ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সিপিএসডি রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান

করোনা সত্তে¡ও দেশ ইতিবাচক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ২৪ জুন ২০২১

করোনা সত্তে¡ও দেশ ইতিবাচক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারির প্রতিক‚ল প্রভাব সত্তে¡ও বাংলাদেশ গতবছর ইতিবাচক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ যে মন্দার কবলে পড়েনি। আমরা কোভিড-১৯ অতিমারির সমস্ত চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেখে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। তিনি বলেন, সিপিএসডি রিপোর্টের বিভিন্ন সুপারিশ ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথে যেতে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বুধবার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও বিশ্বব্যাংক প্রণীত বাংলাদেশ কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়গনস্টিক (সিপিএসডি) নামের ভার্চুয়ালি রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও বিশ্বব্যাংক প্রণীত বাংলাদেশ কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়গনস্টিক (সিপিএসডি) নামের এ রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরবর্তী দশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার আকাক্সক্ষা পূরণে বাংলাদেশের এখন গতি পরিবর্তনের সময়। আর এজন্য একটি আধুনিক, বৈচিত্রধর্মী ও প্রাণবন্ত বেসরকারী খাত গড়ে তুলতে বিভিন্ন আইন-কানুন ও নীতির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। আইএফসির এশিয়া ও প্যাসিফিক ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফনসো গার্সিয়া মোরা বলেন, অতিমারি বাংলাদেশের ওপর কঠিন আঘাত হেনেছে এবং দেশটি কোভিড-১৯ থেকে উত্তরণের পর্যায়ে থাকায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা আরও দৃঢ়ভাবে দেখা দিয়েছে। মজবুত আর্থিক খাতের সহায়তায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ৭০ শতাংশের বেশি বেসরকারী খাতের এবং এখন অর্থনীতির পুনরুদ্ধার তরান্বিত করতে এ খাতের জোরালো ভ‚মিকা রাখা দরকার, যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রফতানি বাড়ানোর পাশাপাশি গুণগতমানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, রফতানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৈরি পোশাকখাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। আরও প্রাণবন্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের রফতানি পণ্যে বৈচিত্র আনতে হবে এবং একটি বলিষ্ঠ ও অত্যাধুনিক বেসরকারী খাত গড়ে তুলতে হবে, যা করোনা পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ের জন্য প্রাসঙ্গিক, যেখানে সরকারের বেশিরভাগ সম্পদের প্রয়োজন হবে সামাজিক খাতের জন্য। বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালে নিযুক্ত আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি ওয়ার্নার বলেন, এটা সুস্পষ্ট যে, গুনগত স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণে এবং স্বাস্থ্য পরিসেবার দক্ষতা বাড়াতে বেসরকারী খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। কেননা একই পর্যায়ের উন্নয়নে থাকা অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন নিম্নমাত্রার। তিনি বলেন, এর বাইরে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যের তৈরি পোশাকের বাজারে মনোযোগ দিতে পারে ও নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তন করতে পারে এবং পাদুকা, চামড়া, ইলেকট্রিক সামগ্রী এবং কৃষিবাণিজ্য রফতানির সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। অনুষ্ঠানে রিপোর্টের বিষয়বস্তু নিয়ে একটি পর্বে ওয়েন্ডি ওয়ার্নারের সঞ্চালনায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আইএফসি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিবিদ ও রিপোর্টের সহ-রচয়িতা ইউলিয়া মিরোনোভা। আরেক পর্বে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, প্রাণ গ্রæপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী এবং প্রাইস ওয়াটার হাউসকুপারস বাংলাদশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ। এ পর্ব সঞ্চালনা করেন আইএফসি বাংলাদেশের সিনিয়র কান্ট্রি অফিসার নুজহাত আনোয়ার। রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে আলাদা পর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি ওয়ার্নার। মিডিয়া ব্রিফিং সঞ্চালনা করেন আইএফসি বাংলাদেশের যোগাযোগ কর্মকর্তা আহসান জেড. খান।
×