ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ধারণ হবে একাত্তরের বিবরণ

প্রকাশিত: ০১:১২, ২১ জুন ২০২১

মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ধারণ হবে একাত্তরের বিবরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের ঘটনাপ্রবাহ সংরক্ষণের জন্য জীবিত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য রেকর্ড করতে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই জুলাই-আগস্ট থেকে শুরু হবে, আমাদের সমস্ত জীবিত মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য রেকর্ড করা হবে। ৫ থেকে ১০ মিনিট করে এই রেকর্ড হবে। আমি কিভাবে যুদ্ধ করলাম, নয় মাস কিভাবে কী করলাম সেই বিষয় রেকর্ড করে রাখা হবে। কেয়ামত পর্যন্ত যাতে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা থাকে, সেজন্য এই রেকর্ড ধারণ করে আর্কাইভে রাখা হবে। সেজন্য ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে, এই প্রকল্প পাসও হয়েছে।’ বীর মুক্তিযোদ্ধারা মারা যাওয়ার পর তাদের সমাধি চিহ্নিত করে রাখতেও একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা কবর দেখলে যেন এক শ’ বছর, পঞ্চাশ বছর পর বলতে পারে যে, এটা মুক্তিযোদ্ধার কবর। অন্য ধর্মের যারা, তাদের জন্য সেইভাবে ব্যবস্থা করেছি। যত বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন, তাদের কবর একই ডিজাইনে নির্মাণ করব। গত বছর থেকে তা নির্মাণ শুরু হয়েছে, এবার আরও বড় পরিসরে কাজ হবে।’ পাশাপাশি দেশের যত জায়গায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়েছে, সেসব জায়গায় একই নক্সার স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তাছাড়া একই নক্সায় দেশের সকল বধ্যভূমি সংরক্ষণ করার কাজও চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। দেশের ৬৪ জেলায় ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। সর্বশেষ রবিবার ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ব্যয়ের জন্য অনুদান ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, দেশের ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে ২৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে অগ্রিম দিয়েছি, যাতে মুক্তিযোদ্ধারা বিনা পয়সায় ওষুধসহ চিকিৎসা পান, সবকিছু সরকারীভাবে দেয়া হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতিটি উপজেলায় যে পরিমাণ বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে, তা দ্বিগুণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তাদের জন্য এসব বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা যারা সচ্ছল, আমরা এটার দাবি করব না।’ সরকার ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ধাপে ধাপে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করছে। ইতোমধ্যে আরও ১৮ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান মোজাম্মেল হক। ঢাকার জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাহাজান খান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদারসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
×