ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে

প্রকাশিত: ২২:০৬, ২৯ নভেম্বর ২০২১

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সব বাধাবিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এই এগিয়ে যাওয়ার গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। যে গতি নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এ গতি কেউ যেন আর রোধ করতে না পারে। আরও অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ছিল, থাকবে। সেগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব। মুজিব জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনকালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অনেক বড় ও বিরল অর্জন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা এটা অর্জন করতে পেরেছি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। তা আমরা বাস্তবায়ন করেছি, আমরা বিভিন্ন কাজ করেছি খুব পরিকল্পিতভাবে। এর ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে পেরেছি। রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রায় পুরো অংশজুড়েই ছিল বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের সার্বিক প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো। সংসদ নেতা বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পেয়েছি এটা বাংলাদেশের জনগণেরই অবদান। আমি দেশবাসীর প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা বারবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছেন বলেই আমরা দেশের এত উন্নয়ন করতে পেরেছি, এ বিরল অর্জন আমরা দেশের জন্য আনতে পেরেছি। কেবল উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে বলে নয়, সর্বক্ষেত্রেই বিশ্বে আজ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটা বিরাট অর্জন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাপনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সে সময় সৌদি পরিবহনমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার সালেহ নাসের আল জাসেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সংসদ অধিবেশনে পরিদর্শনে আসেন এবং অধিবেশন প্রত্যক্ষ করেন। সংসদ নেতার বক্তব্যের শেষে স্পীকার সংসদ অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ অধিবেশনে তুলে ধরেন। অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের বিশেষ ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে চ‚ড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তরণের ঐতিহাসিক রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে (উন্নয়নশীল দেশে) উত্তরণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল। যুক্তরাষ্ট্র সময় ২৪ নবেম্বর বৃহস্পতিবার রেজুলেশন গৃহীত হয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীকে এই অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালী জাতির বিরল সম্মান ও অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা অর্জন করতে পেরেছি। জনগণের জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় আমরা কান না দিয়ে অভিষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিকনির্দেশনা নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করি। বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী করার কারণে একটানা দেশের জন্য কাজ করতে পেরেছি বলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এই কাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি কিন্তু তা নয়। এই যাত্রাপথ কখনও সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্বিচারে পেট্টোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ- সেই অবরোধ বিএনপি এখনও প্রত্যাহার করেনি। সরকার প্রধান বলেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টির জন্য নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে। এরপরে এই করোনা মহামারীও আমাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতির চাকা যখন স্থবির তখন আমরা দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। এর ফলাফল দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এজন্য আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের মানুষ এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম একটা সুন্দর জীবন পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার সময় পেয়েছিলেন। পাকিস্তানের একটি প্রদেশ ছিল বাংলাদেশ। সেই প্রদেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রে রূপ দেয়, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে মাত্র সাড়ে তিন বছরেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। এর সুদীর্ঘ বছর পর আমরা এবার বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি আনতে পারলাম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হতো। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা বেগম জিয়ার কথা বলেন, তারা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু ও বিলাসবহুল জীবন। আর তারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দলে টেনে একটি এলিট শ্রেণী তৈরি করল। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কারণে আমরা অনেক সুবিধা যেমন পাবো, তবে স্বল্পোন্নত দেশের সব সুযোগগুলো পাবো না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি করোনাকালের সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য। এই অর্জন সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা এ সময় আবেগপ্রবণ হয়ে যান। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমার অবর্তমানে আমাকে দলের সভাপতি নির্বাচন করে। আমি জানি এ দেশে খুনীরা মুক্ত, যুদ্ধাপরাধীরা মুক্ত এবং তারাই রাজত্ব চালাচ্ছে। যেখানে আমার ছোট ১০ বছরের ভাইকেও (শেখ রাসেল) ছাড়েনি। সেখানে আমিও রেহাই পাবো না। আমারও হয়ত যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটা জেনেও শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে দেশের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন করার নিয়ত নিয়ে আমার ছোট বাচ্চা ১০ বছরের ছেলে জয় এবং আট বছরের মেয়ে তাদের আমার বোনের (শেখ রেহানা) কাছে দিয়ে আমি বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছিলাম। একটা লক্ষ্য ও স্বপ্ন নিয়ে সেটা হলো, আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করেছেন, সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন- বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন অধরা রয়ে গেছে। