ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাজে আসছে না কালভার্ট

প্রকাশিত: ০১:৩৫, ১৩ জানুয়ারি ২০২২

কাজে আসছে না কালভার্ট

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ও গজালিয়া ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রায় তিন বছর আগে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি কালভার্ট কোন কাজে আসছে না। দুটি কালভার্টই সড়ক থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ফলে কালভার্টে উঠতে-নামতে গেলে ব্যবহার করতে হয় বাঁশের সাঁকো। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। চিকনিকান্দী ও গজালিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের যাতায়াত সুবিধা ও দুর্ভোগ কমাতে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দুটি বক্স কালভার্ট। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। পানখালী খালের ওপর ১০০ মিটার ব্যবধানের দূরত্বে কালভার্ট দুটি নির্মাণ করা হয়। এর একটি কালভার্ট নির্মাণের পর থেকে পরিত্যক্ত রয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা এটি খড়খুটো শুকানোর কাজে ব্যবহার করে। অপর কালভার্টটির গুরুত্ব থাকলেও তা ব্যবহারে শতভাগ অনুপযোগী। ভুক্তভোগীদের পক্ষে স্থানীয় বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান, ১১০ ফুট প্রশস্ত খালের ওপরে মাত্র ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে কালভার্টের দুই প্রান্ত থেকে মূল সড়ক অন্তত ৮০ ফুট ফারাক থেকে গেছে। তাই স্থানীয়রা কালভার্টে উঠতে-নামতে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে নিয়েছে। তা দিয়েই জনগণ এপার-ওপার যাতায়াত করছে। ইউসুফ হাওলাদার বলেন, প্রায় তিন বছর আগে একই স্থানে দুটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এর একটি কালভার্ট আদৌ ব্যবহার হয় না। অথচ যেটি ব্যবহার হয়, তা দিয়ে পারাপার হওয়া যায় না। অথচ দুটি কালভার্টের টাকা দিয়ে একটি নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর সুবিধা হতো। স্থানীয় বাসিন্দা আমির হাওলাদার বলেন, জনগণের ভোগান্তি নিরসনে কালভার্ট হয়েছে। কিন্তু জনগণ এর সুফল পায় না। নির্মাণকালে বারবার আপত্তি দেয়া সত্ত্বেও অফিসার এবং ঠিকাদার আমাদের কথা শোনেনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়িঘর, হাটবাজার, কর্মস্থল ও শিশুদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যেতে বাঁশের সাঁকো বেয়ে পার হতে হয়। আর তা হতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। যা দেখারও কেউ নেই। পঞ্চগড়ে ভরসা কাঠের সাঁকো এ রহমান মুকুল, পঞ্চগড় থেকে জানান, সদর উপজেলার মীরগড়ে করতোয়া নদীর ওপর স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু। ফলে ভারতীয় সীমান্তবর্তী মীরগড়, আমতলা, অমরখানা, কাকপাড়াসহ ১০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়রা বলছেন, নদীর দু’পারে থাকা লোকজনের বড় একটি অংশ নদীতে পাথর-বালি উত্তোলন ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। একই কারণে তাদের প্রতিদিনই পারাপার হতে হয় নদী। তাছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মীরগড় ও পঞ্চগড় শহরে হওয়ায় শিক্ষার্থীদেরও প্রতিদিন করতোয়া নদী পারাপার করতে হয়। স্থানীয়রা তাদের এ দুর্ভোগ লাঘবে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েও সাড়া পাননি। তারা বলছেন, নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য কয়েকবার মাপজোক ও ম্যাপ তৈরি করলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এলাকাবাসী বলছেন, নির্বাচনের সময় অনেকেই করতোয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে কেউই সেটা মনে রাখেননি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত নদী পারাপারে স্থানীয়রা ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করত। শুকনো মৌসুমে তেমন সমস্যা না হলেও বর্ষা মৌসুমে দেখা দিত পারাপারে নানা সমস্যা। সন্ধ্যার পরে নৌকা চলত না। আর এ কারণে নদীর অপর পারে থাকা মানুষজনকে পরেরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৯ সালেই স্থানীয় আব্দুল মতিন নামের এক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। পঞ্চগড় জেলা পরিষদের কাছ থেকে বাৎসরিক ৪ লাখ টাকায় ঘাট ইজারা নিয়ে বাঁশ, কাঠ দিয়ে নদীর ওপর তৈরি করেন কাঠের সাঁকো। অপরিকল্পিতভাবে সাঁকো তৈরি ও নদীর পানির প্রবল ¯্র্েরাতের কারণে একমাস না যেতেই সেই সাঁকো ভেঙ্গে ভেসে যায়। এর কিছুদিন পর ৩শ’ ইউক্লিস্টাস গাছ দিয়ে খুঁটি ও কাঠ ব্যবহার করে পুনরায় তিনি একই জায়গায় প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সাঁকো তৈরি করেন। মীরগড় গ্রামের সুজাত বাদশাহ, আলমগীর হোসেন, নূর আজম বলেন, এক সময় নদীতে ছোট নৌকায় পারাপারে খুব সমস্যা হতো। নদীর দু’পারে কাদা মাটি পার হতেও সমস্যা হতো। কাঠের সাঁকোটি তৈরি করায় কিছুটা হলেও স্থানীয়রা উপকৃত হয়েছে কিন্তু স্থায়ী সমাধানের জন্য সেতু নির্মাণ জরুরী। তারা বলছেন, মীরগড়ের করোতোয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হলে পঞ্চগড় থেকে সড়কপথে তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা যেতে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ সাশ্রয় হবে। ঝিনাইগাতীতে ভাঙ্গা সেতু সংবাদদাতা, ঝিনাইগাতী, শেরপুর থেকে জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া উনিয়নের মধ্য ডেফলাই গ্রামে ভাঙ্গা সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে পরিদর্শন ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শালচুড়া চৌরাস্তা থেকে মধ্য ডেফলাই হয়ে পশ্চিম ডেফলাই তিন রাস্তা মোড় পর্যন্ত সড়কটি এলজিইডির অর্থায়নে পাকাকরণ করা হয়। ওই পাকা রাস্তার মধ্য ডেফলাই গ্রামের মনু মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন এলজিইডির পুরাতন সেতু জরাজীর্ণ হয়ে মধ্যাংশের কয়েক স্থানে ভেঙ্গে গেছে। এ অবস্থাতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসীর পক্ষে ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জিয়াউল হক জিয়াসহ আরও অনেকে অতিদ্রুত সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। নলকুড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মজনু মিয়া জানান, ভাঙ্গা সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে আমি মৌখিকভাবে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, ওই সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
×