
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাটে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি সড়কের গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত শুক্র ও শনিবার দুইদিনে তিনি এসব গাছ কাটেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম মো. হারুন উর রশীদ। তিনি উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের পশ্চিম ইদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গাছ কাটার কথা স্বীকার করে ওই শিক্ষক ‘মৌখিক’ অনুমতি নেওয়ার কথা বললেও বন বিভাগ বলছেন তারা জানেন না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি-হেঁয়াকো প্রধান সড়ক হতে হালদা ভ্যালি চা-বাগান সংযোগ সড়কের পাশে রোপিত প্রায় ৪০টি ইউক্যালিপ্টাস ও আকাশমনি গাছ দুইদিন ধরে দিনে দুপুরে কেটে ফেলেন। এসব গাছ স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ‘পালসার নাছির’ নামে এক ব্যক্তির কাছে মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রি করেন। এবং পরবর্তীতে তারা ছয় ভাই-বোন মিলে ভাগ-বাটোয়ারা করেন।
এসব গাছ কাটায় বন বিভাগের ‘মৌখিক’ অনুমতি নিয়েছেন বললেও কাগজে-কলমে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি প্রধান শিক্ষক মো. হারুন উর রশীদ। তিনি জানান, ‘সড়কটির পাশে তার পৈতৃক জমি রয়েছে। দীর্ঘকাল পূর্বে গাছগুলো আমার পরিবার রোপন করেছেন। আশেপাশের অনেকেই এ ধরনের গাছ কেটেছেন। তারাও কোন অনুমতি নেয়নি। আমি ‘মৌখিক’ বন বিভাগের লোকজনকে অবহিত করলেও কাগজে-কলমে অনুমতি লাগবে সেটি বুঝিনি। সেটা আমার অপরাধ হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সরকারি সড়কের গাছ শিক্ষকের ব্যক্তিগত মালিকানায় পড়ার প্রশ্নই ওঠে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও লোভপ্রসূত কাজ। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলার নারায়নহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মো. সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বন বিভাগ থেকে এসব গাছ কাটার অনুমতি প্রয়োজন। অথচ তিনি কাউকে না জানিয়ে সড়কের গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি একজন শিক্ষক হিসেবে এভাবে সরকারি গাছ কাটার অধিকার তার আছে বলে জানা নেই।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, ‘একজন শিক্ষক হয়ে এমন গর্হিত কাজ করতে পারেন না তিনি। এটি মোটেও ঠিক হয়নি।’
উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী ব্যক্তি পর্যায়ে সরকারি সড়কের গাছ কাটার কোনো নিয়ম নেই। গাছ কাটতে হলে বিধিবিধান অনুসরণ করতে হয়। বন বিভাগের ছাড়পত্র নিতে হয়। নারায়ণহাটের শৈলকূপা এলাকায় সড়কের অনেক গাছ এভাবে কাটা হয়েছে। সবার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
রাকিব