ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিজিবি সদস্যসহ নিহত ৮ ভোটে বাধা, জাল ভোট ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের কিছু অঘটন নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি

বিচ্ছিন্ন সহিংসতা ॥ এক হাজার ইউপিতে উৎসবমুখর ভোট

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২৯ নভেম্বর ২০২১

বিচ্ছিন্ন সহিংসতা ॥ এক হাজার ইউপিতে উৎসবমুখর ভোট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাসহ অনেকটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯ পৌরসভার ভোট। তবে কিছু কেন্দ্রে ভোটপ্রদানে বাধা প্রদান, জাল ভোট ও ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংস ঘটনাও ঘটেছে। নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় বিজিবি সদস্য, মুন্সীগঞ্জে ২ জন, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা, নরসিংদীর রায়পুরায় ৩ জন এবং খুলনায় আগের রাতে আহত ১ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল আশানুরূপ। পুরুষের তুলনায় নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। আগের দুই ধাপের মতো তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে তেমন সহিংসতা হয়নি। সকাল ৮টায় ভোট শুরুর আগে থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ ভোট দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যান। দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও বিকেলের দিকে আবার বাড়ে। অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রের আশপাশে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। কেউ ভোট দিতে আসছেন, আবার কেউ ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ দূরে দাঁড়িয়ে নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এই ছিল দিনভর ভোট কেন্দ্রের আশপাশের দৃশ্য। স্থানীয় সরকারের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন হওয়ায় প্রতিটি গ্রামের পাড়া-মহল্লা থেকে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের বিশেষ ব্যবস্থায় কেন্দ্রে এনে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সবাই চান নিজ এলাকায় পছন্দের চেয়ারম্যান-মেম্বার নির্বাচিত করতে। তাই প্রার্থীদের মধ্যে কে কাকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হবেন এ নিয়ে শুরু হয় নানা কৌশল। আর এ কৌশল প্রয়োগ করতে গিয়েই পরস্পরবিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। কে কার চেয়ে বেশি ভোট আদায় করে বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন এ নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। রবিবার ১২৩টি উপজেলার ১ হাজার ইউপি ও ৯ পৌরসভার নির্বাচন চলাকালে সহিংসতা এড়াতে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। আগের দুই ধাপের নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা হওয়ায় এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ২০টি রাজনৈতিক দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেয়। স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৫ হাজার ২২২ জন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪ হাজার ৪০৯ জন। এর মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ হাজার ১০৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন করেন ৩৪ হাজার ৬৩২ জন। এবারের নির্বাচনে ৩৮১ জন বিচারিক হাকিম মাঠে নামানো হয়। বিচারিক হাকিমগণ ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। তারা নির্বাচনী অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধ আমলে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ করছেন। নির্বাচনের আগেই চেয়ারম্যান পদে ১০০ জন, সংরক্ষিত সদস্য ১৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য ৩৩৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর আগে ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর দুই দফায় প্রথম ধাপের ৩৬৯টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১১ নবেম্বর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৮৩৩টি ইউপি নির্বাচন। আর তৃতীয় ধাপে রবিবার ১ হাজার ইউপিতে ভোট হয়। এছাড়া চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ ডিসেম্বর। আর ৫ম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ভোট হবে ৫ জানুয়ারি। নীলফামারী ॥ কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতায় একজন বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। রবিবার ভোটগ্রহণ শেষে রাত সাড়ে নয়টার দিকে গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া ভোট কেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি বিজিবির নায়েক রুবেল হোসেন। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ললিত চন্দ্র রায়। এলাকাবাসী জানান, কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। সে ফল প্রত্যাখ্যান করেন লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মারুফ হোসেন অন্তিকের সমর্থকরা। তারা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের কাজে কর্মরতদের ব্যালটসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে উপজেলা সদরে রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে আসার সময় লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় একজন বিজিবি সদস্য কেন্দ্রের একটি কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশের গাড়ি ও ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায়। আক্রমণ থেকে রক্ষায় কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ এসে নিহত বিজিবি সদস্যের লাশ উদ্ধার করে। মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জ সদরের বাংলাবাজারে ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই মহিলা মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে বিজয়ী প্রার্থীর ভাগ্নে শাকিল মোল্লা (৩০) নিহত হয়েছেন। রবিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল বাংলাজারের কাশিঘাটা গ্রামের হারুন মোল্লার ছেলে। অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের পঞ্চসার ইউপির গোসাইবাগে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আলী সিদ্দিকের (টেলিফোন মার্কা) চাচাতো ভাই রিয়াজউদ্দিন শেখ মারা গেছেন। পরিবারের দাবি প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী গোলাম মোস্তফার সমর্থকদের হামলায় রিয়াজউদ্দিন শেখ নিহত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার সৈবাল বশাক জানান, নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। নরসিংদী ॥ সহিংসতার মধ্য দিয়ে রবিবার নরসিংদী সদর ও রায়পুরা উপজেলার ২২ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছে। দুটি কেন্দ্রে ভোটের সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ আরও অন্তত ১০ জন। রবিবার সন্ধ্যার আগে উত্তর বাখরনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও রাতে রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের দাইরের পার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই দুই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- চান্দেরকান্দি ইউনিয়নে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চালক আরিফ (২৪) ও শরিফ (৩০) এবং উত্তর বাখরনগরে ফরিদ মিয়া (৩০)। রায়পুরা থানার ওসি গণমাধ্যমকে জানান, চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের দাইরের পার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনার পর পরাজিত এক সদস্য প্রার্থীর অর্ধশতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়। ওই সময় নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সরকারী মালামাল ও ব্যালট বাক্স রক্ষায় ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। ওসি বলেন, এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও এলোপাতাড়ি গুলিতে পুলিশের রিকুইজিশন করা অটোরিক্সার ড্রাইভার আরিফ নিহত হন। ওই সময় গ্রামবাসীর হামলায় পুলিশ সদস্য শহিনুর ইসলাম ও আনসার সদস্যসহ আরও অন্তত ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ শরিফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিকে উপজেলার উত্তর বাখরনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহিংসতায় মাথায় গুলিবিদ্ধ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সন্ধ্যায় মারা যান ফরিদ মিয়া। লক্ষ্মীপুর ॥ রামগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় সাজ্জাদুর রহমান সজীব নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। রবিবার বিকেল ৫টার দিকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে বিকেলে রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সজীব। নিহত সজীব রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। খুলনা ॥ এখানে সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছেন। মৃত ব্যক্তি তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি গ্রামের বাবুল শিকদার (৪০)। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে ঢাকায় নেয়ার সময় তিনি মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জহুরুল আলম জানান, ঘটনার পরই অভিযান চালিয়ে হামলা ও হত্যায় জড়িত থাকা সন্দেহে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিহত বাবুল ওই ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি গ্রামের সিরাজ শিকদারের ছেলে। সোনারগাঁয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, ১০ জনকে কুপিয়ে জখম ॥ সোনারগাঁ, না’গঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দুইজন মেম্বার প্রার্থী পরাজিত হয়ে বারদী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জহিরুল হকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালিয়ে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা বাড়িতে থাকা চেয়ারম্যানে ভাই তাইজুল, তানজিল, শাকিল, আমেনা, রাবেয়া, বিলকিছসহ ১০ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেন। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। রবিবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় চেয়ারম্যান বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সুন্দরগঞ্জে ১টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই, ১২ রাউন্ড গুলি ॥ গাইবান্ধা থেকে সংবাদদাতা জানান, সুন্দরগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের ভোট সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শুরু হলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বৌলজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুপুর ১২টায় ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়। ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মোঃ মহসিন আলীর সমর্থকরা ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ১২ রাউন্ড গুলি চালায়। এ কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। সরাইলে জাল ভোটারকে ৬ মাসের সাজা ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ইউপি নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার সময় আটক ১ জনকে ৬ মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন (২৭) টিঘর গ্রামের হিরা মিয়ার ছেলে। নেত্রকোনায় ব্যালট ছিনতাই ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, জেলার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বামনগাঁও মিশনারী স্কুল (প্রাইমারী) কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় বেলা ১টার সময় ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে নৌকা সমর্থিত দুজন কর্মী আহত ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় লাঙ্গল সমর্থিত কর্মীর ছুরিকাঘাতে নৌকা সমর্থিত দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মেহেদী হাসান রুবেল (২৫) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে ইউনিয়নের দলুয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ওই এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে সাগর ইসলাম (১৯) এবং মন্তাজ আলীর ছেলে লায়ন হোসেন (২২)। আটক মেহেদী হাসান রুবেল একই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকার ফারাজুল ইসলামের ছেলে। বরিশালে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করায় আটক ৯ ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রবিবার দুপুরে আচরণবিধি ভঙ্গ করার অযোগে জেলার মুলাদী ও বাবুগঞ্জে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। শেরপুরে পৌর মেয়রের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, শেরপুরের নকলা উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ও আজকের পত্রিকা প্রতিনিধি তরুণ সাংবাদিক জুবাইদুল ইসলাম। রবিবার দুপুরে উপজেলার গৌরদ্বার ইউনিয়নের পাইস্কা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের পাশের রাস্তায় ওই হামলার ঘটনা ঘটান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন ও তার সহযোগীরা। পরে ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং পৌর মেয়র লিটনের শাস্তির দাবিতে সাংবাদিকরা ওই কেন্দ্রের পাশে ঢাকা-শেরপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। কুমিল্লায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশকে কুপিয়ে জখম ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লায় ভোটগ্রহণ চলাকালে কয়েকটি কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং অফিসারসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। জেলার হোমনা, দাউদকান্দি ও বরুড়া উপজেলায় ৩০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া জেলার দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নের জিংলাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়াজীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সহিংসতার কারণে বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের ঢেউয়াতলী, চিতড্ডা ইউনিয়নের ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোশবাশ উত্তর ইউনিয়নের আদমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, ঢেউয়াতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালে বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করলে প্রিসাইডিং অফিসার গোলাম সারোয়ার ভূঁইয়া ও এসআই আবু হানিফ বাধা দেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা প্রিসাইডিং অফিসারকে ছুরিকাঘাত ও পুলিশ কর্মকর্তার কোমরে রাম দা দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তার পিস্তলটি সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নেয়ার পর কেন্দ্রের পাশে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার করা হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে কক্সবাজারে নির্বাচন ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, কক্সবাজার পৌরসভার একটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচনসহ চকরিয়া ও পেকুয়ায় ১৬টি ইউপি নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে ছিল জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। চকরিয়ায় ১০ ইউপি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানো চেষ্টার অপরাধে ২১ জনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সকালে কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনের দুই কেন্দ্রে পুলিশের উপ-পরিদর্শকের বডিতে ক্যামেরা সেট করা অবস্থায় ডিউটি পালন করতে দেখা যায়। ছোট আকৃতির এই ক্যামেরা দায়িত্বরত দুজন পুলিশ সদস্যের অন্য কম্পলসারি এ্যাক্সেসরিজের মতো ইউনিফর্মের সঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। ডিউটি শুরুর আগেই নিজেদের পোশাকে বিশেষায়িত ক্যামেরা স্থাপন করেন পুলিশ সদস্যরা।
×