ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত : ফখরুল

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ১২ জুলাই ২০২০

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত : ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মর্জিা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার উত্তরার নিজ বাসা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে করোনা চিকিৎসার জন্য জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের হটলাইন কল সেন্টার উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে বাচতে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ অথবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। সারাবিশ্বের চিকিৎসকরা চেষ্টা চালাচ্ছে। সারাবিশ্ব বিপদের সম্মুখীন। ৬ মাসে গোটা পৃথিবী থমকে গেছে। উৎপাদন কমে গেছে। সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। বিশ্ব নেতারা একটা প্রতিষেধক বের করার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে তারা তাদের রাষ্ট্র, জনগণ ও অর্থনীতি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর সভ্যতা আগের অবস্থায় আর থাকবে না। এটা পরিবর্তন হবে, হচ্ছে। কি বদলাবে কিভাবে বদলাবে সেটা আমরা জানি না। এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতেও সরকার আমাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। ফখরুল বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালকে করোনা টেস্টের অনুমতি দেয়া নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মধ্যে এখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে আমরা রিজেন্ট হাসপাতালকে টেস্টের অনুমতি দিতাম না যদি মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের বলা না হতো। অর্থাৎ স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় থেকে রিজেন্ট হাসপাতালকে পরীক্ষার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। তাহলে নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যমন্ত্রীই এর জন্য দায়ি। তাই পদত্যাগ করা উচিত স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সর্বত্র লকডাউন না করে সবকিছু খুলে দেয়ার পর একদিকে বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুচিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে যে আশা করে সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে সেখানেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। করোনা সংক্রমনের এই চরম দুঃসময়ের মধ্যে টেস্ট করতে গিয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ফখরুল বলেন, আজকে দেশের গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে রাস্তায় মানুষ মারা যাচ্ছে। যে হারে চিকিৎসার নামে লুটপাট চলছে তা সবাই দেখেছে। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমে যারা কর্মী যারা আছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, এই চরম বৈরী পরিস্থিতির মধ্যেও যখন কোন সংবাদ প্রকাশ করা বিপদজনক তখন তারা অনেক সংবাদ প্রকাশ করছেন যা মানুষ জানতে পারছে। সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমেই জানা যাচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলে কিভাবে দুর্নীতি হচ্ছে, ব্যাপক থেকে ব্যাপকতরভাবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে করোনা সংক্রমনের পর দেশে যে ক্রাইসিস গুলো আসবে তা জেনেই আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছিলাম। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদদী এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কিভাবে এই সঙ্কট থেকে উত্তরণ করা যায়। কিন্তু সরকার আমাদের প্রস্তাবকে গ্রহণ করেনি। ফখরুল বলেন, দেশের সঙ্কট মোকাবেলায় আমরা জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলাম। সরকার আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এ সরকার জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত নায়, তাই দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি লোকদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে কিভাবে চুরি করা যায়। তাই তারা রাস্তা খুজে কিভাবে চুরি করে আর্থিক সুবিধা আদায় করা যায়। আর তা করতে গিয়ে মানুষের সেবা জীবন বাঁচানোর যে কাজ তা বাদ দিয়ে আর্থিক সুবিধা আদায়ের পথ খুজে নেয় তারা। এ কারণেই রিজেন্ট হাসপাতালকে করোনা টেস্টের দায়িত্ব দেয়া হয়। হটলাইন কল সেন্টার উদ্বোধনকালে ভার্চুয়াল বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ অনুষ্ঠানে যোগ না দিলে আমি নিজেও অনেক কিছু জানতাম না। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ এই মানবিক সেবায় এগিয়ে আসার জন্য। ভার্চুয়াল বক্তব্যে আরও অংশ নেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সভাপতি প্রফেসর ডা. হারুন অর রশীদ, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।
×