ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা তিন দিন চাল আমদানি বন্ধ

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ১৭ জানুয়ারি ২০২১

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা তিন দিন চাল আমদানি বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা তিন দিন ধরে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এইচএসকোড নিয়ে জটিলতার কারণ দেখিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ভারত চাল রফতানি বন্ধ রেখেছে। দেশের বাজারে চালের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে পৌনে ৩ বছর পর ভারত থেকে চাল আমদানি শুরুর কয়েকদিনের মাথায় আবারও আমদানিকৃত চাল আসা বন্ধ করে দেয়া হলো। এদিকে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে কয়েক হাজার টন চাল সে দেশে আটকা পড়ে রয়েছে। হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতির পর গত ৯ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিন বন্দর দিয়ে ৩টি ট্রাকে ১১২ টন চাল আমদানি হয়। এর পরদিন ১০ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে ২০টি ট্রাকে ৮২৮ টন চাল আমদানি করা হয়। একইভাবে ১১ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে ৩২৯ টন এবং ১২ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে ২৩টি ট্রাকে ৮৮৪ টন চাল আমদানি হয়। কিন্তু এরপর এইচএসকোড নিয়ে জটিলতা দেখিয়ে গত বুধ, বৃহস্পতি ও রবিবার বন্দর দিয়ে কোনও প্রকার চাল আমদানি হয়নি। দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় চাল আমদানিতে পড়তা না থাকায় ২০১৯ সালের ৩০ মে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি চালের শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ থেকে দু’দফা কমিয়ে ১৫ ভাগ করে সরকার। এর পর বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। হিলি স্থলবন্দরের চালের কার্য সম্পাদনকারী আমদানিকারক মনোনীত সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘চাল আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর চার দিন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে। এর পর থেকে চালের এইসএসকোড নিয়ে জটিলতা দেখিয়ে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রেখেছে ভারত। ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, এইচএস কোড ও পণ্যের নাম ঠিক করতে হবে। বর্তমানে চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে চালের এইসএসকোড রয়েছে ননবাসমতি হাসকিং ব্রাউন রাইস, এটি তারা গ্রহণ করছে না। তারা চাইছে, শুধু ননবাসমতি রাইস। এখন মন্ত্রণালয় থেকে চাল আমদানির অনুমতিপত্রে চালের যে এইসএসকোড দেওয়া রয়েছে এর বাইরে তো আমাদের যাওয়ার ক্ষমতা নেই।’ হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ ও চাল আমদানিকারক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমনের ভরা মৌসুমে দেশের বাজারে ধানের দাম বেশি দেখিয়ে চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের বাজার পুরোপুরি অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। এমন অবস্থায় দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক বেসরকারি আমদানিকারককে বিভিন্ন শর্ত মেনে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারক প্রায় ৬০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পায়। সরকারি সেসব নির্দেশনা মেনে বন্দর দিয়ে দীর্ঘ ৩৫ মাস সময় পর গত ৯ জানুয়ারি থেকে চাল আমদানি শুরু করেন আমদানিকারকরা। এসব চাল দেশের বাজারে প্রবেশের পর চালের মূল্য কমতে শুরু করেছিল। এবার ভারত চাল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে এইচএসকোডের জটিলতা দেখিয়ে। এতে করে গত তিন দিন ধরে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে ভারতের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকজন আমদানিকারকের কয়েক হাজার টন চাল ট্রাক বোঝাই অবস্থায় রয়েছে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়।’ হিলি স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রিপন রায় বলেন, ‘আমরা যতটুকু শুনেছি ভারতে ওদের নাকি কী সমস্যা হয়েছে, যার কারণে তারাই চাল রফতানি করছেন না। আর যেহেতু বিষয়টি ভারতীয়, তাই আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু আমাদের তরফ থেকে কোনোপ্রকার সমস্যা নেই। আর যদি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনও এইচএসকোড পরিবর্তন করে, সে ক্ষেত্রে সেটি পেয়ে যাবো আমরা।’
×