ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জন্মদিনের কোন আনুষ্ঠানিকতা চাননি। একটু আলোচনা সভা, সেটিও বন্ধ হয়েছে তার (শেখ হাসিনা) নির্দেশে। কিন্তু তিনি যে বাঙালীর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার একমাত্র বাতিঘর। এদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। সারাদেশে তার কোটি কোটি নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাক্সক্ষী, শুভানুধ্যায়ী। তাই আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও সোমবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনে কর্মসূচীর এতটুকুও কমতি ছিল না। সোমবার দিনভর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, কেক কেটে, মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনাসভা, দুস্থদের মধ্যে খাদ্য, ভ্যান-রিক্সা ও দুস্থ নারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ, ৭৪তম জন্মদিনে সারাদেশে ৭৪ হাজার বৃক্ষরোপণ এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে পালন করেছে সাহস সংগ্রাম নেতৃত্বে অবিচল, বাঙালীর উন্নয়ন-সমৃদ্ধির বাতিঘর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। প্রতিবছর জন্মদিনে রাষ্ট্রীয় কাজে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশ নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই থাকতে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। কিন্তু করোনার কারণে এবার যাওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন পর জন্মদিনে দেশের মাটিতেই ছিলেন। কিন্তু ঘটা করে জন্মদিন পালনে কখনই রাজি হননি। তাই দেশে থাকলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অংশ নেননি জন্মদিনের কোন অনুষ্ঠানে, আনুষ্ঠানিকতা করতেও বারণ করে দিয়েছেন সবাইকে। জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় স্রোত হওয়ার পরিবর্তে দেশের উন্নয়নে ব্রতী শেখ হাসিনা অংশ নিয়েছেন মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা করতে চাইলে সেখানেও সরাসরি নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু দেশবাসীর কাছে জন্মদিনে দোয়া চেয়ে বলেন-‘যতদিন বেঁচে আছি যেন সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারি। আর আমার কাছ থেকে যেন বাংলাদেশের মানুষের উপকারই হয়। মানুষ যেন ভাল থাকে, সেই কাজগুলো যেন করতে পারি। বাবা-মা সব হারিয়ে রিক্ত, নিঃস্ব হয়ে এই দেশে কাজ করা, এটা খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু তারপরেও শুধু একটা চিন্তা করেছি- যে দেশটাকে এবং দেশের মানুষকে আমার বাবা এত ভালবেসেছেন, তাদের জন্য আমাকে কিছু করে যেতে হবে। তার (বঙ্গবন্ধু) স্বপ্নটা যেন অপূর্ণ না থাকে, সেটা যেন পূর্ণ করতে পারি। সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।’ সরকারী বা দলীয়ভাবে বড় কোন আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও দিনভর নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ¯œাত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী পালন ছাড়াও সরকারী, বেসরকারী টেলিভিশন, সামাজিক গণমাধ্যমে দিনভর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা এবং তার বর্ণিল ও সমৃদ্ধ রাজনৈতিক জীবন নিয়ে প্রচার হয়েছে নানা অনুষ্ঠান, শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় সিক্ত করেছেন দেশের লাখ কোটি সর্বস্তরের মানুষ। দু’হাত তুলে মোনাজাত, প্রার্থনা করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যার দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বলেছেন, শত ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শুধু দেশেই নয়, সাহস সংগ্রাম নেতৃত্বে অবিচল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের দরবারেও এখন শান্তির দূত হিসেবে পরিচিত। দেশের জন্য শেখ হাসিনা যা হারিয়েছেন তা কেউ হারায়নি। আর যা দিয়েছেন তা কেউ দেয়নি। বিশ্বের সব থেকে বেশি সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা নারী রাজনীতিবিদের সম্মানটিও এখন তার দখলে। প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা আর সাহসী নেতৃত্ব গুণের কারণে দেশের গ-ি পেরিয়ে শেখ হাসিনা এখন নিজেকে আসীন করেছেন বিশ্ব নেতৃত্বের কাতারে। তারা সারাদেশে এখন একই আওয়াজ- ‘শেখ হাসিনার সরকার, বার বার দরকার’, ‘শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’ দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এদেশের কোটি মানুষের মমতার আধার তিনি। তিনি ভালবাসেন দেশের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ভালবাসার ঠিকানা। উদার আকাশের মতো বিস্তৃত যার হৃদয়। তার শক্তি হচ্ছে তার সততা-পরিশ্রম-মানবিকতা, আর পিতার মতো দেশের মানুষের প্রতি অপার ভালবাসা। তাইতো শেখ হাসিনা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বনেতাদের কাতারে, মর্যাদার আসনে। তার উদাহরণ তিনি নিজেই। এদেশে তার জনপ্রিয়তা এখন সবার শীর্ষে, তিনি দলের চেয়েও অধিক জনপ্রিয়। তিনি এদেশের গণমানুষের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানান এবং তার সাফল্য, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, আব্দুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হীরু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, সাহাবউদ্দিন ফরাজী প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে মিডিয়া ফর ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড পিস (এমডিপি) আয়োজিত ‘নারী ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা ঃ বিশ্ব নেতৃত্বে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব জুয়নো আজিজ, সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিক্যাবের সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি। এদিকে দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে যুবলীগ। এসময় দৃষ্টি ও বাক প্রতিবন্ধীদের খাবার ও বস্ত্র উপহার দিয়েছে সংগঠনটি। এতে প্রধান অতিথির হিসেবে ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে কৃষক লীগ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এদিকে সকালে কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু দুস্থ কল্যাণ সংস্থা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এদিকে রাজধানীর ধানম-ির প্রিয়াঙ্কা কমিউনিটি সেন্টারে মহিলা আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে দুস্থ মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বায়তুল মোকাররমসহ সারাদেশে মসজিদে দোয়া ॥ প্রধানমন্ত্রীর জš§দিন উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে দুপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কোরানখানি, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মন্দির-গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা ॥ প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দীর্ঘজীবন ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে দেশের মন্দির-গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার জন্মদিন পালন মুক্তিযোদ্ধাদের ॥ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি কোরানখানি, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা, উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে ডাক অধিদফতর স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করেছে। ঢাবি ও জাবি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ, খাবার বিতরণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সোমবার দিনভর নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন করে। এদিকে জাবিতেও নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৭৪টি বৃক্ষরোপণ করা হয়। জোহরের নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আজ বিকেল পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ তাৎপর্য অনুসন্ধান’ শীর্ষক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সম্পাদিত ‘আমাদের স্বাধীনতা শব্দটি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে। জাবি সংবাদদাতা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শেখ হাসিনা হল প্রশাসনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শেখ হাসিনা হল প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনাসভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খুব বিচক্ষণতার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর সময় তিনি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের জনমানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার ৭৪তম জন্মদিন একটি অনন্য মাইলফলক। তিনি বাংলাদেশকে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে উন্নীত করার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।’ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক বশির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ফরহাদ হোসেন, বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এ মামুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এদিকে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। বাংলা একাডেমিতে সেমিনার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষে সোমবার লেখক শেখ হাসিনা শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করা হয়। ‘লেখক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। শেখ হাসিনাকে নিবেদন করে লেখা নির্মলেন্দু গুণের ‘পথে পথে পাথর’ কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী আহ্কামউল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানের শুরুতে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রয়াণে নীরবতা পালন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, রাজীনিতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যতটা আলোচিত হয়েছেন লেখক শেখ হাসিনাও ঠিক ততটা আলোচনা পাওয়ার দাবিদার। আমরা মনে করি তাঁর সংগ্রামী জীবন ও রাজনীতি যেমন গবেষণার বিষয় তেমনই তাঁর লেখকসত্তাও গভীর গবেষণার দাবি রাখে। হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, শেখ হাসিনা রচিত গদ্যে স্মৃতির দখিন দুয়ার খোলা থাকে সতত; তিনি সে দুয়ার খুলে দেখেন ফেলে আসা সময়, জনমানুষ ও জীবন। অন্যদিকে স্বদেশ, সমাজ এবং বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে গভীর ভাবনার পাশাপাশি ভাগ্যবঞ্চিত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের রূপকল্পনায়ও উদ্ভাসিত তাঁর প্রবন্ধপট। ওরা টোকাই কেন থেকে শেখ মুজিব আমার পিতা- বইগুলোর নিবিড় পাঠে আমরা এ সত্যের সন্ধান পাই। শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থপাঠ কেন অপরিহার্য শীর্ষক বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, একদিকে স্বজন হারানো বুকে কষ্টের পাথর চেপে; পিতা মুজিবের মতোই অন্ধকার সময়ের সকল জটিলতা-কুটিল ষড়যন্ত্র, ভয়-ভীতি, প্রলোভন ও প্রতিনিয়ত মৃত্যুবাণ উপেক্ষা করে, দেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালবাসা অভিষিক্ত হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন; অন্যদিকে বেদনামথিত হৃদয়ে দেশে-বিদেশে, কারা অভ্যন্তরে এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনার সীমাহীন ব্যস্ততা উজিয়ে চলমান রেখেছেন তাঁর লেখনি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা রচিত গ্রন্থসমূহে সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণিত ঘটনাসমূহের তীব্র-তীক্ষè পর্যবেক্ষণ যেমন আমাদের নতুন পথের সন্ধান দেয়; তেমনই মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শতবর্ষ স্মারকগ্রন্থসহ তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ ও গোয়েন্দা দলিলপত্র উত্তর প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতার গতিপথ অনুধাবনে সচেতন ও সতর্ক হতে সহায়তা করে। তাই, শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থসমূহ পাঠ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য। শামসুজ্জামান খান বলেন, রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়ক ও বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা লেখক হিসেবেও বিশিষ্টতার দাবিদার।
×