ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাবরিনা-আরিফ দম্পতিকে মুখোমুখি করা হবে

প্রকাশিত: ২৩:১২, ১৬ জুলাই ২০২০

সাবরিনা-আরিফ দম্পতিকে মুখোমুখি করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডাঃ সাবরিনার স্বামী আরিফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডাঃ সাবরিনা আরিফ তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছে ডিবিতে। বুধবার কারাগার থেকে ভার্চুয়াল আদালতে তাদের উপস্থিত দেখানো হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৪ জুন আরিফ চৌধুরী ও সাঈদ চৌধুরীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। জানা গেছে, এই দম্পতিকে ডিবিতে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জেকেজি গ্রুপের করোনা প্রতারণা সম্পর্কে সাবরিনা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ায় তাদেরকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আজ (বৃহস্পতিবার) সাবরিনার তিন দিনের রিমান্ড শেষ হলে তাকে আবারও রিমান্ডের আবেদন জানাবে ডিবি। এই দম্পতির বিরুদ্ধে করোনা প্রতারণা ছাড়াও স্বাস্থ্য খাতের অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ আসছে। প্রতারিত করোনা রোগীরাও পৃথক পৃথক মামলা দায়েরের উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে রিমান্ডে থাকাবস্থায় করোনা দুর্নীতি ছাড়াও সাবরিনা ব্যক্তিগত জীবনের নানা কেলেঙ্কারি তথ্য পেয়েছে ডিবি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সাবরিনা স্ত্রী হলেও তাকে বরাবরই সন্দেহের চোখে রাখত স্বামী আরিফ। বিশেষ জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে এক সহকর্মীর সঙ্গে সাবরিনার অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে প্রায়ই সরব ছিলেন আরিফ। একবার তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলায় সব ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদাবর থানায় জিডি করতে হয়েছিল স্বামীকে। ওই ঘটনার সূত্র ধরে সাবরিনাকে প্রশ্ন করা হলে নিশ্চুপ থাকেন। ডিবি সূত্রের মতে, কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের ইউনিট প্রধান প্রফেসর ডাঃ কামরুল হাসান মিলনের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি অনুষ্ঠানে তাদের দুজনের নাচের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি হিন্দি গানের সঙ্গে কামরুল ও সাবরিনাকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে নাচতে দেখা গেছে। ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পরে বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এছাড়া কামরুল-সাবরিনার বেপরোয়া চলাফেরা, বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো, জেকেজির মতো ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে প্রভাব খাটিয়ে কাজ পাইয়ে দেয়ার ঘটনা জানাজানির পর খোদ কামরুলের সহকর্মী ও চিকিৎসক সমাজ ধিক্কার দিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ইতোমধ্যে জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনাকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পাইয়ে দেয়ার পেছনে কামরুলের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। এসব বিষয় পরিষ্কার করার জন্য ডাঃ কামরুলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। গত রবিবার দুপুরে আলোচিত চিকিৎসক সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৩ জুন রাজধানীর বিমানবন্দর, আশকোনা ও গুলশান-২ এর কনফিডেন্স টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
×