মতো সুরক্ষানীতিতে খেলা শুরু কাল

নিরাপদ বিপিএল আয়োজনে আশাবাদী বিসিবি

প্রকাশিত: ০১:৫২, ২০ জানুয়ারি ২০২২

নিরাপদ বিপিএল আয়োজনে আশাবাদী বিসিবি

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আগামীকাল মাঠে গড়াবে অষ্টম বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসর। অনেক আগেই দল গুছিয়ে ৬ ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছে। তবে সেই অনুশীলনে নামার ক্ষেত্রে কোন স্বাস্থ্যবিধির দিকে খেয়াল রাখেনি দলগুলো। বিশেষ করে বিদেশী ক্রিকেটার ও কোচরা মানেননি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া কোয়ারেন্টাইন নীতিমালা। তারই প্রভাব পড়েছে সোমবার শুরু হওয়া বিপিএল সংশ্লিষ্ট সকলের করোনা টেস্টে। কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন। দেশে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দিনকে দিন বাড়ছে সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে বিপিএল আয়োজন দারুণ চ্যালেঞ্জের হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জন্য। ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই আসরের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে করোনা থেকে বাঁচার সুরক্ষানীতি। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, গত বছর জুলাই-আগস্টে যেভাবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিক টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে সেভাবেই বিপিএল আয়োজন হবে। তবে সেটা মেনে নিরাপদে আয়োজন সফল করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের হবে বিসিবির জন্য। করোনা ঝুঁকি শুরু হয়ে গেছে দেশে। ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ আগে করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়েছে বিধিনিষেধ। সাধারণ মানুষের চলাচল, মার্কেট-বাজার করা, রেস্টুরেন্ট বা পার্কে যাতায়াত, হোটেল-রিসোর্টে থাকা, যানবাহনে চলাফেলা ইত্যাদি বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্যনীতি দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যেই বিপিএল টি২০ এর অষ্টম আসর আয়োজনের সব পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছে বিসিবি। এখন মাত্র আজ দিনটাই বাকি। আগামীকাল শুরু হবে এবারের বিপিএল। প্রথম ম্যাচে বেলা ১টা ৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে খেলবে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। ৬ দলের প্রতিটিতে খেলোয়াড় কর্মকর্তা, সাপোর্টিং ও কোচিং স্টাফ মিলিয়ে প্রায় ২৫-৩০ জনের বহর। এছাড়া আম্পায়ার, ম্যাচ অফিসিয়াল, টিভি ও ক্যামেরা ক্রুসহ বিপিএল সংশ্লিষ্ট মানুষ প্রায় ৩ শতাধিক। তাই বেশ বড় যজ্ঞই হতে চলেছে করোনা শঙ্কার মধ্যে। আর তাই প্রটোকলও বেশ কড়াকড়িই করছে বিসিবি। করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়েই গত বছর হয়েছে টোকিও অলিম্পিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টে প্রায় ১১ হাজারেরও বেশি শুধু ক্রীড়াবিদই অংশ নিয়েছেন। সেখানে যে ধরনের সুরক্ষানীতি বাস্তবায়ন করেছিল আয়োজক কমিটি, সেটি অনুসরণ করবে বিসিবি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সফলভাবে বিপিএল শেষ করতে কাজ করছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ। কয়েকজন ইতোমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের ছাড়াই দলগুলোকে ঢুকতে হয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয়ে। এবার বিসিবি যে স্বাস্থ্যনীতি দেবে সেটাই মানতে হবে সব দলকে। এ বিষয়ে ডাঃ দেবাশীষ বলেন, ‘করোনার যে গাইডলাইনটা আমরা এই বিপিএলে প্রয়োগ করতে যাচ্ছি, এটা টোকিও অলিম্পিকের আলোকে চেষ্টা করা হয়েছে। এখানকার বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চেষ্টা করছি সেটাকে প্রয়োগ করতে।’ করোনা ঝুঁকির মধ্যেই বিসিবি ইতোমধ্যে ৫ দলের বঙ্গবন্ধু টি২০, ডিপিএল টি২০, জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল), বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ (বিসিএল) আয়োজন করেছে নির্বিঘেœ। এবার বিপিএলও নিরাপদে আয়োজনে আশাবাদী বিসিবি। দেবাশীষ বলেন, ‘আমরা এর আগে বিসিএলসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় যে সিরিজ আয়োজন করেছি, মোটামুটি চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্য সুরক্ষা যতটুকু সম্ভব নিশ্চিত করার জন্য। আমরা মোটামুটি বড় কোন সমস্যা ছাড়াই টুর্নামেন্টগুলো শেষ করতে পেরেছি। এখন সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আশা করছি এই বিপিএলটা একইভাবে পরিচালনা করব।’ কিন্তু নীতিমালা থাকলেই হবে না, মানতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। এ বিষয়ে দেবাশীষ বললেন, ‘এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে স্টেক হোল্ডার্সরা, ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, খেলোয়াড়, অর্থাৎ যারা খেলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আছেন তাদের সহযোগিতা ছাড়া সাফল্যমি ত করতে পারব না। আমরা যদি সচেতনতা অবলম্বন করে অংশগ্রহণ করতে পারি, এই টুর্নামেন্টটাও সাফল্যের সঙ্গে শেষ করতে পারব। বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে করোনার উর্ধমুখী যে প্রবণতা, সেই বাস্তবতার মধ্যে আমরা এবারের বিপিএল আয়োজন করছি। খেলার সঙ্গে সম্পর্কিত যারা আছেন, সবার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে টুর্নামেন্টটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিপিএল যে কমিটি আছেন, তারা একটি গাইডলাইন তৈরি করেছেন। সেই অনুসারে আমাদের কোভিড সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
×