ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

চক্রের হোতাসহ গ্রেফতার ৪

ওরা ভয়ঙ্কর প্রতারক, ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকার মালিক

প্রকাশিত: ২২:১৯, ৬ আগস্ট ২০২১

ওরা ভয়ঙ্কর প্রতারক, ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকার মালিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওরা ভয়ঙ্কর প্রতারক। কখনও সচিব ও সচিবের পিএস সেজে প্রতারণা করত একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এদের একজন আইটি সচিব পরিচয় দিত। অন্যরা পরিচয় দিত সংসদ সচিবালয়ে আইটি সচিবের পিএ ও জমির দালাল বলে। এভাবে তারা জমি বেচা-কেনার ফাঁদ পেতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। এভাবে শতাধিক প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। এ রকমই সংঘবদ্ধ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, প্রতারক চক্রের হোতা মোঃ ইদ্রিস খান (৫৮), মোঃ শাহাবুদ্দিন হাওলাদার(৪৩), মোঃ শহিদুল ইসলাম(৫৬) ও জাহিদ শিকদার (৩০)। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম এসব তথ্য জানান। ভয়ঙ্কর এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ আশরাফ হোসেনের নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোঃ তরিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের লিডার মোঃ শামসুল ইসলামের নেতৃত্বে বুধবার গভীররাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিবি যুগ্ম-কমিশনার জানান, চক্রটির বিরুদ্ধে প্রতারণার ঘটনায় ভুক্তভোগী আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি কদমতলী থানায় মামলা করেন। আসামিদের প্রতারণার কৌশল অত্যন্ত অভিনব। সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর সঙ্গে চক্রটি প্রতারণা করে আসছিল। সাধারণত এই চক্রটিকে বলা হয়, রয়েল চিট এজেন্সি বা আরসিটি। চক্রের প্রধান ইদ্রিসের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। অন্য দুইজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি জানান, প্রতারকরা প্রথমে জমি বেচা-কেনার জন্য টার্গেট ব্যক্তির কাছে গিয়ে বলতেন, সচিব স্যার জমি কিনতে চান। উনার কাছে টাকা কোস বিষয় না। সচিব স্যার তো এতকিছু জানেন না, এক কোটি টাকার জমি। আপনি ২০ লাখ টাকার বায়না করেন। এই পুরো টাকাটা আপনি লাভ করতে পারবেন। তাদের ফাঁদে পা দিলেই তারা এসব টাকা হাতিয়ে নিত। ডিবি’র যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম জানান, তারা নানাভাবে প্রতারণার কৌশল তৈরি করে। এমনভাবে কৌশল তৈরি করে যাতে লোভে পড়ে মানুষ তাদের টাকা দিয়ে দেয়। এই রকম শতাধিক প্রতারণার ঘটনায় তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তাদের প্রতারণার কৌশলটা জমি বেচা-কেনা, রবি টাওয়ার নির্মাণ। তিনি জানান, অনেক মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারা পুলিশের কাছে আসছেন না। সংবাদ সম্মেলনের মূল কারণ হচ্ছে আসামিদের চিনে রাখলে ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা শিকার হবেন না সাধারণ মানুষ। গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, মাদারীপুরের কালকিনি থানার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারকৃত শাহাবুদ্দিনের আপন বড় ভাই সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ তাকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে। তিনি এই প্রতারক চক্রটিকে চালায়। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার একাধিক থানায় মামলা রয়েছে।
×