স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিন দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে দলের কেন্দ্রীয় মধ্যম সারির নেতাদের মতামত নিয়েছে বিএনপি। বুধবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেছে দলীয় হাইকমান্ড। এতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেশ ক’জন নেতা অবিলম্বে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নির্বাহী কমিটিসহ সর্বস্তরে কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানান। এ ছাড়া তারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে রাজপথে আন্দোলন না করতে পারার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করেন।
বৈঠকসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বৈঠকের শুরুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির কি করা উচিত, নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে হলে কি করা উচিত এবং নেতাকর্মীদের মামলা-হামলা থেকে রক্ষা ও সর্বস্তরে দলকে শক্তিশালী করতে হলে কি করা প্রয়োজন সেসব বিষয়ে নির্বাহী কমিটির নেতাদের মতামত দিতে বলেন। পরে এক এক করে বেশ ক’জন নেতা তাদের মতামত তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে বেশ ক’জন নেতা অবিলম্বে দলের জাতীয় কাউন্সিল করে নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠনসহ সর্বস্তরে কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানান। এ ছাড়া তারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে রাজপথে আন্দোলন না করতে পারার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করেন।
একেকজন ফ্লোর নিয়ে লম্বা সময় বক্তব্য রাখেন। এ সময় বেশ ক’জন অভিমত প্রকাশ করেন, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার বা নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গিয়ে কোন লাভ হবে না। তাই নির্বাচনের আগেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দাবিতে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যারা আন্দোলনের জন্য রাজপথে নামতে পারবে না, তাদের দলের কমিটিতে থাকার প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া যারা দল ক্ষমতায় থাকতে বিত্তশালী হয়েছেন, তারা এখন বড় বড় পদ নিয়ে বসে আছেন। আন্দোলন শুরু হলে তাদের মাঠে পাওয়া যাবে না। তারা থাকবেন ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। তাই এসব নেতাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটিসহ সকল স্তরের কমিটির সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা করে পরবর্তী কমিটি করার সময় এই তালিকা অনুসরণ করার কথা জানান কোন কোন নেতা। বেশ ক’জন নেতাই বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে হলে আগে আন্দোলনে বিজয় অর্জন করতে হবে। আন্দোলনে সরকারকে চাপে ফেলতে না পারলে এ সরকার আগের মতোই নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাবে। তাই আন্দোলন করে রাজপথে শক্তি সঞ্চয় করে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। এ ছাড়া আন্দোলন করেই দলের নেতাকর্মীদের মামলা-নির্যাতন থেকে মুক্ত করতে হবে।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া মঞ্চে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এ ছাড়া বৈঠকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের এপিএস এবিএম আবদুস সাত্তার, গুলশান কার্যালয়ের দাফতরিক কাজে নিয়োজিত রিয়াজ উদ্দিন নসু এবং প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার। দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির ৯৫ জন নেতা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: