ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লবণের সিমেন্ট

প্রকাশিত: ২১:৫২, ২৯ জুন ২০২০

লবণের সিমেন্ট

আধুনিক স্থাপত্য শিল্পে সিমেন্ট এক অনন্য উপাদান। সুউচ্চ ইমারত থেকে শুরু করে দীর্ঘ সেতু নির্মাণে সিমেন্টের ব্যবহার হয়। প্রচলিত সিমেন্ট ব্যবহারের ধারণা পাল্টে দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুই প্রকৌশলী। তারা আবিষ্কার করেছেন লবণের সিমেন্ট। ওয়াইওয়াই নামে ওই সংস্থার অন্যতম দুই প্রকৌশলী ওয়ায়েল আল আওয়ার ও কেনিচি তেরামোতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের নির্লবণীকরণ প্লান্টে এক ধরনের সিমেন্ট আবিষ্কার করেন। প্লান্টগুলোতে সমুদ্রের পানি থেকে লবণ আলাদা করা হয়। আরব আমিরাতের খনিজ সম্পদে ভরপুর সাবখাকে (সল্ট প্লান্ট) তারা নতুন সিমেন্ট তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন। কয়েক শ’ বছর ধরেই স্থাপত্য শিল্পে লবণের চাঁই (সাবখা) ব্যবহার হয়ে আসছে। লিবিয়া সীমান্ত ঘেঁষা মিসরের মধ্যযুগীয় শহর সিউয়া তৈরিতে সাবখা ব্যবহার করা হয়েছিল। নির্লবণীকরণ প্লান্টের বর্জ্য পানি থেকে ওই দুই প্রকৌশলী নতুন ধরনের সাবখা তৈরি করেন। ওই বর্জ্য পানিতে লবণের উপস্থিতি না থাকলেও অন্য খনিজ উপাদান রয়েছে, সেটাই কাজে লাগান দুই প্রকৌশলী। মিঠা পানির দুষ্প্রাপ্যতার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম নির্লবণীকরণ প্লান্ট। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নির্লবণীকরণ প্লান্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৮ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য পানি ফেলা হয়। সেই পানি ফের সাগরে ফেলা হলে সামুদ্রিক প্রাণীদের ক্ষতি হতে পারে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে ‘রিথিংক ব্রাইন চ্যালেঞ্জ’ প্রকল্পের সূচনা করা হয়। বর্জ্য পানির মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। বিজ্ঞানীরা ওই পানি থেকে ম্যাঙ্গানিজকে পৃথক করেন, যা দিয়েই মূলত সিমেন্ট তৈরি করা হয়। আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সিভিল এ্যান্ড আরবান ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামাল সেলিকের মতে, নতুন আবিষ্কৃত সিমেন্ট উৎপাদন খুব কঠিন নয়। এ সিমেন্ট পরীক্ষার জন্য জাপানে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে শক্তি ও অনমনীয়তা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। প্রকৌশলী আল আওয়ারের মতে, প্রচলিত পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের মতোই শক্তিশালী নতুন সিমেন্ট। -গাল্ফ নিউজ
×