ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বাড়ছে সাড়ে চার লাখ

প্রকাশিত: ২১:০৫, ১১ জুন ২০২১

চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বাড়ছে সাড়ে চার লাখ

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বাড়ছে আমদানি-রফতানি, বড় হচ্ছে দেশের অর্থনীতির আকার। চাপ সামাল দিতে সম্প্রসারণ ঘটছে চট্টগ্রাম বন্দরের। ১৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের (পিসিটি) নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে এ বছরেই। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নতুন জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর টার্গেট কর্তৃপক্ষের। আর টার্মিনালটি পুরোদমে অপারেশনে গেলে কন্টেনার হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বাড়বে আরও প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টিইইউএস। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু করার পাশাপাশি এগিয়ে চলেছে বিদেশী অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া। চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশকটি দেশের প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে টার্মিনাল পরিচালনায় আগ্রহ দেখিয়েছে। বিদেশী অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত পিসিটি জেটিতে গিয়ার্ড ভ্যাসেল (ক্রেনযুক্ত জাহাজ) ভিড়িয়ে কার্যক্রম চালানো হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের পিসিটি চালু হলে সেটি হবে তের বছর পর নতুন একটি বড় সংযোজন। এর আগে ২০০৭ সালে পাঁচ জেটি নিয়ে চালু হয়েছিল নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল। এরপর আমদানি রফতানি বাড়লেও একযুগেরও বেশি সময় ধরে জেটিসংখ্যা আর বাড়েনি। ফলে বিদ্যমান সুবিধায় সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোঃ জাফর আলম বলেন, পিসিটি পরিচালনা বিদেশী অপারেটর দিয়েই করা হবে, এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তবে আমরা এর জন্য বসে থাকব না। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ক্রেনযুক্ত জাহাজ ভিড়িয়ে কার্যক্রম শুরু করে দেয়া হবে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত হয়ে এ টার্মিনাল পুরোপুরি অপারেশনে গেলে বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান সরকার জানান, পিসিটির কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। এ বছরের মধ্যে অবশ্যই শেষ হয়ে যাবে। বাকি থাকবে শুধু অপারেটর নিয়োগ। তবে এর আগে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু করে দেয়ার সরকারী সিদ্ধান্ত থাকায় টার্মিনালটি এ বছরেই অপারেশনে যাচ্ছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত। তিনি জানান, পিসিটির জন্য প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে যন্ত্রপাতি ক্রয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু বিদেশী অপারেটর দিয়ে পরিচালনার সিদ্ধান্ত হওয়ায় এ যন্ত্রপাতি তারাই কিনবে। ফলে প্রকল্প ব্যয় ৪২০ টাকা কমিয়ে এখন ১৪৪৮ কোটি টাকা। পিসিটি নির্মিত হয়েছে চিটাগং ড্রাইডক থেকে বোটক্লাবের মধ্যবর্তী স্থানে ১২০০ মিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে। এতে মোট জেটি থাকবে চারটি। এরমধ্যে তিনটি কন্টেনার জেটি এবং বাকি একটি তেল খালাসের জন্য ডলফিন জেটি। ১৬ একর জায়গায় থাকছে ইয়ার্ড। সরাসরি পিসিটি পর্যন্ত রেললাইন থাকায় মূল টার্মিনালে কন্টেনার জট হবে না। টার্মিনালটির বার্ষিক কন্টেনার হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৪ লাখ ৪৫ হাজার টিইইউএস। মূল জেটি থেকে কন্টেনার পরিবহনের জন্য পৃথক রেললাইন থাকছে। পিসিটির আরেকটি সুবিধা হল এর অবস্থান কর্ণফুলীর মোহনার কাছাকাছি। ফলে সেখানে বিদ্যমান বন্দর থেকে ড্রাফট বেশি পাওয়া যাবে। ফলে জাহাজগুলো আরও সহজে ভিড়তে পারবে।
×