ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ইয়ুথ ফর গ্লোবাল বাংলাদেশ নামে নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম

প্রকাশিত: ২১:৩০, ১২ জুলাই ২০২০

ইয়ুথ ফর গ্লোবাল বাংলাদেশ নামে নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ “ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০” এর অনুষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার এ ব্যাপকভাবে প্রচারকে কেন্দ্র করে 'ইয়ুথ ফর গ্লোবাল বাংলাদেশ' নামে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম খোলা হয়েছে। এই প্লাটফর্মের উদ্দেশ্য শুধু “ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০”-এর আয়োজন এর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা বরং এই প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সরকার বিশ্বের যুবক সম্প্রদায়ের সাথে স্থায়ীভাবে যোগাযোগের একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবে। এই ডিজিটাল প্লাটফর্মসমূহ বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এর একটি উদ্যোগ যা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাথে অত্যন্ত নিবিড় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। রবিবার একটি ভার্চুয়াল সংবাদসম্মেলনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল যৌথভাবে 'ইয়ুথ ফর গ্লোবাল বাংলাদেশ' এর লোগো ও ফেসবুকপেজ উন্মুক্ত করেন। উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি, বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এটুআই, জাতিসংঘ যুব প্রোগ্রাম, রিজিওনাল যুবপ্রোগ্রামসমূহ (সার্ক ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রোগ্রাম), বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যুবসংস্থাসমূহ, জুনিয়র চেম্বারসমূহ এবং যুব ও তরুণ পেশাজীবি, উদ্যোক্তা ও গবেষকগণ এই ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও উদ্যোগ এর সাথে জড়িত থাকবেন। গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এক জাকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে বছরব্যাপী উদযাপন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ডিজিটাল প্রযুক্তি ও তরুণদের অদম্য ইচ্ছাশক্তির ওপর ভিত্তি করে পূর্বে পরিকল্পনাকৃত সকল অনুষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৭ জুলাই ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে “ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০” এর শুভ উদ্ভোধন করবেন বলে সদয় সম্মতি প্রদান করেছেন। ভিন্ন আঙ্গিকে আয়োজিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওআইসিসদস্যভুক্ত এবং অন্যান্যদেশসমূহের গণ্যমান্য নেতৃবৃন্দ ভার্চুয়ালভাবে অংশগ্রহণ করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি দেশি ও আন্তর্জাতিক টিভি মিডিয়া এবং সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে যার ফলে সারাবিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করা যাবে। মুসলিম বিশ্বের তরুণদের দৃঢ় ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করার প্রয়াসে তরুণদের নানামুখী কৃতিত্বে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ইসলামিক কো-অপারেশন ইয়ুথ ফোরাম ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ওআইসি সদস্যভুক্ত দেশসমূহকে “ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল” এর স্বীকৃতি প্রদান করে আসছে । বিগত ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া তীব্র প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্নধাপ সফলতার সাথে সম্পন্ন করে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গৌরবজনক এই স্বীকৃতি অর্জন করে। “ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০” হিসেবে বাংলাদেশের এই অর্জন বাংলাদেশের তরুণ সমাজের জন্য অপরিসীম অনুপ্রেরণার সঞ্চার করেছে। বাংলদেশের এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের একটি উজ্জ্বল ও শক্তিশালী ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। “ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০”-এর প্রতিপাদ্য রেজিলিয়েন্স ফর প্যারিটি এন্ড প্রসপারিটি', যা এই সংকটকালীন সময়ের কথা বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের অব্যবহিত পর ২৭ ও ২৮ জুলাই দুইদিনব্যাপী রেজিলিয়েন্ট ইয়ুথ লিডারশিপ সামিট' নামে একটি যুবসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের অন্যতম অংশ হিসেবে থাকবে কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে যুবসমাজ এবং প্রযুক্তি-এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়ে দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ এর সমন্বয়ে সেশন। অধিকন্তু, এই যুবসম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য হবে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ও অত্যাচারিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির বিষয়ে বিশ্বব্যাপি যুবসম্প্রদায়কে সচেতন করা এবং মিয়ানমারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মিয়ানমারে সম্মানজনক ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতকরণে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এর ভার্চুয়াল পরিদর্শন এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে প্যনেল আলোচনার মাধ্যমে যুবসম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আপোষহীন সংগ্রাম এর গৌরবময় ইতিহাস বিশ্বের যুবসম্প্রদায়কে জানানোর তাগিদে “বঙ্গবন্ধু গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করা হবে। বছরব্যাপী পরিকল্পনাকৃত অন্যান্য অনুষ্ঠানসমূহ হলঃকুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা; ফিল্ম ফেস্টিভাল; চিত্রকলা প্রদর্শনী; বিতর্ক প্রতিযোগিতা; স্কাউটক্যাম্প; এন্টারপ্রেনারশিপ, স্কিল ও এমপ্লয়মেন্ট ক্যাম্প এবং কুইজ প্রতিযোগিতা। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে ১৮-৩৫ বছরের যেকোন যুবক এই সকল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে । উক্ত অনলাইন প্লাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বের যুব সম্প্রদায়ের কাছে খুব সহজেই তার অর্জন ও লক্ষ্যের কথা জানাতে পারবে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিশাল যুবক সম্প্রদায়ের সাথে বিশ্বের যুবসম্প্রদায়ের একটি মেলমন্ধন স্থাপিত হবে। এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে ভবিষ্যতে খুব সহজেই যুবকদের অন্তর্ভুক্ত করে যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজনে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে। বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় তরুণ যুবসম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে বৈশ্বিকমঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে এই ডিজিটাল প্লাটফর্মসমূহ বাংলাদেশের নানাবিধ কূটনৈতিক কৌশল বাস্তবায়নে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে।
×