ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মার্চে

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মার্চে

ফিরোজ মান্না ॥ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে মার্চে। বহুমুখী ব্যবহারের জন্য স্যাটেলাইটটি হবে ‘হাইব্রিড’ বা ‘মিক্সড’। এ বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পরামর্শকের পরামর্শ পেলেই মহাকাশে ‘স্লট’ কেনার জন্য আইটিইউর (ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ইউনিয়ন) কাছে আবেদন করবে বাংলাদেশ। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে ৬০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। তারা এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে মন্ত্রণালয়ে। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব স্যাটেলাইটটি কি কি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে আমরা প্রস্তুত। টাকার কোন সমস্যা নেই। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের পরপরই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্য একটি ‘ফান্ড’ করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জনকণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) সূত্র জানিয়েছে, দেশের দ্বিতীয় এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ফ্রান্সের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইস-ওয়াটার হাউস কুপারসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাদের জানুয়ারি থেকেই কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়। তারা কাজও শুরু করেছে। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আগামী মার্চের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে তাদের পরামর্শ উপস্থাপন করবে বিসিএসসিএল’র কাছে। যোগাযোগের পাশাপাশি আবহাওয়া, সামরিক বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহারের সুযোগ রেখে স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি পরামর্শ দেবে কি ধরনের স্যাটেলাইট এসব কাজের জন্য ব্যবহার হয়। সব কিছু ঠিক থাকলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ হবে ২০২৩ সালের মধ্যে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্প্রতি প্রায় দুই লাখ মার্কিন ডলার মূল্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির পরই তারা কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) জানিয়েছে, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটিও যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যবহার হতে পারে। তবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ সব ধরনের সুবিধাই থাকবে। চূড়ান্ত কোন কথাই এখনই বলা যাচ্ছে না। কি ধরনের কাজে স্যাটেলাইটটি ব্যবহার হবে তার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পরামর্শ দিলেই তখন চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে। তাদের কাজ শেষে জানা যাবে স্যাটেলাইটটি কি কি ক্ষেত্রে ব্যবহার হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জনকণ্ঠকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ করার বিষয়টি অনেক আগেই নেয়া হয়েছে। প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরই আইটিইউকে বিষয়টি জানানো হয়। তবে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়নি। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ পেলেই আইটিইউর কাছে লিখিত আবেদন করা হবে। আমরা আইটিইউর কাছে মিক্সড স্যাটেলাইট হিসেবে আবেদন করব। যাতে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। এর আগে আমরা টেলিযোগাযোগ ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনের জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। এখন আবহাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করব। সব ধরনের সেবা পাওয়ার জন্য যে টাকাই লাগুক আমরা প্রস্তুত। মহাকাশে স্লট পাওয়ার ক্ষেত্রেও কোন ধরনের সমস্যা হবে না বলেও আশা করছি। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে অর্থের কোন সমস্যা হবে না। কারণ সরকার এই প্রকল্পকে অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে রেখেছে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে আগেরটির চেয়ে তুলনামূলক খরচ কম হবে বলেও তিনি মনে করেন। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর এর গ্রাউন্ড স্টেশনসহ সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধা এখন রয়েছে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর সেসব খরচ হবে না। কারণ অবকাঠামো তৈরি করাই আছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের এ মেয়াদেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে। সরকারের নিজস্ব খরচে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিবেদন দেয়ার পরই দ্রুত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। কোন ধরনের স্যাটেলাইট কেনা হবে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। দরপত্রের পর বোঝা যাবে কোন দেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে আর কোন দেশ থেকে এ স্যাটেলাইট কেনা হবে।
×