ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর সব ট্রাফিক পয়েন্ট ও চেকপোস্টে দেয়া হবে

চালু হচ্ছে পুলিশের ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’

প্রকাশিত: ২২:০৯, ১ আগস্ট ২০২১

চালু হচ্ছে পুলিশের ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’

শংকর কুমার দে ॥ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে প্রযুুক্তি সম্পন্ন আধুনিক ও স্মার্ট পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে নানা ধরনের পরিকল্পনা করছে সরকার। এই পরিকল্পনার আওতায় সারাদেশে চালু হচ্ছে পুলিশের ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ ব্যবস্থা। দেশের অপরাধ দমনে এই ব্যবস্থার আওতায় পুলিশের পোশাকে থাকছে লাইভ ক্যামেরা। যে কোন অপারেশন, চেকপোস্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ডিউটিতে থাকার সময়ে পুলিশ সদস্যদের পোশাকের সঙ্গে থাকা লাইভ ক্যামেরা কাজ করে গোপনে। যা অপরাধীরা বা সাধারণ জনগণ আঁচ করতে পারবে না। পুলিশের বডি ওর্ন ক্যামেরা কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ সদর দফতরে স্থাপন করা মনিটরিং সেল। অপারেশন বা ডিউটিরত অবস্থায় ওয়্যারলেসের মাধ্যমে যে কোন সময়, সেই ক্যামেরায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারবে পুলিশ সদর দফতর। সেখান থেকে মনিটরিং করাসহ যে কোন বিষয়ে ক্যামেরায় এ্যাক্সেস নেয়া যাবে সহজেই। দেশের বহুমাত্রিক অপরাধ দমনে পুলিশ বাহিনীতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগানোর উদ্দেশেই এ ব্যাপারে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঢাকার রাস্তায় বডি ওর্ন ক্যামেরা চালু করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ক্যামেরাটি দায়িত্বরত পুলিশের বুকে কিংবা কপালে লাগানো থাকে। ১৫টি ক্যামেরা দিয়ে যাত্রা শুরু করে তখন ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের চারটি জোনে ১০০টি ক্যামেরা চালু করা হয়। চীনে তৈরি জিও-পিআরও মডেলের প্রতিটি ক্যামেরার দাম ২০ হাজার টাকা। এই হিসেবে ১০০ ক্যামেরার দাম ২০ লাখ টাকা। এছাড়া এসব ক্যামেরা সচল রাখতে আনুষঙ্গিক আরও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে পর্যায়ক্রমে। রক্ষণাবেক্ষণ ও টানা লাইভ রেকর্ডের জন্যও এটি ব্যয়বহুল। সম্পূর্ণ এইচডি ফরম্যাটে ১৬ মেগাপিক্সেলের এ ক্যামেরায় একটানা ৮ ঘণ্টা দৃশ্য ও শব্দ ধারণ করা যায়। ঝড়-বৃষ্টিতেও এগুলো সচল থাকে। রাতের অন্ধকারে ভিডিও না হলেও রেকর্ড করা যায়। ইচ্ছে করলেই কেউ সেটি মুছে ফেলতে পারবে না। প্রয়োজন হলে এই ক্যামেরা দিয়ে পুলিশের উর্ধতন র্কমর্কতারা মাঠের চিত্র কন্ট্রোল রুমে বসেই সরাসরি মনিটরিং করতে পারেন। তবে সেটি আরও ব্যয়বহুল। আবার মেমোরিকার্ড থেকে ডাউনলোড করে ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করতে পারেন। তবে এতসব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এসব ক্যামেরা রাস্তার কোন অস্বাভাবিক ঘটনা ধরতে পারেনি। আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে ২০১৪ সালে পুলিশের বডি ওর্ন ক্যামেরা প্রকল্পের কাজ হাতে নেন তখনকার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও বর্তমানে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সিলেট, সিলেটের মৌলভীবাজারের মতো এলাকায় চালু হয় পুলিশের বডি ওর্ন ক্যামেরা প্রকল্প। তবে এই প্রকল্প গত সাত বছরে সব জায়গায় পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করেনি। চট্টগ্রাম মহানগরী পুলিশের (সিএমপি) ৪ থানায় পুলিশের ‘বডি ওর্ন’ ক্যামেরা চালু করার পর আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম নগর পুলিশের থানা পর্যায়ের সদস্যরা শরীরে বহনযোগ্য বা ‘বডি ওর্ন’ ক্যামেরার ব্যবহার শুরু করেছেন বলে সিএমপি পুলিশের দাবি।
×