ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

১৮ লাখের বেশি অনুমোদনহীন যানের নিয়ন্ত্রণ জরুরী রাজনৈতিক প্রভাবে চলছে নিষিদ্ধ যান ইজিবাইক-থ্রি হুইলার জাতীয় অটোরিক্সা রেজিস্ট্রেশন সঙ্কট বাড়াবে

কবে হবে নিরাপদ? ॥ নিয়ন্ত্রণের বাইরে সড়ক মহাসড়ক

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

কবে হবে নিরাপদ? ॥ নিয়ন্ত্রণের বাইরে সড়ক মহাসড়ক

রাজন ভট্টাচার্য ॥ গত ২৪ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল সদরের রেন্ট্রিতলা এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দ্রুতগতির কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়ে মুচড়ে উল্টে যায় তিন চাকার যান (মাহিন্দ্র)। রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে আহত হন এর চার আরোহীর সবাই। এর মধ্যে এক নারীর ওপরে গিয়ে পড়ে যানটি। সড়কে ছিটকে পড়ে থাকা মানুষ আর উল্টে থাকা গাড়ির ভয়াবহ দৃশ্য দেখে সবার চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। এ দুর্ঘটনাটি আবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাল দেশের সড়ক মহাসড়ক এখনও কতটা অনিরাপদ। মাহিন্দ্র নামের এই যানটি মহাসড়কে চলাচল অনেক আগে থেকেই নিষিদ্ধ। তবুও চলছে দেদার। দেখার যেন একেবারেই কেউ নেই। সারাদেশের সড়ক মহাসড়কের চিত্র ঠিক একই রকমের। এর মধ্যে ইজিবাইক-থ্রি-হুইলার জাতীয় অটোরিক্সা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার সরকারী সিদ্ধান্ত সড়ক-মহাসড়কে সঙ্কট আরও বাড়াবে বলে অভিমত ব্যক্ত করছেন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক নিরাপত্তা বিধানে সরকার জনস্বার্থে ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিক্সা, অটো, টেম্পো এবং সব শ্রেণীর অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে নিষিদ্ধ করেছে। এরপর পেরিয়ে গেছে সাড়ে পাঁচ বছর। মহাসড়কে তিন চাকাসহ স্বল্প গতির যানবাহন চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতেরও রয়েছে কঠোর নির্দেশনা। অথচ কিছুই মানা হচ্ছে না। ফলে যা ঘটনার তাই ঘটছে। করোনা মহামারীর মধ্যে গত বছর প্রায় দুই মাস সড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও দুর্ঘটনা কমার কোন তথ্য মিলেনি। বেসরকারী বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে গত বছরে সড়কে প্রাণ গেছে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষের। প্রশ্ন হলো সড়ক নিরাপত্তার স্বার্থে মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল কবে বন্ধ হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বহুবার বলেছেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে সকল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ম্লান হবে। তার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সড়ককে নিরাপদ করা। এজন্য প্রয়োজনীয় সব রকমের প্রচেষ্টা তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞসহ পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাই বলছেন, দেশের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কেই চলছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সব ধরনের যানবাহন। সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হিসেবে এ বিষয়টিকে দেখছেন অনেকে। তারা বলছেন, এসব যানবাহন বন্ধে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে শুরু করে পুলিশের আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাছাড়া অনেক এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সরাসরি সমর্থনে এসব যানবাহন চলাচল করে। মন্ত্রণালয় বলছে, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও দুর্ঘটনা কমাতে দেশের সবকটি মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে চার লেনে রূপান্তর করা হবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সড়কের চিত্র পাল্টে যাবে। সরবে বন্ধ হয়ে নীরবে আবার নিষিদ্ধ পরিবহন চালু হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। স্বল্পগতির এসব পরিবহনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা আরও বাড়বে এমন আশঙ্কা তাদের। ব্যাপক প্রচার চালিয়ে ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার। এসব যানের মালিক-শ্রমিকদের প্রতিবাদে মহাসড়কে নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টি হয়। এমন বাস্তবতায় সিদ্ধান্ত বান্তবায়নে কিছুটা পিছু হটে সরকার। সম্প্রতি থ্রি হুইলার আর ইজিবাইক বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে