ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার্তদের জন্য জরুরী সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২৫ জুলাই ২০২০

বন্যার্তদের জন্য জরুরী সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের চলমান সহযোগিতার অংশ হিসেবে রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার উত্তরবঙ্গের বন্যা কবলিত অঞ্চলে ঘর-বাড়ি বা জীবিকা হারানো নাজুক পরিবারগুলোর জন্য দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)’র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা ঘোষণা করেছেন। রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার দুটি ইউনিয়নের সবচেয়ে বিপন্ন মানুষ যারা ঘর-বাড়ি হারা, ক্ষুধার্ত, আশ্রয়হীন ও অন্য কোন সহায়তা পাচ্ছে না তাদের এ সহায়তা দেয়া হবে। শুক্রবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাংলানিউজের। বন্যা কবলিত সহায়তার মধ্যে রয়েছে উপযুক্ত মানুষদের জন্য বহুমুখী নগদ অর্থ সহায়তা। তাছাড়া এ পরিবারগুলোকে জরুরী পানি, পয়োনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে সহায়তা দেয়া হবে, যা রোগ-জীবাণু প্রতিরোধ বিশেষত কোভিড-১৯’র বিস্তার প্রতিরোধে অত্যাবশ্যক। নগদ অনুদান গ্রহীতারা এ অর্থ দিয়ে তাদের তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণে জরুরী উপকরণ কিনতে পারবে। এর ফলে দুর্যোগের মধ্যেও স্থানীয় অর্থনীতি সবল থাকবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, প্রবল বন্যায় তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়া জরুরী। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষকে সহায়তা দিতে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিগত বহু দশকের মতো অঙ্গীকারবদ্ধ। যেসব এলাকায় এ সহায়তা দেয়া হবে সেগুলো হলো- কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন ও গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়ন। ইউনিয়নগুলোর মধ্যে বন্যায় এ দুটি এলাকার মানুষই সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে গৃহস্থালি ও সামাজিক পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষকে আরও সক্ষম করে তুলতে এবং দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি জোরদার করতে ইউএসএআইডি কয়েকটি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। কেয়ার বাংলাদেশের সঙ্গে ইউএসএআইডি’র সৌহার্দ্য ৩ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত নাজুক পরিবারকে তাদের এক হাজার ৭৪৪ বসতভিটাকে বন্যা সমতল থেকে উঁচু করে তৈরি করতে সহায়তা দেয়া হয়েছে। উঁচু করা এ বাড়ি-ঘরের কারণে পরিবারগুলো এবং তাদের গবাদিপশু ও বাগানগুলো নিরাপদ থাকে। এখন এসব উঁচু ভিটায় বসবাসকারী অনেক মালিক তাদের বন্যা কবলিত প্রতিবেশীদের আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক এ্যান্ড এ্যাটমোস্ফেয়ারিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পেশাজীবীদের দক্ষিণ এশিয়ার আকস্মিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এ দক্ষতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে আকস্মিক বন্যা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন নির্দেশনাকে প্রায়োগিক পূর্বাভাসে রূপ দেয়া হয়। এগুলো ব্যবহার করে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বন্যাপ্রবণ এলাকার অধিবাসীদের পূর্ব সতর্কতা দিতে পারেন। বন্যার পূর্ব সতর্কতা জানিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে পরিবারগুলোর জন্য মানুষজন, গবাদিপশু, দ্রব্যসামগ্রী ও জীবিকা সরঞ্জামগুলো উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নেয়া সহজ হয়। ইউএসএআইডি’র সৌহার্দ্য ৩ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যাতে তারা পূর্ব সতর্কতা প্রদান ব্যবস্থার ব্যবহারপূর্বক জনসমাজকে বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়তা করতে পারেন।
×