ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেড় মাস পর নিখোঁজ ছেলের মরদেহ খুঁজে পান পরিবার

প্রকাশিত: ১৯:০০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেড় মাস পর নিখোঁজ ছেলের মরদেহ খুঁজে পান পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব রাফি (২২) মরদেহের খোঁজ পেয়েছে তার পরিবার। এর মধ্যেই বেওয়ারিশ হিসেবে তার লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করেছে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম। দেড় মাস পর সোমবার রাতে হাতিরঝিল থানা গিয়ে রাফির মরদেহ ছবি দেখে সনাক্ত করেন তার মা মনোয়ার হোসেন। সাদমান মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির (এপিইউ) শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশ জানায়, পুলিশ জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে হাতিরঝিলের বেগুনবাড়ি ফ্লাইওভার পূর্ব দিকে উঠার মুখে পাশের পানিতে অপরিচিত (২২) বছরের এক মুসলিম যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়। তবে তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত পর তার লাশ ২৭দিন মর্গে হিমাগারে রাখা হয়। পরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে সাদমানের লাশ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সাদমানের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। পুলিশ জানায়, গত ১৩ জানুয়ারি সাদমান সাকিব ওরফে রাফি ভাটারা এলাকা থেকে নিখোঁজ হলে তার মা মনোয়ারা হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৩ জানুয়ারি সকালে সাদমান কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর বাসায় ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে থানায় জিডি করেছি। তার মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ। মনোয়ারা হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরে সাদমান। করোনার কারণে আর মালয়েশিয়ায় যাওয়া হয়নি তার। সাদমানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। তিন বছর আগে মালয়েশিয়ার এপিইউতে ভর্তি হন তিনি। ঢাকায় তার কোনো বন্ধুবান্ধব নেই। ঢাকার রাস্তাঘাটও ভালোভাবে চেনে না। তবে মাঝে মধ্যে সাদমান খুব বেশি চিন্তিত থাকত। ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান বলেন, সাদমান মালয়েশিয়ায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ জন্য তার বাবাকে টাকা জোগাড় করতে বলেন। এর আগের দিনই তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান। সিসিটিভির ফুটেজে ল্যাপটপ ব্যাগ নিয়ে সাদমানকে বের হতে দেখা যায়। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর ২১ জানুয়ারি সাদমানকে ফেনী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। হঠাৎ এমন কথা বলে কেউ যোগাযোগ করেন তার মায়ের সঙ্গে। কিছু সময় পর জানানো হয়, সাদমান হাসপাতালে, তার চিকিৎসার জন্য রক্ত লাগবে। রক্ত জোগারের জন্য টাকা চাওয়া হয় সাদমানের মায়ের কাছে। সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকা সন্তানের সন্ধান পাওয়ার কথা শুনে মা আর দেরি করেননি। আট হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন বিকাশে। কিন্তু এরপর থেকেই ওই মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছেন সাদমানের মা মনোয়ারা হোসেন। পুলিশের ধারণা, একটি প্রতারক চক্র ছেলের কথা বলে পরিবারটির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
×