সড়কে আরও বেশি অরাজকতা বাড়ার আশঙ্কা পরিবহন সংশ্লিষ্টদের। সড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ করার পর সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, অটোরিক্সা, টেম্পোসহ কম গতির তিন চাকার যানবাহনকে মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে গত ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। এতে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। দেশে আড়াই লাখ কিলোমিটার জাতীয়, আঞ্চলিক, জেলা ও গ্রামীণ সড়ক রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সড়ক-মহাসড়কের পরিমাণ ২১ হাজার কিলোমিটার। আর জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের আড়াই লাখ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২১ হাজার ৩০২ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের অধীন। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে তিন চাকা নিষিদ্ধ। অন্যত্র চলতে বাধা নেই। ভবিষ্যতে মহাসড়কে ধীরগতির গাড়ির জন্য পৃথক লেন হবে। কিন্তু মহাসড়কে আর তিন চাকা ফিরবে না। হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি নিষিদ্ধ পরিবহন মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করার জন্য। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরী বলেও মত দেন তিনি। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অন্তত ২০টি পয়েন্টে এসব পরিবহন চলতে দেখা গেছে। আছে প্রায় শতাধিক টার্মিনাল। টঙ্গীসহ খোদ জয়দেবপুর চৌরাস্তায় এসব পরিবহনের দেখা মিলবে শত ছাড়িয়ে হাজারে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জনকণ্ঠকে বলেন, নিষিদ্ধ হলেও দেশের বিভিন্ন হাইওয়েতে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চলছে অথচ সরকার বলছে, এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি সিলেটে গিয়ে এ দৃশ্য দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সড়ক বিভাগ এ ব্যাপারে কিছু বলছে না। সবাই দেখেও না দেখার ভান করলে যাত্রীসহ পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দুর্ভোগ কোনদিনই লাঘব হবে না। তিনি জানান, গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব মহাসড়কে অটোরিক্সাসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করছে। বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি রুস্তম আলী জনকণ্ঠকে বলেন, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়াসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুট ও চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিষিদ্ধ পরিবহন নিয়মিত চলাচল করছে। এছাড়া এসব মহাসড়কে একটু পর পর বাজারসহ স’ মিলের শেষ নেই। রাস্তার ওপর রাখা হচ্ছে কাঠ। অবৈধ টার্মিনাল তো আছেই। এসব সমস্যা দূর করতে দ্রুত সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি। ২২ মহাসড়কেই চলছে নিষিদ্ধ পরিবহন ॥ দেশের প্রধান ২২টি জাতীয় মহাসড়কে সিএনজিচালিত তিন চাকার যানবাহন, অটোরিক্সা, অটোটেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। যেসব মহাসড়কে অটোরিক্সা ও অযান্ত্রিক যানবাহন নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়েছে সেগুলো হলোÑ এন-১ : কাঁচপুর সেতু থেকে মদনপুর-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম-রামু (কক্সবাজার), এন ২ : কাঁচপুর সেতু-ঢাকা ভেলানগর (নরসিংদী)-ভৈরব-সরাইল-মাধবপুর-মিরপুর-শেরপুর-সিলেট বাইপাস, এন ৩ : জয়দেবপুর চৌরাস্তা-ময়মনসিংহ বাইপাস পয়েন্ট, এন ৪ : জয়দেবপুর চৌরাস্তা-টাঙ্গাইল-জামালপুর, এন ৫ : আমিনবাজার সেতু ঢাকা-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া ঘাট-খয়েরচর ঘাট-কাশিনাথপুর-হাটিকুমরুল-বগুড়া বাইপাস-রংপুর বাইপাস-সৈয়দপুর বাইপাস-দশমাইল (দিনাজপুর)-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা, এন ৬ : কাশিনাথপুর (পাবনা)-পাবনা বাইপাস-দাশুরিয়া-নাটোর বাইপাস-রাজশাহী বাইপাস-নবাবগঞ্জ-সোনা মসজিদ-বালিয়াদিঘী স্থলবন্দর, এন ৭ : দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (রাজবাড়ী মোড়)-মাগুরা-ঝিনাইদহ বাইপাস-যশোর বাইপাস-খুলনা সিটি বাইপাস-মংলা, এন ৮ : তেগোরিয়া মোড় (ঢাকা)-মাওয়া-কাওরাকান্দি-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী। এছাড়াও এন ১০২ : ময়নামতি (কুমিল্লা)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাইপাস-সরাইল, এন ১০৫ : মদনপুর-ভুলতা-মীরের বাজার-বোগড়া-কড্ডা (ঢাকা বাইপাস), এন ৪০৫ : এলেঙ্গা-নলকা-হাটিকুমরুল, এন ৫০২ : বগুড়া-নাটোর, এন ৫০৬ : রংপুর-বড়বাড়ি-কুড়িগ্রাম, এন ৫০৭ : হাটিকুমরুল-বনপাড়া, এন ৫০৯ : বড়বাড়ি-লালমনিরহাট-বুড়িমারী, এন ৫৪০ : নবীনগর-ইপিজেড-চন্দ্রা, এন ৭০২ : যশোর-মাগুরা, এন ৭০৪ : ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-দাশোরিয়া, এন ৭০৬ : চাষাড়া মোড় (যশোর)-বেনাপোল, এন ৮০৪ ও ৮০৮ : ভাঙ্গা-ফরিদপুর বাইপাস-রাজবাড়ী মোড়, এন ৮০৫ : ভাঙ্গা-ভাটিয়াপাড়া-মোল্লার হাট-ফকির হাট-নোয়াপাড়া, এন ৮০৬ : ভাটিয়াপাড়া-কালনা লোহাগড়া-নড়াইল-যশোর। