ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শীঘ্রই পর্যটন ভিসা দেবে ভারত ॥ দোরাইস্বামীর আশ্বাস

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৯ অক্টোবর ২০২০

শীঘ্রই পর্যটন ভিসা দেবে ভারত ॥ দোরাইস্বামীর আশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশীদের জন্য শীঘ্রই পর্যটন ভিসা চালুর আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। বুধবার এয়ার বাবল চুক্তির আওতায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, টুরিস্ট ভিসা ছাড়াও শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য ভিসা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। যাদের জরুরী ভিত্তিতে যাওয়া প্রয়োজন, তারা যেতে পারছেন। টুরিস্ট ভিসা কবে চালু হবে, তার সুনির্দিষ্ট তারিখ এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে যত দ্রুত সম্ভব তা দিতে আমরা জোর চেষ্টা করছি। ইউএস বাংলার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, উদ্বোধনী দিনে ঢাকা থেকে কলকাতায় গেছেন ২৩ জন ফিরেছেন ৩৪ জন। আবার চেন্নাই গেছেন ৩২ জন ফিরেছেন ৩৪ জন। এদিন ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা, চট্টগ্রাম-চেন্নাই-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে এয়ার বাবল চুক্তির অধীনে সিডিউল ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে ইউএস-বাংলা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনে ফ্লাইট দুটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। দীর্ঘ আট মাস পর ভারতের দেয়া এয়ার বাবল প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় বুধবার থেকে ফ্লাইট চালু হলো। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। আরও ছিলেন-মেম্বার (অপস) এয়ার কমডোর মোঃ খালিদ হোসেন, গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী জিয়াউল কবির ও বিমানবন্দর পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এস তৌহিদ উল আহসান। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ক্যাপ্টেন শিকদার মেজবাহউদ্দিন আহমেদ। এয়ার বাবল চুক্তির অধীনে কোভিড-১৯ কালীন সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুদেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে চেন্নাই ও কলকাতা ও চট্টগ্রাম থেকে চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। সোমবার বাদে সপ্তাহের ৬ দিন ইউএস-বাংলা এযয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কলকাতায় অবতরণ করবে। কলকাতা থেকে স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় ছেড়ে আসবে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে অবতরণ করবে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতি সোম, বুধ, শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে চেন্নাইয়ে অবতরণ করবে। একই দিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে চেন্নাই থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে এবং বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে। প্রতি মঙ্গল, বৃহস্পতি ও রবিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে চেন্নাই ও চেন্নাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ১৬৪ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে চেন্নাই ও কলকাতা রুটের ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হবে। বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ছয়টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর৭২-৬০০সহ মোট ১৩টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। চেন্নাই ও কলকাতা ছাড়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বর্তমানে মাস্কাট, দোহা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, গুয়াাংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী, বরিশালে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। চেন্নাই ও কলকাতা রুটে রি-ওপেনিং ফ্লাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তা, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য বিমান সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১২ মার্চ থেকে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রোগী ও আটকেপড়া উভয় দেশের নাগরিক। সম্প্রতি দুই দেশের সমঝোতার ভিত্তিতে সপ্তাহে ৫৬টি ফ্লাইট চলবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটক ছাড়া ৯ ক্যাটাগরির যাত্রীরা ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এছাড়া চিকিৎসা ভিসায় একজন রোগীর সঙ্গে তিনজন সহযোগী যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। বাংলাদেশের তিনটি ও ভারতের ৫টি বিমান সংস্থা কলকাতা, দিল্লী, চেন্নাই ও মুম্বাইয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এছাড়া ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, ভিসতারা এবং গো এয়ার নামে ৫টি এয়ারলাইন্স কোম্পানি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে এবং অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক। এরপর গত ১৬ জুন থেকে প্রথমবারের মতো ঢাকা থেকে লন্ডন এবং কাতার রুটে ফ্লাইট চলাচল করার অনুমতি দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য দেশের ফ্লাইটগুলো চালু করা হচ্ছে।
×