ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় এবার বৃদ্ধা আহত, চালাচ্ছিল হেলপার

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় এবার বৃদ্ধা আহত, চালাচ্ছিল হেলপার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে ময়লাবাহী ট্রাকের ধাক্কায় আরজু বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। আরজু বেগমকে ধাক্কা দেয়া ট্রাকটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ময়লা বহনের কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে ট্রাকটি সিটি কর্পোরেশনের নয়। ময়লা ফেলার কাজ পাওয়া ঠিকাদারের ভাড়া করা ট্রাক। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকটি চালাচ্ছিল হেলপার। এদিকে, গাড়িটির নিজেদের নয় বলে দাবি করছেন দুই সিটি কর্পোরেশন। এতে দ্বিধা সৃষ্টি হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাড়িটির সামনে ডিএসসিসির স্টিকার লাগানো রয়েছে। মূলত এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পুরনো একটি ট্রাক। আগে ভাড়ায় ইট, বালু পরিবহন করলেও বর্তমানে চুক্তিতে ডিএসসিসির ময়লা পরিবহন করে। আহত আরজু বেগম ২৮০/এ শেরে বাংলা সড়ক, রায়েরবাজার এলাকায় থাকেন। তিনি গুলশান-২ এ একটি গার্মেন্টসের ক্লিনার। প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার সকালেও অফিসে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতের বরাত দিয়ে তার ছেলে জয়নাল বলেন, তার মা মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি থেকে নামছিলেন। এসময় পেছন থেকে ময়লাবাহী ট্রাকটি এসে তার মাকে এবং দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তার মা ফাঁকা রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান এবং জ্ঞান হারান। খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। ট্রাকের ধাক্কায় তার মা কোমরে, ঘাড়ে ব্যথা পেয়েছেন। হাসপাতালে এক্স-রে শেষে চিকিৎসক ওষুধ দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, ধাক্কা দেয়া ট্রাকটি চালাচ্ছিল হেলপার। দুর্ঘটনা ঘটিয়েই হেলপার চম্পট দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসা ট্রাকটির মালিক রতন মিয়াকে আটক করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকেও থানায় কল করে বলা হয়েছে, ট্রাকটি তাদের নয়। তাদের এন্ট্রিকৃত তালিকার মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটানো যানটি নেই। তবে ট্রাকটিতে সিটি কর্পোরেশনের স্টিকার লাগানো ছিল। রতনও পুলিশকে জানিয়েছে, চুক্তিতে ডিএসসিসির ময়লা পরিবহনের কাজ করেন তারা। মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ সাহিদুল ইসলাম জানান, ওই এলাকার ময়লা ফেলার কাজ পাওয়া সাবকন্ট্রাক্টর ধনা মিয়া ট্রাক মালিক রতন মিয়ার ট্রাকটি ভাড়া করেন। প্রতিদিন ওই ট্রাক দিয়ে ময়লা ফেলা হতো। এতে রতন মিয়াকে দৈনিক আড়াই হাজার টাকা করে দেয়া হতো। ট্রাকটি যেহেতু পুরনো ও কাগজপত্র নেই, সেহেতু সিটি কর্পোরেশনের স্টিকার লাগালে ট্রাফিক পুলিশ আটকাবে না। তাই ট্রাকে স্টিকার লাগিয়ে চালানো হতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি জানিয়েছে আটক ট্রাক মালিক রতন। এসআই বলেন, দুর্ঘটনার সময় ট্রাকটি রতন না চালিয়ে তার হেলপার চালাচ্ছিল। ঘটনার পরপরই হেলপার পালিয়ে যায়। রতন হেলপারের নাম মাসুদ বলে জানালেও তার ঠিকানা বলতে পারেনি। এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানতে চাইলে সাবকন্ট্রাক্টর ধনা মিয়া বলেন, ট্রাক চালক রতন মিয়া তার পরিচিত হওয়ায় তিনি ট্রাকটি ভাড়া করেছেন মাত্র। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। তবে ধনা মিয়া ৩-৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন। তার কাজই হচ্ছে ময়লা ফেলার ট্রাক ঠিক করা। ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন, গাড়ি, চালক এবং হেল্পার কোনটিই ডিএনসিসির নয়।
×