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, উন্নত দেশগুলোর মহাসড়কে অযান্ত্রিক কিংবা স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলের কোন ব্যবস্থা নেই। আমাদের দেশে অপরিকল্পিতভাবে সড়কগুলো নির্মাণ হয়েছে। অযান্ত্রিক বা স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলের বিষয়টি মাথায় না রেখেই সড়ক হয়েছে। অথচ পৃথক লেন করে দিলেই সমস্যার সমাধান হতো। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে মহাসড়কের সঙ্গে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচলে পৃথক লেন করার পরামর্শ দেন। বিআরটিএ পরিচালক (অপারেশন) শীতাংশু শেখর বিশ^াস বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিআরটিএ কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সব পক্ষের আন্তরিক ভূমিকা জরুরী। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, এই টার্মিনাল থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৪০টি রুটে বাস চলাচল করে। সকল রুটেই অটোরিক্সাসহ অনুমোদনহীন যানবাহন চলছেই। ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ-পাবনা-রাজশাহী-বগুড়া-ময়মনসিংহ-সিলেট-কুমিল্লাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব মহাসড়কে এসব যানবাহন নিয়মিত যাতায়াত করছে। আমরা সরকারকে বারবার এ বিষয়টি বলে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এসব পরিবহন চলাচলের কারণে আন্তঃজেলা রুটের পরিবহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারে না। মহাসড়কে চলছে ১৮ লাখ অনুমোদনহীন পরিবহন ॥ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৮ লাখ নসিমন, করিমন, ভটভটি বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। যার একটিও সরকারীভাবে অনুমোদিত নয়। ৩ লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক মহাসড়কে চলতে দিয়ে কোন অবস্থাতেই নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের দেশে প্রতি ১০ হাজার যানবাহনের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৬টি যানবাহন প্রতিবছর মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়ছে। এই পরিসংখ্যানে নিহতের সংখ্যা এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১৬৯ জন। দুর্ঘটনার কারণে দেশের ২ শতাংশ জিডিপি ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ট্যাঙ্ক লরি মালিক সমিতির নেতা রেজাউল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে অটোরিক্সার স্ট্যান্ড রয়েছে। সুযোগ বুঝে অনেক সময় অটোরিক্সাসহ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও অন্যান্য পরিবহন মহাসড়কে আসে। সোনারগাঁও পয়েন্টে অবৈধ পার্কিং, ছোট ছোট বিভিন্ন গাড়ির সারিবদ্ধ লাইন তো আছেই। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধসহ নিরাপদ মহাসড়ক গড়তে তিন চাকার পরিবহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ছিল। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-কুমিল্লা-টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ-নরসিংদীসহ বিভিন্ন মহাসড়কে এসব পরিবহন আবারও ফিরে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে সরকার ৬০ ভাগ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পেরেছে। এ ব্যাপারে আরও কঠোর হলে হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে যাত্রী দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। অটোরিক্সা মালিক সমিতির সভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, মহাসড়কে এসব পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করায় সারাদেশে লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়েছে। অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পেটের তাগিদে হয়তো এখন কেউ কেউ রাস্তায় নামার চেষ্টা করছেন। আমরাও সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত। তবে বিকল্প বাস্তার ব্যবস্থা করে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে।
×