ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের সামনে দূর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যক্তি ডিশ ব্যবসায়ী

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

হাইকোর্টের সামনে দূর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যক্তি ডিশ ব্যবসায়ী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর হাইকোর্ট কদম ফোয়ারার সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে। নিহতের নাম হামিদুল ইসলাম (৫৮)। তিনি একজন ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসায়ী। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার গোয়ালকান্দি কলেজ রোডের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে হামিদুল। রবিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহতের ছোট ভাই মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম তার পরিচয় শনাক্ত করেন। তিনি জানান, তিনি জাসদ করতেন। সেগুনবাগিচায় ডিশ ও নেটের ব্যবসা ছিল তার। তোপখানা রোডের বসতী ময়ূরী এ্যাপার্টমেন্টে স্ত্রী নার্গিস আক্তার, মেয়ে নায়না ইসলাম (২৪) ও ছেলে নাহিদুল ইসলামসহ (২১) নিয়ে থাকতেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল হামিদুল। নিহতের ছোট ওয়াহিদুল জানান, তার কোনো শত্রু ছিল কিনা আমাদের জানা নেই। কে বা কারা ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করছে। তা এখনও আমরা জানতে পারিনি। তবে পুলিশ বলেছেন, ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে হামিদুল খুন হতে পারে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হত্যাকারী সনাক্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম হোসেন খান জানান। তিনি জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। নিহতের ছোট ভাই ওয়াহিদুল জানান, ১৯৯০ সালের পর থেকে তিনি সেগুনবাগিচা ও এর আশপাশের এলাকাতে ডিস লাইনের ব্যবসা করেন। ভাইয়ের সঙ্গে কারও শত্রুতা আছে বলে আমরা শুনিনি। তার শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের মনে হচ্ছে এটি ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাত। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে তার বুকে বা পেটে আঘাত করতো। তার পায়ে আঘাত করতো না। মর্গে সাদেক মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে হামিদুলের। সাদেক সেখানে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে। তিনি জানান, শনিবার রাতে হামিদুল তাকে ফোন দিয়ে বলেন, বাসার ভাড়ার টাকাগুলো তাকে দিয়ে আসতে, তিনি হাইকোর্ট মাজারের সামনে আছেন। এরপর সাদেক ১২ হাজার টাকা নিয়ে রাত ৮টার দিকে হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে জামালের চায়ের দোকানে দুইজন বসে চা পান করে। টাকা দেয়ার পরে ম্যানেজার সাদেক সিদ্দিকবাজারের দিকে চলে যান। আর হামিদুল তার সেগুনবাগিচার তোপখানা রোডের বাসার দিকে চলে যান। তিনি জানান, রাত দেড়টার দিকে হামিদুলের ছেলে তাকে ফোন দিয়ে বলেন, তার বাবা বাসায় ফেরেনি এখনও। এরপর খোঁজ নিতে থাকেন তিনি। মধ্যরাতে তিনি ঢাকা মেডিক্যালে এসে তার লাশের খোঁজ পান। ছিনতাইকারী এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাদের ধারনা। চা পান করার সময় ছিনতাইকারীরা তাকে ফলো করতে পারে। ম্যানেজার সাদেক মিয়া জানান, বাংলাদেশ জাসদ এর শাহবাগ থানার সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন হামিদুল। এদিকে শাহবাগ থানার (ওসি) মোঃ মামুন অর রশিদ জানান, ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু তার মানিব্যাগ মোবাইলটি খোয়া গেছে। তবুও অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা। সব বিষয়ে মাথায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে হাইকোর্ট কদম ফোয়ারার সামনে সামনে ছুরির আঘাতে আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সে সময় নিহতের নাম ঠিকানা জানতে পারেনি পুলিশ। পরে রাতে সিআইডি ক্রাইম সিন নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহ করে।
×