ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতজুড়ে শোক

কপ্টার দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াতসহ ১৩ জন নিহত

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

কপ্টার দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াতসহ ১৩ জন নিহত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতের প্রথম চীফ অব ডিফেন্স স্টাফ (প্রতিরক্ষা প্রধান) বিপিন রাওয়াত (৬৩) বুধবার একটি সামরিক কপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় তার স্ত্রী মাধুলিকা রাওয়াত এবং অপর ১১ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। বুধবার স্থানীয় সময় দুুপুর ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ ১৪ আরোহী নিয়ে এমআই-১৭ কপ্টারটি তামিলনাড়ু রাজ্যের কুন্নুরে বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলেই ১৩ জন নিহত হন। দগ্ধ ও মুমূূর্ষু অবস্থায় বিপিন রাওয়াতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। ভারতীয় বিমানবাহিনী বিপিন রাওয়াতের নিহতের খবর স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে শোক নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীসহ অন্য শীর্ষ নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে দগ্ধ অপর এক সেনা কর্মকর্তা জীবিত রয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার বিপিন রাওয়াতের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। খবর আনন্দবাজার, বিবিসি ও এনডিটিভি অনলাইনের। কুন্নুরের দুর্গম এলাকায় কপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠক করেন। সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি বিপিন রাওয়াত চীফ অব ডিফেন্স স্টাফের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিহতদের পরিচয় এখনও প্রকাশ না করা হলেও সেখানকার পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অবহিত করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এ বিষয়ে আজ পার্লামেন্টকে বিস্তারিত জানানো হবে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন বুধবার বিকেল ৫টায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এই দুর্ঘটনা যখন ঘটে, তখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছিলেন রাজনাথ সিং। দুর্ঘটনার খবর শোনার পর পরই তিনি বিপিন রাওয়াতের বাড়িতে যান। ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরভানেও ওই বাড়িতে যান। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী কপ্টারটি তামিলনাড়ুর নিকটবর্তী সুলুরের একটি বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিল। তিনি রাজ্যের উরাহগামানরালামে অবস্থিত একটি ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এটি বিধ্বস্ত হয়। ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জে জে সিং বলেন, যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের পরিচয় শনাক্ত করা বেশ কঠিন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বুধবার দুপুরের দিকে কুন্নুরের নীলগিরির একটি চা বাগানের ওপর ভেঙ্গে পড়ে এমআই- হেলিকপ্টারটি। কৃষ্ণস্বামী নামের এই বাসিন্দা বলেন, প্রথমেই বিকট আওয়াজ হয়। আওয়াজে চমকে উঠে ঘর থেকে বেরোতেই তার চোখে পড়ে একটি হেলিকপ্টার ধাক্কা মারল একটি গাছে। ধাক্কার অভিঘাতে মুহূর্তে আগুন জ্বলে যায় হেলিকপ্টারে। আগুনের গোলার মতো তা ধাক্কা মারে আরও একটি গাছে। কৃষ্ণস্বামীর দাবি, এই ঘটনা দেখে তারা হেলিকপ্টারের দিকে ছোটেন। যখন সেখানে পৌঁছান, দেখতে পান কয়েকজন হেলিকপ্টারটি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। তাদের দেহের সিংহভাগই অগ্নিদগ্ধ ছিল।
×