ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কানাডার ঐতিহাসিক স্ট্যাম্পেড ব্রেকফাস্ট

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৩ জুলাই ২০২০

কানাডার ঐতিহাসিক স্ট্যাম্পেড ব্রেকফাস্ট

অনলাইন ডেস্ক ॥ কানাডার ক্যালগ্যারির বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগ্যারির ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো স্ট্যাম্পেড ব্রেকফাস্টের আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ সেন্টারে। এবার প্রথমবারের মতো স্ট্যাম্পেড ব্রেকফাস্টের আয়োজনের সার্বিক দায়িত্বে ছিল ইয়ুথ ফোরাম। এটি ছিল ১০৮তম স্টাম্পপিড ব্রেকফাস্ট। নতুন প্রজন্মের মাঝে ক্যালগ্যারির ঐতিহ্যবাহী এই স্ট্যাম্পেড ব্রেকফাস্টের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। ইয়ুথ ফোরামের স্নিগ্ধা রায় ও নাদিয়া হাসান বলেন, বাঙালির সন্তান হয়েও কানাডিয়ান কালচারে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি কানাডার কালচার ধরে রাখার লক্ষ্যেই আমাদের আজকের এই আয়োজন। উল্লেখ্য, কানাডার ক্যালগ্যারির ঐতিহাসিক স্ট্যাম্পেড উৎসবের রয়েছে কালজয়ী ইতিহাস। এ উৎসবে সাধারণত মিডওয়ে গেমস, ঘোড়াদৌড়, সুস্বাদু খাবার, লাইভ মিউজিক এবং শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন রাইড ও বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের পদভারে মুখোরিত থাকে ক্যালগ্যারি শহর। ক্যালগ্যারি স্ট্যাম্পেডের অন্যতম আকর্ষণ আতশবাজি, কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়িতে বসেই উপভোগ করতে হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেডিও শো ক্যালগ্যারি স্টাম্পপিড ১৯১২ সাল থেকে শুরু হয়ে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। প্রতি বছরের জুলাই মাসে ক্যালগ্যারির স্টাম্পপিড উৎসবে আলোকসজ্জা আর লোকে-লোকারণ্য হয়ে থাকে। কাউবয়খ্যাত এই শহরটি মেতে ওঠে তার নিজস্ব অবয়বে। এ বছর ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। করোনাভাইরাস স্তব্ধ করে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে, সেই সঙ্গে ক্যালগ্যারির স্টাম্পেডকে করেছে জনশূন্য। এপ্রিলেই করোনার কারণে ক্যালগ্যারি স্ট্যাম্পেড বাতিল করা হয়। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন সংগঠন পালন করছে এই ব্রেকফাস্ট উৎসব। বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগ্যারির ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে স্থানীয় সময় রোববার সকাল ১০টা থেকে ব্রেকফাস্ট শুরু হয়, চলে ১২টা পর্যন্ত। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রায় ২০০ জনকে ব্রেকফাস্ট দেয়া হয়। ইয়ুথ ফোরামের পক্ষ থেকে এই আয়োজনের দায়িত্বে ছিল নাদিয়া হাসান আর স্নিগ্ধা রায়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ ফোরামের স্নিগ্ধা রায়, নাদিয়া হাসান, আশিক ইসলাম, রিমিসা রসিদ, তাহিম রসিদ, রিনা তাজরিন, শারলিন রফিক, জয়িতা কাজী, রায়া সুবা, অধরা রাইমা মজুমদার, ফাইজা আফসারা, কাজী মাহির, মারভিত হোসেন সুহা, আদিবা হোসেন, মো. ফারদিন রহমান, নওশিন নোয়াল, ভিয়েনা হোক ও রিনাত হক। এ ছাড়া বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগ্যারির সভাপতি মো. রশিদ রিপন, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত বসু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভ মজুমদার, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসলাম মাজহার, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তাসফিন হুসাইন তপু, ট্রেজারার সানিলা মাহমুদসহ অ্যাসোসিয়েশনের অন্য কর্মকর্তারা। ক্যালগ্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহযোগী ডিন, ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আনিস হক বললেন- স্ট্যাম্পিড ব্রেকফাস্ট ক্যালগ্যারিবাসীর এক বিশেষ আকর্ষণ। শহরের ছোট-বড় বিভিন্ন জায়গায় ভোরবেলা থেকে দীর্ঘলাইন শুরু হয়। প্রাদেশিক সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সিটি মেয়র এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শহরের বিভিন্ন স্থানে নিজ হাতে এই ব্রেকফাস্ট জনগণকে পরিবেশন করেন। কোনো কোনো স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। ক্যালগ্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান স্ট্যাম্পিড ব্রেকফাস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নিজে পরিবেশন করেন। এবারে ভীষণভাবে মিস করছি জমজমাট কাউবয় পরিবেশে আধা কিলোমিটার লাইনে দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ব্রেকফাস্ট। বিশিষ্ট কলামিস্ট আব্দুল্লাহ রফিক বলেন, এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রোডিও শো ক্যালগ্যারি স্টাম্পিড হচ্ছে না, এটি ক্যালগ্যারিবাসীর জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা। আশা করি আগামী বছর পূর্ণ উদ্যোমে আমরা আবারও রোডিও শো'তে ফিরবো। ক্যালগ্যারির স্থানীয় নীতিনির্ধারক এবং বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই এ মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
×