ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বৈরুতে বিস্ফোরণ ॥ সহায়তার আশ্বাস দিলেন সমব্যথী বিশ্বনেতারা

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৫ আগস্ট ২০২০

বৈরুতে বিস্ফোরণ ॥ সহায়তার আশ্বাস দিলেন সমব্যথী বিশ্বনেতারা

অনলাইন ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাস মহামারির আতঙ্কের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে নেমে এলো বিষাদময় এক সন্ধ্যা। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) দেশটির রাজধানী বৈরুত কেঁপে উঠেছে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে, যা গোটা বিশ্বকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরান ও সৌদি আরবের মতো পরাশক্তি দেশের বিশ্বনেতারা তাতে ব্যথিত। লেবাননকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যানজেলা মেরকেলসহ শীর্ষ নেতারা। লেবাননের বন্দর নগরীর পোতাশ্রয়ের নিকটে এক বহুতল ভবনে মারাত্মক বিস্ফোরণ হয়, তাতে প্রাণ হারান অন্তত ৭৮ জন এবং আহত চার সহস্রাধিক। এই ঘটনাকে ‘ভয়ানক আক্রমণ’ দাবি করেছেন ট্রাম্প, যদিও লেবানিজ সরকার একে দুর্ঘটনা বলেছে। সমবেদনা প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘লেবাননের মানুষদের প্রতি আমেরিকার গভীর সমবেদনা জানিয়ে শুরু করছি, যেখানে বৈরুতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণে বহু মানুষ নিহত ও গুরুতর আহত হয়েছেন। হতাহতদের ও তাদের পরিবারের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি। লেবাননকে সহায়তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। তাদের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক আছে।’ যে কোনও প্রয়োজনে ইরানও লেবাননকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মেদ জাভেদ জারিফ টুইটারে লিখেছেন, ‘লেবাননের মানুষদের জন্য আমাদের প্রার্থনা ও সমবেদনা। সব সময়ের মতো যে কোনও প্রয়োজনে সহযোগিতা করতে ইরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত। শক্ত থাকুন আপনারা।’ বৈরুতকে সহায়তায় সব ধরনের সমর্থন দিতে প্রস্তুত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ‘আজ রাতে বৈরুতের ছবি ও ভিডিওগুলো ছিল বেদনাদায়ক। এই ভয়ানক ঘটনার শিকার যারা, তাদের প্রতি রইলো সমবেদনা। যুক্তরাজ্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনও সমর্থন দিতে তৈরি, এমনকি যেই ব্রিটিশ নাগরিকরা ভোগান্তির শিকার তাদেরও।’ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও বিদেশি মাধ্যমে লেবাননকে মানবিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্তজ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজির নির্দেশনায় আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক মাধ্যমে লেবাননের মানুষদের চিকিৎসায় মানবিক সহযোগিতা করতে চায় ইসরায়েল।‘ ,যৌথ এক বিবৃতিতে এ কথা জানান ইসরায়েলি সরকারের দুই গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ এক প্রতিবেদনে জানায়, বৈরুতের বন্দরে এই বিস্ফোরণের পর ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, লেবানিজদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছে সৌদি সরকার। এরই মধ্যে সহযোগিতা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বললেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘লেবাননের পাশে আছে ফ্রান্স, সবসময় থাকবে। ফরাসি সহায়তা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ লেবাননের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানাতে প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউনের কাছে ফোনও করেছিলেন ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধান। চিকিৎসা সহায়তা করতে ফিল্ড হাসপাতাল পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে কাতার। কাতারি শাসক আমির শেইখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ফোন করে লেবানিজ প্রেসিডেন্ট আউনের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই সমবেদনা প্রকাশ করে বিস্ফোরণে আহতদের ‘দ্রুত সুস্থতা’ কামনা করেছেন তিনি। বিস্ফোরণের ঘটনায় সমব্যথিত জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যানজেলা মেরকেল। তার মুখপাত্র আলরাইক ডেমার বলেছেন, ‘লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণের রিপোর্ট ও ছবি দেখে সরকার ভারাক্রান্ত। যারা তাদের ভালোবাসার মানুষ হারিয়েছে, তাদের জন্য রইলো সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সস্থতা কামনা করছি। লেবাননকে আমাদের সহযোগিতার প্রস্তাবও দিচ্ছি।’ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান কথা বলেছেন লেবানিজ রাষ্ট্রপ্রতি আউনের সঙ্গে। দরকার হলে মানবিক সহায়তা পাঠাতে তুরস্ক প্রস্তুত বলে জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
×