ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন উদ্যোগ ব্যর্থ

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ২৫ অক্টোবর ২০২০

মার্কিন উদ্যোগ ব্যর্থ

বিতর্কিত নাগোর্নো কারাবাখ নিয়ে সংঘাতরত আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সমঝোতা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন উদ্যোগ। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন শুক্রবার বলেছেন, নাগর্নো কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে গত এক মাসের সংঘর্ষে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তিনি মস্কোয় এক বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন। এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে যেসব তথ্য জানানো হয়েছে তার চেয়ে পুতিনের ঘোষিত এ সংখ্যা অনেক বেশি। ইয়াহু নিউজ। সংঘাত নিরসনে প্রথম দফার অস্ত্রবিরতি ব্যর্থ হওয়ার পর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গত শনিবার মধ্যরাত থেকে নতুন অস্ত্রবিরতি কার্যকরের কথা ছিল। তবে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান একে অপরের বিরুদ্ধে সেই যুদ্ধবিরতিও লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব নাটসাকানিয়ান ও আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেইহুন বায়রামভের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনায় সহিংসতার অবসান ও বেসামরিকদের সুরক্ষার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে এই লক্ষ্যে কোন সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে পম্পেও বিস্তারিত কিছু না জানালেও দাবি করেছেন, সহিংসতা থামানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশকেই যুদ্ধবিরতি ও সংলাপে ফিরতে হবে। নাগোর্নো কারাবাখের স্বাধীন প্রশাসন যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসেব দিয়েছে। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আট শ’ ৭৪ সেনা এবং ৩৭ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধু নাগোর্নো কারাবাখে। আজারবাইজান জানিয়েছে, সেখানে ৬১ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাদের তরফ থেকে সেনা মৃত্যুর কোন সংখ্যা জানানো হয়নি। আর্মেনিয়া কিছুদিন আগে জানিয়েছিল, যুদ্ধে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, উভয় দেশের বহু মানুষ এ সংঘর্ষে নিহত হয়েছে, প্রত্যেক দেশ থেকে দুই হাজারের বেশি করে মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং এ সংখ্যা পাঁচ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। পুতিনের এ ঘোষণার আগে নিহতের সংখ্যা কখনও এক হাজার অতিক্রম করেনি। এর আগে নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংঘর্ষে তাদের ৮৭৪ সেনা ও ৩৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজান জানিয়েছে, তাদের পক্ষে ৬১ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাকু তাদের নিহত সেনা সংখ্যা ঘোষণা করেনি। পুতিন বলেন, তিনি প্রতিদিন কয়েকবার দু’দেশের সঙ্গে সংঘাত বন্ধের উপায় নিয়ে কথা বলছেন এবং এ সংঘর্ষে কোন একটি পক্ষকে তার দেশ সমর্থন দেবে না। আর্মেনিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক চুক্তি থাকার পাশাপাশি দেশটিতে রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজানের সঙ্গেও রাশিয়া ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নাগার্নো কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই দেশ এ পর্যন্ত দুবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তা ভেঙ্গে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে নাগার্নো কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু ১৯৯০’র দশকে সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আর্মেনিয়া। দখলিকৃত এলাকা থেকে বহু আজারি নাগরিককে বিতাড়িত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
×