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারি সেই লক্ষ্যটা নিয়েই কিন্তু দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বারবার আঘাত এসেছে, কিন্তু জানি না আল্লাহ রাব্বুল আলআমিন আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং আমার দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় মানবঢাল রচনা করে আমাকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছেন মানুষের সেবা করার। তাই আজকে একটা মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, যাদের (দেশের মানুষ) জন্য জাতির পিতা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেন, সেই বাঙালী জাতির হাতে তাঁর জীবন দিতে হলো। সবকিছু জেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি দেশে ফিরে আসি। সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি বলেই দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করার একটা মর্যাদায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, সববিছু হারিয়ে সেই বেদনাকে বুকে ধারণ করে কেবল একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখেছি- বাংলাদেশের মানুষ লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত, এই বাংলাদেশের মানুষের জন্যই আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন, নিজের জীবনে তিনি কিছু চাননি। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন আমার মা, যাঁর নিজেরও জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না। পাশে থেকেই তিনি প্রেরণা যুগিয়েছেন, শক্তি জুগিয়ে গেছেন। সাংসারিক কোন কাজে জাতির পিতাকে বিরক্ত করেননি। পর্দার আড়ালে থেকেই তিনি এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন। তার সরকারের অগ্রগতির জন্য পরিকল্পিত নীতি এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়নকে কৃতিত্ব দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, তারা ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করাই এখন মূল লক্ষ্য। ‘২০২০ থেকে ২০২১’ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ এবং ২০২১ সাল আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই সময়ে এই অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। কারণ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যখন আমারা উদযাপন করছি সেই সময় এই যুগান্তকারী অর্জন বাংলাদেশ পায়। বাঙালী জাতির জন্য এটা একটা বিরল সম্মান অর্জন। বিশ্বসভায় বাংলাদেশ এবং বাঙালী জাতির জন্য একটা অনন্য উত্তোরণ। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং এরই আলোকে আমরা যে পরিকল্পনাগুলো পর পর নিয়েছি, সে সময় অনেকে ধারণাই করতে পারেননি বাংলাদেশের এ ধরনের উত্তোরণ ঘটতে পারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। সে সময় অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হলেও আমার বিশ্বাস ছিল তার সরকারের এই পরিকল্পিত প্রচেষ্টার একটা সুফল বাংলাদেশ পাবে। কারণ এই দেশটাকে তিনি চেনেন এবং জানেন যে কারণে সমালোচনায় কান না দিয়ে অভিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেই তার সরকার আশু, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়েছে। ‘মুজিব চিরন্তন’ থিম নিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানমালায় পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণ এবং রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, সৌদি বাদশাহ এবং ব্রুনাই সুলতান থেকে শুরু করে ১৯৪টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সে অনুষ্ঠানে অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন বার্তা এবং ভিডিও বার্তা প্রদানের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যই এ সম্মান আমরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই যে যেটাই বলুক আমি মনেকরি যত সমালোচনাই করুক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং আমরা কাজ করে যাব। তবে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাব, বাংলাদেশের এই গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে। নানারকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে এবং সেগুলো মাথায় নিয়েই আমাদের চলতে হবে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পেয়েছি সেটা বাংলাদেশের জনগণেরই অবদান।’ এবারের অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২৪ এবং ২৫ নবেম্বর বিশেষ আলোচনার সুযোগ প্রদানে স্পীকারকে এবং এই বিশেষ আলোচনার শুরুটা রাষ্ট্রপতির ভাষণের মাধ্যমে হওয়ায় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি উদীয়মান, বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বাজার সৃষ্টির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে এমন একটা বার্তা এখন বিশ্বব্যাপী পাবে। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা সেটা পৌঁছাতে পারব। ব্রিটেনের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিক এ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বিকাশ অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বৈশ্বিক শান্তি সূচক ২০২০ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ ধাপ উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার যা ৪০ ভাগ ছিল আজকে তা ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার উন্নীত হয়েছে। জিডিপি আমরা ৮ ভাগে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সেটা আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ থাকার পরও বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৪৩ ভাগ জিডিপি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ব্বোচ্চ ।
×