ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এনার্জি সিকিউরিটি শীর্ষক সেমিনারে নসরুল হামিদ

গ্যাস ব্যবস্থাপনায় টোটাল অটোমেশন করার পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ১৭ অক্টোবর ২০২০

গ্যাস ব্যবস্থাপনায় টোটাল অটোমেশন করার পরিকল্পনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষ জনশক্তি এবং উন্নত প্রযুক্তি। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদে দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তিবান্ধব করে গড়ে তুলতে না পরলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আর এই জন্য প্রযুক্তি নির্ভর সেক্টরগুলোতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অবশ্যই প্রকৌশলী হওয়া জরুরী। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) যন্ত্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে আইইবির শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে ‘এনার্জি সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ : ইস্যুজ এ্যান্ড অপশনস্’ শীর্ষক সেমিনার বক্তরা এ মন্তব্য করেন। সেমিনারে আইইবির যন্ত্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী আবু সাঈদ হিরো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মোঃ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সবুর এবং আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) প্রকৌশলী মোঃ নুরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, আইইবির সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), পিইঞ্জ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম. তামিম। সেমিনারে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (একা.ও আন্ত) ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন এবং জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আতিকুজ্জামান। সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহাসন বিন বাশার (রিপন)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি বলেন, আমরা যদি প্রযুক্তিবান্ধব দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে না পারি তাহলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। বাংলাদেশ বর্তমানে জ্বালনি ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই স্বয়ংসম্পূর্ণতাকে স্থায়ীত্বতা বৃদ্ধি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে আমাদের আরও টেকনোলজি নির্ভর দক্ষ মানবসম্পদ দরকার। জ্বালানি ধীরে ধীরে আমদানি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে গ্যাস তা এক সময় শেষ হয়ে যাবে। আমাদের চাহিদা কিন্তু থাকবে বরং বড়বে। আমরা বিদ্যুত, জ্বালানি এবং গ্যাস ক্ষেত্রগুলো নিয়ে মাস্টারপ্লান করছি। ঢাকা শহরে গ্যাস ব্যবস্থাপনায় টোটাল অটোমেশন করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’কে বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক মাস্টারপ্লান তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবকাঠামোগত মাস্টারপ্লান বাংলাদেশে নেই, তবে সেটা খুব দরকার। যত অবকাঠামোগত নির্মাণ হচ্ছে যেমন, পদ্মা সেতু, বড় বড় রাস্তা তার সঙ্গে সঙ্গে এনার্জির চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে। কোন জায়গায় কোন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি হবে সে অনুযায়ী আমাদের গ্যাস, বিদ্যুত ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে পারব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সবুর বলেন, ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় স্বার্থে দেশের বৃহৎ পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র তিতাস, বাখরাবাদ, রশীদপুর, কৈলাশটিলা ও হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী বহুজাতিক তেল কোম্পানি শেল ওয়েল ইন্টারন্যাশনাল কাছ থেকে নামমাত্র মূল্য কিনে নিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, মানব সভ্যতার অস্তিত্ব নির্ভর করে জ্বালানি শক্তির উপর। দেশের জন্য বর্তমানে জ্বালানি একটি অপরিহার্য সম্পদ। শুধু আমাদের দেশে নয় জ্বালানি ব্যতীত পৃথিবীর গতিশীলতা স্তব্ধ হয়ে যাবে। সভ্যতার ক্রমবিকাশ মান ধারার প্রতিটি ক্ষেত্রে জ্বালানির প্রয়োজন অর্থনৈতিক সব কর্মকান্ড জ্বালানি নির্ভর। একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে জ্বালানি ও বিদ্যুত খাত অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। তাই আমাদের সকলকে পরিমিত জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অধিক সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, ভিশন, মিশন থাকবে কিন্তু প্লান করতে হবে স্বল্প সময়ের জন্য। শীতের সময় আমাদের দেশে বিদ্যুত কম লাগে, কিন্তু গরমের সময় বিদ্যুত বেশি লাগে। তাই গরমকালে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। তবে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে যদি মানবসম্পদ উন্নয়ন না করা যায়। আর মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় দরকার।
×