ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কোরবানির ঈদের পর প্রথম চামড়ার হাট জমলোনা রাজারহাটে

প্রকাশিত: ১৫:০২, ৪ আগস্ট ২০২০

কোরবানির ঈদের পর প্রথম চামড়ার হাট জমলোনা রাজারহাটে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ কোরবানির ঈদের পর প্রথম চামড়ার হাট আজ মঙ্গলবার জমলো না যশোরের রাজারহাটে। সকাল থেকে ভারি বৃষ্টিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ এ মোকামে যেমন ছিল চামড়ার যোগান কম, তেমনি দামে হতাশ হয়েছেন বিক্রেতারা। হতাশাজনক দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে ঈদের পরের প্রথম হাটে যশোরে। বিক্রেতারা বলছেন, ব্যাপারিরা যে দাম নির্ধারণ করছে তাতে খরচই উঠছে না। তবে ব্যবসায়ীরা বলছে, আগামী শনিবার জমে উঠবে রাজারহাট। যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া গ্রামের রুপচাঁন আলী জানান, তিনি মঙ্গলবার হাটে ৩০ পিস ছাগলের চামড়া নিয়ে আসেন। দাম না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বিক্রি করেছেন সব চামড়া মাত্র ১৭০ টাকায়। অথ্যাৎ প্রতিপিস চামড়ার দাম তিনি পেয়েছেন ৬টাকা করে। অথচ প্রতিপিস চামড়ায় তার লবণ লেগেছে ১০ টাকা করে। সদও উপজেলার সুজলপুর গ্রামের গোপাল দাস জানান, তার আনা ছাগলের ১০পিস চামড়া বিক্রি হয়েছে একশ টাকায়। এতে তার আর্থিক লোকসানের সাথে নিজের শারীরিক কষ্ট লাঘব হয়নি। খুলনার ব্যবসায়ী গতকাল রাজারহাটে ৩৭ পিস গরুর চামড়া নিয়ে আসেন। প্রতিপিস চামড়ার দাম পেয়েছেন ৪শ টাকা হারে। তিনি বলেন, চামড়ার এরকম দরপতন আগে তখনও দেখেননি। শুধু নিতাই, গোপাল ও রাপচাঁন নয়, হাটে যে গুটি কয়েক ব্যবসায়ী চামড়া নিয়ে আসেন তারা সবাই লোকসান দিয়ে চামড়া বিক্রি করে গেছেন। খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাট। ঈদ পরবর্তী হাটগুলোতে দেশের ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের নজর থাকে এই হাটের দিকে। ৩-৪ বছর আগেও ঈদের সময় প্রায় ২০ কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হতো। কিন্তু সেই অবস্থা এখন আর নেই। এজন্য চামড়ার দরপতনকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে হতাশ নন চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা। তাদের আশা পরবর্তী হাটের দিন আগামী শনিবার বাইরের জেলা থেকে ব্যাপারি এলে দাম বাড়বে চামড়ার। বৃহত্তর যশোর চামড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, ঈদ পরবর্তী রাজারহাটে প্রচুর চামড়ার সমাগম ঘটে। কিন্তু গতকাল অতিবৃষ্টির কারণে বাইরে থেকে পাইকাররা আসেনি। আবার মাত্র ১০ হাজার পিস চামড়া উঠেছে। আশা করছি শনিবার জমজমাট হয়ে উঠবে রাজারহাট। তিনি বলেন, সরকার কাঁচা চামড়া রফতানির উদ্যোগ নিলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। রাজারহাটের ইজারাদার হাসানুজ্জামান হাসু বলেন, ঈদের পরে গতকাল মঙ্গলবার ছিল প্রথম হাট। কিন্তু এদিন ভোরবেলা থেকে বৃষ্টির কারণে হাটে চামড়া উঠেনি। তবে শনিবার জমে উঠবে এই হাট। এদিকে হাটের এ অবস্থাকে বিপর্যয় বলে আখ্যায়িত করলেন জেলা বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান। তিনি বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে সামনে খুচরা ব্যবসায়ীরা আর চামড়া কিনবেনা।
×